টিকায় টেক্কা, COVAXIN নাকি COVISHIELD, কম খরচে কোন টিকা কার্যকর?
নিজস্ব প্রতিবেদন: ভ্যাকসিন হাতে এসে পৌঁছানোর আগেই শুরু হয়েছে রেসারেসি। কোন ভ্যাকসিন ভালো, কার ভ্যাকসিনের দাম কম, কোন ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার মেয়াদ বেশি এই সমস্তটা নিয়েই এখন আলোচনা তুঙ্গে। কিন্তু সাধারণ মানুষ কোন ভ্যাকসিনের দিকে ঝুঁকবে? আদৌ কি সেই বাছাইয়ের স্বাধীনতা থাকবে জনসাধারণের হাতে ? তাই নিয়ে দানা বেঁধেছে প্রশ্ন।
COVISHIELD ড্রাই রান চলাকালীন তার ফলাফল হাতে আসার আগেই জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারে ছাড়পত্র পেয়েছে কোভ্যাক্সিন। কিন্তু কেন এমনটা হল? তাই নিয়ে আলোচনা বিভিন্ন মহলে। প্রসঙ্গত, বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে কোনও সায়েন্টিফিক জার্নালে ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি COVISHIELD এর ফলাফল। এর মধ্যে কীভাবে অন্য ভ্যাকসিন ছাড়পত্র পেতে পারে?
DCGI ভারতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার টিকা COVISHIELDকে। যা তৈরি হচ্ছে পুণের সিরাম ইনস্টিটিউটে। অন্যদিকে অনুমোদন পেয়েছে হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক এবং কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান আইসিএমআর-এর COVAXIN।
ভারত বায়োটেক কর্ণধার কৃষ্ণ এম এল্লার জানিয়েছেন, তাদের তৈরি COVAXIN, জল ছাড়া কিছু নয়, তবে তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মাত্র১০ শতাংশ। যেখানে অক্সফোর্ট টিকা ৬০ শতাংশ। জলের মতো বলার কারণ, সোমবার বায়োটেকের নাম না-করে সিরাম কর্ণধার আদার পুনাওয়ালার কটাক্ষ করে বলেন, "ফাইজ়ার-বায়োএনটেক, মডার্না ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা— এই তিন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষেধক কার্যকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু বাকি ভ্যাকসিন 'জলের' মতো নিরাপদ"।
প্রসঙ্গত, COVISHIELD ছাড়পত্র পাওয়ার মুহূর্তে রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যন স্বামী টুইট করে জানিয়েছিলেন ‘‘ইংরেজদের প্রতিষেধক যেখানে ভারতে মাত্র ১,২০০ জনের উপরে পরীক্ষা করা হয়েছে, সেখানে কোভ্যাক্সিন পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজারের উপরে। তা সত্ত্বেও ভারতীয় প্রতিষেধককে প্রাধান্য দেওয়া হল না।’’
অন্যদিকে. দেশীয় টিকা হিসেবে আত্মনির্ভর ভারত গড়তে নরেন্দ্র মোদী আশা রেখেছেন COVAXIN এর উপর। পাশাপাশি, বিজ্ঞানীদের মতে করোনার নতুন স্ট্রেনের সঙ্গে লড়তে পারবে COVAXIN। তবে, DCGI-এর ডিরেক্টর বিজি সোমানি আশ্বস্ত করেছেন, দুটি ভ্যাকসিন ১০০ শতাংশ নিরাপদ।
কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনকে (Covishield) ছাড়পত্র দিয়েছে ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। গণটিকাকরণ ব্যবস্থা করতে চলেছে কেন্দ্র। দেশজুড়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ড্রাই রান। তবে, ওই টিকা বাজারে বিক্রি করার অনুমতি পেলে প্রতি ডোজের দাম পড়বে ১০০০ টাকা। এমনটাই জানিয়েছেন সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান আদার পুনাওয়ালা (Adar Poonawalla)। তিনি বলেন, 'প্রথম ১০ কোটি ডোজ বিশেষ মূল্যে দেওয়া হচ্ছে সরকারকে। প্রতি ডোজের দাম পড়বে ২০০ টাকা। তারপর বিভিন্ন ধরনের দাম হতে পারে।'
তবে খোলা বাজারে সেই টিকা কিনতে হবে প্রতি ডোজ ১০০০ টাকায়। দু'টি ডোজের ভ্যাকসিনের দাম পড়বে ২০০০ টাকা। সেখানে কোভ্যাকসিনের দাম কত হতে পারে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
COVAXIN কে বলা হচ্ছে এর ধরন Inactivated। COVISHIELDকে বলা হচ্ছে এটির ধরন Non Replicating viral Vector।
COVAXIN ১৪ দিনের মাথায় শরীরে দুটি ডোজ প্রয়োগ করা হবে। COVISHIELDকে তিন মাসের মাথায় দেওয়া হবে পরবর্তী ডোজকে।