`Raj Kundra-র পর্নোগ্রাফি অ্যাপে অভিনয়ের প্রস্তাব এসেছিল`, বিস্ফোরক ৫ মডেল, অভিনেত্রী
পর্নোগ্রাফি মামলায় শিল্পা শেঠির স্বামী রাজ কুন্দ্রার গ্রেফতারির পর তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ৫ জন মডেল, অভিনেত্রী। তাঁদের দাবি রাজের অ্যাপের জন্য অভিনয়ের প্রস্তাব তাঁদের কাছে এসেছিল। নিজেদের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন শার্লিন চোপড়া, পুনম পাণ্ডে, ইশিকা বোহরা, পুনীত কৌর ও সাগরিকা সোনা সুমন।
রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে যে ৫ মডেল অভিনেত্রী মুখ খুলেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন হলেন পুনীত কউর। পুনীত একজন ইউটিউবার। তিনি জানিয়েছেন, রাজের কাছ থেকে তাঁর অ্যাপের জন্য অভিনয়ের প্রস্তাব এসেছিল। যদিও তিনি তা গ্রহণ করেননি।
পুনীত আরও জানিয়েছেন, রাজ তাঁর অ্যাপ 'হটশট'-এ অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে নিজেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। রাজের গ্রেফতারির খবরের স্ক্রিনশট দিয়ে পুনীত লেখেন, 'আমি এ বার নির্ঘাত মরব। এই লোকটা হটশটে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়ে আমাকে সরাসরি মেসেজ পাঠিয়েছিলো!! ভাবতেই পারছি না, উনি সত্যিই মেয়েদের এভাবে লোভ দেখান! কী সাঙ্ঘাতিক। জেলে পচে মরো রাজ কুন্দ্রা।''
শার্লিন চোপড়ার দাবি, তাঁর সঙ্গে রীতিমতো চুক্তি করেই কাজে নেমেছিলেন রাজ। মহারাষ্ট্র সাইবার সেলকে শার্লিন সাফ জানিয়েছেন, রাজের হাত ধরেই তিনি প্রাপ্তবয়স্কদের ছবির জগতে এসেছিলেন। মডেল, অভিনেত্রীর দাবি, প্রতি ছবিতে কাজ করার জন্য ৩০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হত শার্লিনকে।
শার্লিন আরও জানান, তিনি রাজ কুন্দ্রার অ্যাপের জন্য এমন ১৫-২০টি ছবিতে কাজ করেছেন। রাজ তাঁকে লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে শিল্পার স্বামী সেকথা কথা রাখেননি আর সেকারণেই এক বছর পর চুক্তি ভেঙে যায়।
রাজ কুন্দ্রার বিষয়ে মুখ খুলেছেন মডেল ইশিকা বোহরা। তাঁর কথায়, একবছর আগে তিনি রাজের সহকারী উমেশ কামাতের কাছ থেকে ফোন পান। নগ্ন দৃশ্যে শ্যুটিংয়ের জন্য দৈনিক ৩৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল তাঁকে। বলা হয়েছিল, নগ্ন দৃশ্যের ওই শ্যুটিং হবে ইরোটিক। অর্থাৎ শুধু নগ্নতা নয়, তাতে শিল্পের মিশেল থাকবে। ইশিকা জানান, লকডাউনের জন্য তাঁর হাতে তখন কাজ ছিল না তাই তিনি শ্যুটিংয়ে রাজি হয়ে যান।
তবে ইশিকার দাবি, নিজের অ্যাপে ইরোটিক ছবি রাখলেও বিদেশে পূর্ণমাত্রার পর্ন ছবিই বিক্রি করতেন রাজ। শ্যুটিংয়ে গিয়েই তিনি তা বুঝেছিলেন। অভিযোগ, তাঁকে আর্ট শ্যুটের কথা বলা হলেও শ্যুটিংয়ে তাঁর চার দিকে চারটি ক্যামেরা রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি ছিল নীচ থেকে উপরের দিকে ছবি তোলার জন্য নেওয়া। আর তাতেই তিনি বুঝেছিলেন এ ধরনের ছবি কখনওই আর্ট শ্যুটে ব্যবহার হতে পারে না।
এখানেই শেষ নয়, ইশিকা বোহরা রাজের বিরুদ্ধে মডেলদের কম টাকায় কাজ করিয়ে নেওয়ার অভিযোগও এনেছেন। তাঁর দাবি, যেখানে বলিউড এবং মডেলিং দুনিয়াতে এক দিনের কাজের সময় মাত্র আট ঘণ্টার। অথচ, তাঁর মতো বহু মডেলকে এক বেলার টাকায় তিনবেলার কাজ করিয়ে নিতেন রাজ। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি রাজের অ্যাপে কাজ করেননি বলে জানান ইশিকা। জানান, তাঁকে টানা ২৪ ঘণ্টা কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
রাজ কুন্দ্রার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুলেছেন পুনম পাণ্ডে। তাঁর কথায়, হটশটের আগেও প্রাপ্তবয়স্কদের অ্যাপ বানানোর চেষ্টা করেছিলেন রাজ। তিনি এবং রাজ একসঙ্গেই নাকি ওই অ্যাপ বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে টাকার ভাগ বাটোয়ারার গোলযোগের কারণেই তিনি চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে যান বলে দাবি পুনমের।
পুনমের কথায়, তাঁর কিছু ছবি ও ভিডিয়ো রাজের সংস্থার কাছে থেকে গিয়েছিল যা তাঁর অনুমতি ছাড়াই প্রকাশ করে দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে এ নিয়ে তিনি মামলাও দায়ের করেছিলেন। পুনমের অভিযোগ, ওই ছবি ও ভিডিয়োর নীচে তাঁর ফোন নম্বর দিয়ে দেওয়া হত। যেকারণে তিনি নম্বর বদলাতে এবং দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। পুনমের কথায় এতদিন শিল্পা শেঠির কথা ভেবেই নাকি তিনি বিশেষ কিছু বলতে চাননি।
মডেল, অভিনেত্রী সাগরিকা সোনা সুমনের জানিয়েছেন, তাঁকে ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়ার কথা বলে অডিশনে ডেকেছিলেন রাজ। যেখানে তাঁর অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। গত ফেব্রুয়ারিতে এ নিয়ে তিনি পুলিসের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, তাঁকে অডিশনে পোশাক খুলে ফেলতে বলা হয়েছিল।
রাজের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন সাগরিকা। তাঁর কথায়, তিনি মডেলিং করেন, তবে লকডাউনে হাতে কাজ ছিল না। সেসময় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন উমেশ কামাত, যিনি কিনা রাজের সহকারী। উমেশই তাঁকে ওয়েবসিরিজে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। তবে ভিডিয়ো কলে আচমকাই তাঁকে পোশাক খুলে ফেলতে বলা হয়। উল্টো দিকে ছিলেন রাজ, উমেশ এবং মুখ ঢেকে রাখা এক ব্যক্তি।