মানবজাতির বিপদে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে রোশনারা-সুস্মিতারা, উদয়-অস্ত খেটে বানাচ্ছে PPE
নিজস্ব প্রতিবেদন : সমগ্র মানবজাতি আজ ভয়ঙ্কর বিপদের মধ্যে। সেই বিপদের নাম করোনা। চারদিকে শুধু-ই ত্রাহি ত্রাহি রব। আর এরমধ্যেই করোনার বিরুদ্ধে লড়তে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন রোশনারা-সুস্মিতারা৷
সবাই যখন লকডাউনের জন্য গৃহবন্দি, তখন প্রতিদিন অনেকটা পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়ে কারখানায় চলে আসছেন তাঁরা। তৈরি করছেন বিশেষ পোষাক ৷ যার পোষাকি নাম PPE অর্থাৎ পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট ৷
রাজ্য সরকারের নির্দেশে সোনারপুরের একটি কারখানায় তৈরি করা হচ্ছে এই পোষাক ৷ প্রতিদিন ৫ হাজার পোষাক তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ৷ এরজন্য সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নাগাড়ে কাজ করে চলেছেন মোট ১৫০ জন মহিলা।
এইভাবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজেদের সামিল করতে পেরে তাঁরা প্রত্যেকেই খুশি৷ সতর্কতা বজায় রেখে একাধিক নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করে চলেছেন তাঁরা। কীভাবে কাজ চলছে কারখানার ভিতরে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
নিয়ম মেনে প্রথমেই নির্দিষ্ট দুরত্ব অনুযায়ী লাইন দিয়ে দাঁড়াচ্ছেন তারা ৷ প্রত্যেকের হাতে দেওয়া হচ্ছে হ্যান্ডওয়াশ, হাত ধুয়ে আসার পর বিশেষ কেমিক্যাল প্রত্যেকের শরীরে স্প্রে করা হচ্ছে ৷ তারপরই কারখানার ভিতরে ঢুকতে পারছেন তারা ৷
কারখানার ভিতরে নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রত্যেককে দেওয়া হচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ৷ সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রেখে প্রত্যেকেই কাজ করছেন নির্দিষ্ট দুরত্বে বসে ৷
কারখানাটিও নিয়মিত স্যানিটাইজ করা হচ্ছে ৷ কোনও কারণে কেউ কারখানার বাইরে বের হলে, তাঁকে ফের উপরোক্ত প্রক্রিয়াগুলি মেনে ভিতরে ঢুকতে হচ্ছে ৷
এবার আসা যাক কীভাবে এই বিশেষ পোষাক, PPE বা পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে সেই কথায়। পোষাক তৈরির জন্য কাপড় দেওয়া হচ্ছে রাজ্য সরকাররের পক্ষ থেকে। সেই কাপড় সরকারের দেওয়া স্যাম্পল অনুযায়ী প্রথমে কাটিং করা হচ্ছে ৷
কাটিং করার পর ধাপে ধাপে লুপ সেলাই, জিপার জয়েন, পিছনের অংশ সেলাই, পা ও হাতের ইলাস্টিক সেলাই, শোল্ডার জয়েন, ইনসিম, ক্যাপ অ্যাটাচ, বেল্ট অ্যাটাচ প্যাক করা হচ্ছে ৷ পায়ের পাতা থেকে মাথা পর্যন্ত একটিই অংশ ৷ চেন খুলে পোষাক পরতে হবে ৷
প্রতিটি টেবিলে আলাদা আলাদা অংশের কাজ করা হচ্ছে ৷ যিনি লুপ সেলাই করছেন তিনি শুধু লুপ সেলাইয়ের কাজই করছেন ৷ এই পোষাকের বাইরে শুধু আলাদা করে তৈরি করা হচ্ছে মাস্ক ৷
পুরো অংশ তৈরি হয়ে গেলে তা ফের স্যানিটাইজ করে ভাঁজ করে প্যাকিং করা হচ্ছে ৷ সংস্থার পক্ষ থেকেই রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট করা জায়গায় ডেলিভারি করা হচ্ছে এই পোষাক ৷
উল্লেখ্য, এই পোষাক কেবলমাত্র একবারই ব্যবহার করার জন্য ৷ একবার ব্যবহার করেই তা ফেলে দিতে হবে ৷