জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আগেরদিন-ই নেপালে ভূমিকম্প হয়েছে। কেঁপে উঠেছে ভূমিকম্পপ্রবণ নেপালের মাটি। আর তারপর দিনই সিকিমে বিপর্যয়। যে বিপর্যয়ের পিছনে একমাত্র কারণ হচ্ছে GLOF। যা কিনা সাড়া ফেলে দেওয়া সাংঘাতিক একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কী এই GLOF?


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

GLOF কী?
GLOF-এর ফুল ফর্ম হচ্ছে গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড (Glacial Lake Outburst Flood)। এক্ষেত্রে তিস্তায় হড়পা বানের পিছনেও রয়েছে এই GLOF। উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকায় দক্ষিণ লোনক হ্রদে এই  GLOF বা গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড ঘটে। যার ফলে ১০৫ হেক্টরেরও বেশি জায়গা জুড়ে জলের তীব্র 'বিস্ফোরণ' ঘটে। জলের 'বিস্ফোরণ'-এর সেই চাপে ভেঙে যায় বাঁধ। যার জেরে জলের তীব্র স্রোত হড়পা বানের আকারে তিস্তার ডাউনস্টিমে নেমে আসে। স্বাভাবিকভাবেই GLOF যখন ঘটে, তখন জলের তোড় আচমকা বেড়ে যায়। আর তার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা হয় মারাত্মক। কারণ, বাঁধ ভাঙা তীব্র স্রোতস্বিনী সেই জলের তোড়ের সাথে মিশে থাকে বরফ, পাথরের টুকরো, মোরেইন। জলের সাথে মিশে সেই তীব্র স্রোত প্রবল বেগে নীচে নামতে থাকে।  


কী কারণে GLOF ঘটে?
GLOF ঘটার পিছনে কাজ করে অনেকগুলি ফ্যাক্টর। যার মধ্যে রয়েছে আবহাওয়ার পরিবর্তন, হিমবাহের সংকোচন, বিপজ্জনক এলাকায় বসতি বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ভূ-পৃষ্ঠে 'টেনশন'।
আবহাওয়ার পরিবর্তন: গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ফলে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। যারফলে হিমবাহ গলছে। যার জেরে হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদগুলিতে জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেগুলো ভারসাম্য ও স্থিতিশীলতা হারাচ্ছে।
হিমবাহের সংকোচন: হিমবাহের সংকোচম মানে হিমবাহ গত গলবে, ততই হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদে জলের পরিমাণ বাড়বে। জলের পরিমাণ বাড়লেই জলের চাপ বৃদ্ধি পাবে। যে চাপ একটা সহ্যক্ষমতার উপরে গেলেই বাঁধ তার ধারণ ক্ষমতা হারাবে। ভেঙে যাবে বাঁধ।
বিপজ্জনক এলাকায় বসতি বৃদ্ধি: জনসংখ্যার বৃদ্ধি ও শহরায়নের ফলে যথেচ্ছ পরিকাঠামো গড়ে উঠছে। হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদের যত উপকণ্ঠে বেশি মাত্রায় পরিকাঠামো গড়ে উঠবে, ততই মাটি তার স্থিতিশীলতা বাড়াবে। যা বাড়িয়ে দেয় GLOF-এর ঝুঁকি।
এছাড়া ভূমিকম্প, তুষারধ্বস, ভূমিধ্বসের কারণেও ভাঙতে পারে বাঁধ। এক্ষেত্রে সিকিমে বিপর্যয়ের আগের দিনই নেপালে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প ঘটে। যার সাথে লোনক হ্রদে আউটবার্স্ট ঘটার যোগ রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


সিকিমে বিপর্যয়ের জেরে এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ওদিকে ২২ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান সহ এখনও নিখোঁজ ১০২ জন। প্রসঙ্গত, ২৩ জন নিখোঁজ জওয়ানের মধ্যে একজন জওয়ানকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায় ৪ তারিখ সন্ধ্যায়। বাকি নিখোঁজদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে ত্রিশক্তি কর্পসের জওয়ানরা। তল্লাশি চালানো হচ্ছে নিখোঁজ নাগরিকদেরও। দুর্গত স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পর্যটক, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। জোরকদমে উদ্ধারকাজ চলছে চুংথাম, লাচুং ও লাচেনে। তৈরি করা হয়েছে ত্রাণ শিবির। সেখানেই শিশু সহ সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ব্রহ্মাস্ত্র কর্পের সেনারা তাঁদের ত্রাণ দেওয়ার পাশাপাশি আহতদের শুশ্রুষাও করছেন। তবে চারদিকেই ধ্বংসলীলার ছাপ স্পষ্ট। চারদিকে শুধুই ঘোলা কাদামাটি আর পলির আস্তরণ।


আরও পড়ুন, Sikkim Flash Flood: তিস্তার তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত সেনা ছাউনি, উদ্ধারকাজে ব্রহ্মাস্ত্র-ত্রিশক্তি!


Sikkim Flash Flood: মাটির ভিতর থেকে বেরচ্ছে গাড়ি, ভয়াল তিস্তার ধ্বংসলীলার ছবি দেখে আঁতকে উঠতে হয়!



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)