নিজস্ব প্রতিবেদন-  দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি সবথেকে উদ্বেগ এই সময়ে টিকাকে ঘিরে। দেশজুড়ে করোনার টিকা নিয়ে সমস্যা চলছে। সরকারি ঘোষণার পরেও টিকা (Vaccine) কম বা না থাকার জন্য কোনও কোনও রাজ্যে ১৮-৪৫ বছর বয়সিদের টিকাকরণ আপাতত স্থগিত রাখতে হয়েছে। টিকা উৎপাদনে এত পরিকাঠামো থাকার পরও দেশের এই অবস্থা কেন? কেন্দ্রকে এই নিয়ে মুহূর্মুহূ বিঁধে চলেছ বিরোধীরা। (Opposition) কংগ্রেস ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে এই নিয়ে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা বলেছেন যে, গত বছর বিশ্বের সব দেশ যখন টিকা উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে, তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী করোনাকে হারিয়ে দেওয়া গেছে ভেবে দেশবাসীকে হাততালি দিতে বলেছেন। এখন হঠাৎ সম্বিৎ ফিরেছে। টিকা উৎপাদন বৃদ্ধির কথা বলা হলেও তা তো আর একদিনে হবে না। কংগ্রেস নেতার (Congress Leader) আরও মন্তব্য, ‘এ জন্যই এখন গঙ্গা দিয়ে এত মৃতদেহ ভেসে যাচ্ছে’।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: কুম্ভমেলা ফেরত ৬৭ বছরের বৃদ্ধা 'সুপার স্প্রেডার', তাঁর থেকে Corona আক্রান্ত ৩৩ জন


কিন্তু ভারতকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হল কেন?  খোঁজখবর করে যা জানা যাচ্ছে তাতে  উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য টিকা নিশ্চিত করতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (World Trade Organisation) নিয়মকানুন শিথিল করার জন্য আবেদন করেছিল ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। অথচ, দেশে টিকার উৎপাদন বাড়াতে ৬ মাসেরও বেশি সময় নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কোভাক্সিন উৎপাদন বাড়াতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মাত্র ৩ সংস্থাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। যে ৩ সংস্থাকে কেন্দ্র টিকা উৎপাদনের জন্য বেছে নিয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা বুলন্দশহরের ভারত ইমিউনোলজিক্যালস লিমিটেড অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল লিমিটেড, মহারাষ্ট্র সরকারের অধীনে থাকা হাফকাইন কর্পোরেশন এবং ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভলপমেন্ট বোর্ডের অধীনে থাকা হায়দরাবাদের ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস লিমিটেড। এদের মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে হাফকাইন কর্পোরেশন মাসে ২ কোটি টিকা উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস লিমিটেড ও ভারত ইমিউনোলজিক্যালস লিমিটেড অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল লিমিটেড মাসে ১ থেকে দেড় কোটি টিকা উৎপাদনের করতে পারবে। তবে তার জন্য পরিকাঠামো অগাস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে তৈরি করা হবে বলে জানা যাচ্ছে।


আরও পড়ুন: ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি! দেশে ৬-৮ সপ্তাহ lockdown-এর সুপারিশ ICMR প্রধানের


গত বছর অক্টোবর মাসে কোভিডের টিকা ও ওষুধ উৎপাদনের জন্য জরুরি প্রযুক্তি পেতে এবং বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু বিষয়ে ছাড়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে একসঙ্গে আবেদন জানায় ভারত। আবেদনে ভারত সরকার জানিয়েছিল,  উন্নয়নশীল দেশে কম দামে টিকা এবং ওষুধ উৎপাদন দ্রুত বাড়ানোর ক্ষেত্রে সবথেকে বড় বাধা হিসাবে সামনে এসে দাঁড়াতে পারে পেটেন্ট চুক্তি। এমনকি, মোদী সরকার বিদেশ থেকে টিকা পাওয়ার জন্য উঠেপড়েও লেগেছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, দেশে টিকার উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এইসময়ে তেমন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।


সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তৈরি, তাই সেখানে বাধ্যতামূলক ভাবে লাইসেন্স পেতেই হবে। প্রতি মাসে ৫ কোটি টিকা তৈরির পরিকাঠামো আছে সেরাম ইনস্টিটিউটের। ‘কোভ্যাক্সিন’-এর ক্ষেত্রে অবশ্য এই বিষয়টি লাগু নয়। তবে,  ভারত বায়োটেকের টিকা উৎপাদনের পরিকাঠামো আরও কম। তারা মাত্র মাত্র ৯০ লাখ টিকা উৎপাদন করতে পারে যা দেশের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।। বিরোধীদের দাবি, কেন্দ্র দেশের অন্যান্য উপযুক্ত সংস্থাকে লাইসেন্স দিয়ে, প্রযুক্তি দিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে ৬ মাসেরও বেশি সময় নিয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতে দেশে সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করায় কেন্দ্রীয় সরকার নড়ে চড়ে বসে।