আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫ বছর পূর্তিতে পুরনো ছবিতে ফিরে দেখা নেতাজিকে
১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি কটকে জন্মগ্রহণ করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। স্কুলশিক্ষার পর প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। পরে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে ফিলোসপি নিয়ে পড়াশুনো শেষ করে ব্রিটেনে পাড়ি দেন।
তখনকার দিনে কঠিন সিবিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পেরেছিলেন নেতাজি। তবে ব্রিটিশ সরকারের অধীনে কাজ করতে চাননি।
কংগ্রেসের সদস্য হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তবে মহাত্মা গান্ধী ও জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে নেতাজির ভাবনাচিন্তার ব্যাপক ফারাক ছিল। ১৯৩৮ সালে কংগ্রেসের সভাপতি হন, তবে গান্ধীর সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে ওই পদে বেশিদিন থাকতে পারেননি সুভাষ। মহাত্মার অহিংসা নীতির তীব্র বিরোধী ছিলেন নেতাজি। রক্তাক্ত সংগ্রামের মাধ্যমেই স্বাধীনতা সম্ভব বলে মনে করতেন সুভাষচন্দ্র বসু।
১৯৪১ সালে কলকাতায় নিজের বাড়িতেই গৃহবন্দি হয়েছিলেন সুভাষ। তবে সুভাষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হয়নি ব্রিটিশ সরকারের। তখনকার দিনে ছদ্মবেশে দেশের সীমান্ত পেরিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন, তারপর জার্মানিতে পাড়ি দেন সুভাষ।
১৯৪২ সালে ক্যাপ্টেন জেনারেল মোহন সিং সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেন। পরে তা ভেঙে যায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের সাহায্য আইএনএ-র দায়িত্ব নেন দেশনায়ক।
১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর আজাদ হিন্দ ফৌজের সুপ্রিম কম্যান্ডার হন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। আজাদ হিন্দ সরকারের গঠনের হুঙ্কার দেন। ডাক দেন, 'তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব'। ১৯৪৪ সালে বর্মায় (বর্তমানে মায়ানমার) তাঁর ভাষণ উজ্জীবিত করে ভারতীয়দের।
১৯৪৪ সালে ইম্ফল ও কোহিমায় ব্রিটিশ সেনার উপরে হামলা করে আইএনএ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সময় আইএনএ ও জাপানি সেনার যৌথ বাহিনীর কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ব্রিটিশ সেনা। লন্ডনে ন্যশানাল আর্মি মিউজিয়ামে এই লড়াইকে 'greatest ever battle involving British forces' আখ্যা দিয়েছে। এতেই বোঝা যায়, ব্রিটিশ সরকারের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।