New Year 2024: পাহাড়ের কোলে ধামসা-মাদলের বোলে রঙিন বর্ষবরণ...
বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের শুশুনিয়া পাহাড়ঘেঁসা শিউলিবোনা গ্রাম। ছবির মতো সাজানো এই আদিবাসী গ্রাম সারা বছর একান্তে পড়ে থাকে নিস্তেজ নিস্তরঙ্গ হয়ে।
কিন্তু ফি-বার ইংরেজি বছরের শেষদিনে ও নতুন বছরের শুরুর দিনে এই গ্রাম যেন জেগে ওঠে। গ্রামের প্রান্তে মাঠে মাটির নিকোনো মঞ্চে শুরু হয় খেরওয়াল তুকৌ উৎসব।
কথিত আছে, আজ থেকে প্রায় তিন দশক আগে শময়িতা মঠের প্রতিষ্ঠাতা সন্ন্যাসী ধরতিবাবা শুশুনিয়ায় এসেছিলেন বছরের শেষ দিনে। ভালো লেগে যায় তাঁর এই শিউলিবোনা গ্রাম, গ্রামের মানুষের সহজ-সরল জীবনযাপন।
মূলত ধরতিবাবার উদ্যোগেই গ্রামে শুরু হয় উন্নয়নের কাজ। দ্রুত বদলে যেতে থাকে গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান। তিন দশক আগে ধরতিবাবার আগমনের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার পাশাপাশি বর্ষবিদায় ও নববর্ষকে স্বাগত জানাতে তখন থেকেই শুরু হয় এই খেরওয়াল তুকৌ উৎসব।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আয়োজনের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন শুধু বাঁকুড়া নয়, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, দুই বর্ধমান, মালদা, মুর্শিদাবাদ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আদিবাসী মানুষজন ধামসা মাদল নিয়ে হাজির হন শুশুনিয়ায়। অসম, ওডিশা, ঝাড়খন্ড থেকেও আসেন আদিবাসী শিল্পীরা।
বছরের শেষ দিনে শিউলিবোনা গ্রামের প্রান্তে মাঠে লাগড়া, পাতা, সহরাই, দাশাই নাচে বছরের শেষ অস্তমিত সূর্যকে বিদায় জানান আদিবাসীরা। আর তারপর রাতভর খোলা আকাশের নীচে চলে নাচ-গান।
নববর্ষের সকালে শুশুনিয়া পাহাড়ের কোল বেয়ে যখন নামে নতুন সূর্যের আলো, সঙ্গে থাকে একরাশ আশা আর স্বপ্নের কিরণ, তখন শিউলিবোনার প্রান্তরে আদিবাসীরা ধামসা মাদলের দ্রিমি দ্রিমি বোল আর নৃত্যছন্দে স্বাগত জানান নতুন বছরকে।