নিজস্ব প্রতিবেদন : মহীশূরের মসনদে কে? বিজেপি বলছে, ইয়েদুরাপ্পা। কংগ্রেস বলছে, কুমারস্বামী। জোর বিতর্ক দাক্ষিণাত্যে। সংবিধান কিন্তু সরকার গঠনের সুপ্রিম-ক্ষমতা দিচ্ছে রাজ্যপালের হাতেই। অতএব গোটা দেশের নজর এখন কর্ণাটকের রাজভবনে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ত্রিশঙ্কু কর্ণাটক বিধানসভা। একক সংখ্যারিষ্ঠ দল হলেও ম্যাজিক ফিগার থেকে আট ধাপ পিছনে বিজেপি। জেডিএসকে নিঃশর্ত সমর্থনের আশ্বাস দিয়ে জোট ঘোষণা কংগ্রেসের। এবার তবে কী? সংবিধানের ১৬৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, রাজ্যপাল একজন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়োগ করেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশ অনুযায়ী মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যদের নিয়োগ করেন।


কিন্তু কোনও দল এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলে, রাজ্যপাল কাকে ডাকবেন তার কোনও স্পষ্ট উল্লেখ সংবিধানে নেই। আর ঠিক এই জায়গাতেই বারবার তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। সংবিধান যেখানে চুপ, তখন নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বিতর্কে জড়ান রাজ্যপালরা। এবারও একবার বিতর্কের জমি তৈরি হচ্ছে দাক্ষিণাত্যে।


রীতি অনুযায়ী একক বৃহত্তম দল সরকার গড়ার ডাক পায়। কোনও দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলে সে ক্ষেত্রে কী হবে? এসব ক্ষেত্রে সারকারিয়া কমিশনের কয়েকটি সুপারিশ রয়েছে-
১) রাজ্যপাল নিজের বিবেচনা অনুযায়ী এমন একজনকে বাছবেন যিনি বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন পাবেন


২) ডাকার আগে কয়েকটি শর্ত মাথায় রাখবেন তিনি


৩) প্রথমত, ভোটপূর্ববর্তী কোনও জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে সেই জোটই প্রথমে ডাক পাবে


৪) দ্বিতীয়ত, তেমন জোট না থাকলে, ডাক পাবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ  দল, যারা বিধানসভায় অন্যদের সমর্থন পেতে পারে


৫) তৃতীয়ত, ভোট পরবর্তী কোনও জোট সংখ্যার হিসেবে এগিয়ে গেলে সরকার গড়ার ডাক পেতে পারে তারাও


সারকারিয়া কমিশনের এই সুপারিশকে মান্যতা দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ২০০৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের তত্কালীন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ এই সুপারিশকে মান্যতা দেয়। কিন্তু বহুক্ষেত্রেই শীর্ষ আদালতকে উপেক্ষা করেছেন রাজ্যপালরা। যেমন ২০১৮-য় মেঘালয়ে কংগ্রেসের চেয়ে কম আসনে জয়ী হয়েও ভোট পরবর্তী জোটকে ঢাল করে সরকার গড়ার ডাক পায় বিজেপি। তার আগের বছর ২০১৭-য় মনিপুর-গোয়ায় কংগ্রেসের থেকে কম আসন পেয়েও সরকার গড়ে বিজেপি।


আরও পড়ুন, কর্ণাটকে কি নিরপেক্ষ হতে পারবেন রাজ্যপাল?


সাংবিধানিক রীতি এবং সারকারিয়া কমিশনের সুপারিশ মানলে কর্নাটকে প্রথম ডাক পাওয়ার কথা ইয়েদুরাপ্পা ব্রিগেডের। তাতে পথের কাঁটা কংগ্রেস-JDS জোট। রাজ্যপাল বাজুভাই বালা এবার তবে কোন পথে হাঁটবেন? সারকারিয়া কমিশনের সুপারিশ ধরে এগোবেন? নাকি সাংবিধানিক রীতি মানবেন? ধন্দ চরমে। কর্নাটকের কুর্সি দখল করতে ইতিমধ্যেই বাজুভাই বালার কাছে সরকার তৈরির দাবি জানিয়ে এসেছেন ইয়েদুরাপ্পা-কুমারস্বামী-সিদ্দারামাইয়া। বৃহস্পতিবারই শপথ নেবেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী, দেগে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। পাল্টা চাপ তৈরি করতে কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি কংগ্রেসেরও। কিন্তু অতীতে কংগ্রেসও রীতি ভেঙেছে।


দিল্লি, ২০১৩
বিজেপিকে আটকাতে আপ-কে সমর্থন করে কংগ্রেস। সেবার সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও ক্ষমতা দখল করতে পারেনি বিজেপি। কিন্তু কর্নাটক বাঁচাতে কংগ্রেস আদালতে গেলে লাভ কতটা? সংবিধান বলছে, সরকার গঠনে রাজ্যপালের বিবেচনাই চূড়ান্ত। এমনকী, দেশের কোনও আদালতও তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে না। তাঁর সিদ্ধান্ত প্রশ্নাতীত।