শিষ্য সচিনের গালে গুরু আচরেকরের সপাটে চড়! জীবন বদলে গিয়েছিল মাস্টার ব্লাস্টারের
একটা সপাটে চড়। তাও সচিন তেণ্ডুলকরের গালে!
গুরু রমাকান্ত আচরেকরের সেই একটা সপাটে চড়ই ক্রিকেটার সচিনের জন্ম দিয়েছিল। গুরুর শেষযাত্রায় সেই চড়ের উল্লেখ করতে ভুললেন না মাস্টার ব্লাস্টার।
সচিন তেণ্ডুলকর যেন-তেন প্রকারে ক্রিকেটে পরিবেষ্টিত হয়ে থাকতে চাইতেন। ছোট থেকেই। সব সময় যে ব্যাট হাতে মাঠ নামতে হবে তা নয়! সচিন কিন্তু একটা সময় ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে বেশি পছন্দ করতেন।
কোচ আচরেকর সচিনের এই অভ্যাস বদলাতে চাইতেন। তিনি চাইতেন, যতটা বেশি হোক সচিন যেন ম্যাচ খেলেন। ম্যাচ দেখার থেকেও প্র্যাকটিস তাঁর জীবনে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন আচরেকর। আর তাই সেই চড়!
সচিন বলছিলেন, ''স্কুলের পর তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে খেয়ে নিতাম। স্যর তখন আমার জন্য ম্যাচ প্র্যাকটিসের বন্দোবস্ত করতেন। তিনি বিপক্ষ দলকে বলে দিতেন, সচিন চার নম্বর ব্যাট করবে। আমি খেয়-দেয়ে স্যরের সঙ্গে রওনা হতাম।''
সেই ঘটনার কথা জানাতে গিয়ে সচিন বললেন, "একদিন স্কুলের পর ওয়াংখেড়েতে গিয়েছিলাম ম্যাচ দেখতে। সারদাশ্রম ইংলিশ মিডিয়াম বনাম সারদাশ্রম মারাঠি মিডিয়ামের ম্যাচ ছিল। ওটা ছিল হ্যারিস শিল্ড টুর্নামেন্টের ফাইনাল। আমরা স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটাচ্ছিলাম। এমন সময় স্যর এসে হাজির। উনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি ম্যাচ খেলতে যাইনি কেন! আমি উত্তরে বললাম, স্যর আজকের দিনে আমি প্রিয় দলকে সমর্থন জোগাতে চেয়েছিলাম। এটাই আমার কাছে ম্যাচ খেলার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছিল। কথাটা শুনে সঙ্গে সঙ্গে স্যর আমার গালে একটা সপাটে চড় কষিয়ে দেন। আমার হাতের টিফিন বক্সটা ছিটকে পড়ে মাটিতে। স্যর প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে বলেন, অন্যের জন্য স্ট্যান্ড থেকে গলা ফাটিয়ে লাভ নেই। নিজেকে এমনভাবে তৈরি করো যেন অন্যরা তোমার জন্য গলা ফাটায়। সেদিনের সেই চড়টা আমাকে ক্রিকেটার হিসাবে তৈরি হতে সাহায্য করেছিল। আমি তার পর থেকে কঠিন পরিশ্রম করা শুরু করেছিলাম। নিজেকে তৈরি করতে চেয়েছিলাম।"