সুনামিতে ভেসে যেতেন অনিল কুম্বলে, কপালজোরে বেঁচে যান! ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন
ভারতীয় দলের প্রাক্তন স্পিনার অনিল কুম্বলে একটি চ্যাট শো-তে বসেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে। ক্রিকেট নিয়ে কথা হচ্ছিল। হঠাত্ করেই ২০০৪-এর ভয়াবহ সুনামির কথা উঠল। কুন্বলে জানালেন, কীভাবে তিনি ও তাঁর পরিবার সেদিন বেঁচে ফিরেছিলেন।
কুম্বলে বললেন, ''আমি, আমার স্ত্রী ও ১০ মাসের ছেলে চেন্নাই গিয়েছিলাম ছুটি কাটাতে। সমু্দ্রের ধারে একটি হোটেলে ছিলাম আমরা। দারুন মজা করেছিলাম কদিন। যেদিন সুনামি হল সেদিনই আমাদের বেঙ্গালুরুতে ফেরার কথা। সকাল ১১.৩০-এ আমাদের ফ্লাইট ছিল। আসলে গাড়ি করে চেন্নাই গেলে ছঘণ্টা মতো লাগত। আমার ছেলে তখন ছোট। তাই আমরা অতটা সময় গাড়িতে থাকতে চাইনি।''
"ফেরার দিন খুব ভোরে আমার স্ত্রী উঠে পড়েছিল। ও আমাকে ডেকে বলল, কেমন একটা অস্বস্তি হচ্ছে ওর। মনটা ঠিক ভাল নেই। আমরা কফি পান করলাম একসঙ্গে। সমু্দ্রের দিকে দেখলাম। সব কিছু শান্ত। তবে আকাশ মেঘলা ছিল। তখনও এত বড় বিপর্যয়েয়র কোনও আভাস পাইনি। আমরা এর পর চলে গেলাম ব্রেকফাস্ট টেবিলে। ওখানে গিয়ে দেখলাম, কয়েকজন যুবক-যুবতী পুল ছেড়ে দৌড়চ্ছে। সকাল ৮.৩০ নাগাদ হবে।"
"আমরা এর পর ৯.৩০ টা নাগাদ চেক-আউট করে গাড়িতে উঠে এয়ারপোর্টের দিকে রওনা হলাম। হোটেল থেকে কিছুটা এগিয়ে একটা ব্রিজ ছিল। ওখানে এসে দেখলাম সমুদ্রের জলের স্তর ব্রিজের উপরে উঠে এসেছে। তার পর দেখলাম কিছু লোক ও মহিলা দৌড়চ্ছে। ওদের হাতে ব্যাগ, বাসনপত্র। খুব বিপদ হলে মানুষ যেমন হাতের সামনে যা পায় তাই নিয়ে বাড়ি ছাড়ে, ওদের অবস্থাও সেরকই দেখাল।"
"আমার ড্রাইভারের ফোনে বারবার কল আসছিল। ড্রাইভার বলছিল, ওর বাড়ির সামনে নাকি হু হু করে সমুদ্রের জল ঢুকছে। আমরা বিশ্বাস করিনি। কারণ একটুও বৃষ্টি হয়নি। সুনামির কথা তখনো শুনিনি কোথাও। জল আসবে কোথা থেকে! ড্রাইভারকে বললাম সতর্ক হয়ে গাড়ি চালাতে। এর পর আমরা ফ্লাইট ধরে বেঙ্গালুরু ফিরলাম। বাড়িতে এসে টিভি খুলে দেখি সুনামির ভয়াবহতা। চেন্নাইয়ের উপকূল অঞ্চলে সেদিন থাকলে আমরাও হয়তো জলের তোরে ভেসে যেতাম। কপালজোরে বেঁচেছি।"