৩ মাস বেতনহীন কর্মচারীরা, লকডাউনে ধুঁকছে কফিহাউস
শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: বেশ কয়েক বছর ধরেই ধুঁকছে কফিহাউস। চলছিল অক্সিজেন সিলিন্ডারেই। কোভিড লকডাউন এসে পরিস্থিতিটাকে আরও খারাপ করে দিল। আনলক পর্বে শর্তসাপেক্ষে শহরের রেস্তোরাঁ-কাফে খোলার অনুমতি পেলেও, এখনও অবধি খোলেনি কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউস। অন্দরমহলে উঁকি দিয়ে শোনা গেল না তেমন আশার কথাও।
বাঙালি চিরশ্রেষ্ঠ মেধার আড্ডাপীঠ। প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের আঁতুড়ঘর। টেবিলের উপরে দাঁড়িয়ে কলরোল তুলছেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়। ছড়ানো ছেটানো চেয়ারে এদিক সেদিকে ছড়িয়ে বসে সুনীল,ঋত্বিক, সমরেশ, সঞ্জীব, সুভাষ। বিংশ শতাব্দীর হাংরি জেনারেশনের সাহিত্য ও সংস্কৃতি আন্দোলনের ছক কষা এখান থেকেই।
নিয়মিত ইনফিউশনের কাপে তুফান তুলেছেন সত্যজিত্, অমর্ত্য, মৃণাল, অপর্ণারা। সেই কফিহাউস ধুঁকছে। লকডাউনে সেই যে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়েছিল, আনলক পর্বেও তা খোলা যাচ্ছে না। ৬৫ জন কর্মাচারী মাইনে পাচ্ছেন না তিনমাস হল। আসলে কফি হাউস চলে সমবায় ব্যবস্থায়। যত্র আয়,তত্র ব্যয়। আয়ের টাকাতেই মাইনে, সাফ সাফাই, মেইনটেন্যান্স। বাড়ি ভাড়ার টাকাও দিতে হয় সরকারকে। লকডাউন পর্বে সব বন্ধ।
আনলকে তো খুলেছে বেশ কিছু রেস্তোরাঁ, কাফে, তাহলে কফি হাউস খুলতে বাধা কোথায়? কর্মীরা বলছেন অনুমতি পাচ্ছেন না। কারণ কফি হাউস মানেই যে একসঙ্গে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা। করোনার স্বাস্থ্যবিধিতে তা সম্ভব নয়। ফলে ৩ মাস ধরে বেতনহীন কর্মীরা।
"দাদা, মেনুকার্ড রাখুন, চারটে ইনফিউশন দিন তো! আর খিদেও পেয়েছে, দুটো চিকেন ওমলেট, ভাগ করে নেব।" এই অর্ডারের জন্য বোধহয় কান পেতে রয়েছে কফি হাউস নিজেও।