২-০ ফলে জয়, গুজরাটে ব্যবধান কমল বিজেপির
২০১২-র নির্বাচনে একাধিক কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থীরা বড় ব্যবধানে জয় পেলেও, এবারের নির্বাচনে সেই ব্যবধান অনেকটাই কমেছে শাসকদলের পক্ষে। শুধুমাত্র ঘাটলোধিয়া ও চৌরাসিয়া কেন্দ্র দুটিতে বিজেপির পক্ষে জয়ের ব্যবধান উল্লেখযোগ্য। ঘাটলোধিয়ায় বিজেপি প্রার্থী প্যাটেল ভুপিন্দরভাই রজনীকান্ত ১লক্ষ ১৭হাজার ৭৫০ ভোটে হারিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী প্যাটেল শশীকান্তকে। অন্যদিকে, চৌরাসিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী প্যাটেল ঝনখানা হিতেশকুমার ১লক্ষ ১০হাজার ৮১৯ ভোটে হারিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী প্যাটেল যোগেশ ভগবানকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : বলা চলে কার্যত হোঁচট খেয়েই গুজরাটে হার্ডল টপকাল বিজেপি। ১৫০ তো হলই না, উল্টে গুজরাটে তিন অঙ্কতে পৌঁছতে পারল না গেরুয়া ব্রিগেড। অন্যদিকে, ১৯ আসন বাড়িয়ে বিজেপির ইগোয় কিছুটা হলেও চিড় ধরালেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।
১৮২ আসনের গুজরাট বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ৯২। স্বচ্ছন্দে সরকার গড়ছে বিজেপি। কিন্তু, তাতেও ২০১২-র তুলনায় আসন কমল ১৬টি। যদিও, ভোটের হার গত বারের তুলনায় বেড়েছে দেড় শতাংশ। আসন কমলেও, এই ভোটের হারকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। অন্যদিকে, ২০১২-র তুলনায় কংগ্রেসের আসন বেড়েছে ১৯টি।
আরও পড়ুন- গুজরাট জিতলেও নিজের শহরেই হারলেন নরেন্দ্র মোদী
একদিকে, লক্ষ্যে পৌঁছতে না পেরে কংগ্রেসের 'নীচ', জাতপাত আর তোষণের রাজনীতিকেই দায়ী করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। অন্যদিকে, কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রকে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি তিনি। পাশাপাশি হারের স্বীকার করলেও, দিনের শেষে অনেকটাই পরিণত দেখাল কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে। জনতার রায় মাথা পেতে নিয়ে বিজেপিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। বিজেপির ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে সৌজন্যের লড়াইয়ের জন্য কংগ্রেস কর্মীদের চাঙ্গা করার কাজটাও সেরে রাখলেন সভাপতি রাহুল।
নির্বাচনী মঞ্চে উন্নয়নের সঙ্গে ভূমিপুত্রের তাসও নিখুঁতভাবে খেলতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে। জিএসটি, নোট বাতিলের মতো ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে যখন বিজেপির ওপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে কংগ্রেস, তখন সুরাটে ৯টি আসনের ৯টিতেই জয় পেয়েছে বিজেপি। আবার আমেদাবাদে ১৭টির মধ্যে ১৩টিই জিতেছে বিজেপি। ভদোদরায় ৫টি আসনের ৪টিতেই জয় পেয়েছে গেরুয়া শিবির। যদিও, প্যাটেল ফ্যাক্টরে সৌরাষ্ট্রে আসন খোয়াতে হয়েছে বিজেপিকে। ৩৯টি প্যাটেল আসনের ২২টিতে জিতেছে বিজেপি।
আরও পড়ুন- হার্দিক ফ্যাক্টর কি আদৌ কাজ করল? উত্তর খুঁজছে কংগ্রেস
তবে, এত কিছুর মাঝে কিন্তু জয়ের ব্যবধান কমেছে অনেকটাই। ২০১২-র নির্বাচনে একাধিক কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থীরা বড় ব্যবধানে জয় পেলেও, এবারের নির্বাচনে সেই ব্যবধান অনেকটাই কমেছে শাসকদলের পক্ষে। শুধুমাত্র ঘাটলোধিয়া ও চৌরাসিয়া কেন্দ্র দুটিতে বিজেপির পক্ষে জয়ের ব্যবধান উল্লেখযোগ্য। ঘাটলোধিয়ায় বিজেপি প্রার্থী প্যাটেল ভুপিন্দরভাই রজনীকান্ত ১লক্ষ ১৭হাজার ৭৫০ ভোটে হারিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী প্যাটেল শশীকান্তকে। অন্যদিকে, চৌরাসিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী প্যাটেল ঝনখানা হিতেশকুমার ১লক্ষ ১০হাজার ৮১৯ ভোটে হারিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী প্যাটেল যোগেশ ভগবানকে।
অন্যদিকে হিমাচল প্রদেশে হোঁচট খেয়ে নয়, দাপট দেখিয়েই কংগ্রেস সরকারকে উত্খাত করে জয় পেয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে, উল্লেখযোগ্য বিষয়, সেখানকার ৬৮টি আসনের মধ্যে ৪৪টি আসনে বিজেপি জয় পেলেও, প্রতিটি ক্ষেত্রেই জয়ের ব্যবধান নিতান্তই কম। রাজ্যের নাচান কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী বিনোদ কুমার সর্বচ্চ ব্যবধান ১৫ হাজার ৮৯৬ ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী লাল সিং কৌশলকে পরাজিত করেছেন।
আরও পড়ুন- গুজরাট জিতলেও নিজের শহরেই হারলেন নরেন্দ্র মোদী
প্রত্যাশা ও বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুসারে ভোটের ফল প্রত্যাশিত হলেও, এবারের নির্বাচনী ফল কিন্তু শাসক-বিরোধী দুই শিবিরের কাছেই বড় বার্তা হয়ে রইল। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকালে, গুজরাট জয় তাদের পক্ষে খুব একটা সস্তিদায়ক হল না। একদিকে আসন সংখ্যা কমে যাওয়া, অন্যদিকে প্রতিটি কেন্দ্রেই জয়ের ব্যবধান কমে যাওয়া। একই অবস্থা হিমাচল প্রদেশেও। সেখানে বড় জয় আসলেও, ব্যবধান কমেছে অনেকটাই। উল্টোদিকে বিরোধী শিবিরের জন্যও রয়ে গেল বড় চ্যালেঞ্জ। কোমর বেঁধে এখন থেকে শুরু করলে, আসন্ন নির্বাচনে ভাল ফল পাওয়া যে সমস্যার হবে না সেই বার্তাই কিন্তু বিরোধীদের জন্য দিয়ে রাখল দুই রাজ্যের নির্বাচনী ফল।