Sarada Devi: “তোর মোটা ভাত-কাপড়ের কোনদিন কষ্ট হবে না”, ভক্তদের কাছে আজও তিনিই `অন্নপূর্ণা`
আজ অন্নপূর্ণা পুজো। অন্ন কথার অর্থ ধান, আর পূর্ণা অর্থাৎ পূর্ণ। অর্থাত্ যিনি অন্নদাত্রী। কথিত আছে, যে বাড়িতে মা অন্নপূর্ণার আশীর্বাদ থাকে, সেখানে কোনো ধরনের অভাব হয় না। মা অন্নপূর্ণার কৃপায় খাদ্যশস্যের ভাণ্ডার পূর্ণ থাকে। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনেকেই এখনও ভক্তিভরে দেবী অন্নপূর্ণার পূজা করেন।
আচার্য সুকুমার সেনের মতে, দেবী অন্নপূর্ণা গ্রিক ও রোমান দেবী ‘অন্নোনা’র রূপান্তর। এই শস্যদেবী আসলে শাকম্ভরীর মতো একান্তই ভারতীয় দেবী, যার উৎস রয়েছে হরপ্পা সভ্যতায়। এটি প্রাচীন পূজা যা পরবর্তীকালে কাশীতে অনুপ্রবেশ করেছিল প্রবাসী বাঙালিদের হাত ধরেই।
তবে ভক্তদের কাছে আজও অন্নপূর্ণা মা সারদা। মায়ের অপার মাতৃস্নেহে কত জন কত ভাবে ধন্য হয়েছিলেন তার অজস্র ঘটনা ছড়িয়ে রয়েছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন, এক কথায় সবার কাছেই হয়ে উঠেছেন একান্ত আপনজন। তিনি সকলের মা।
এক বার জয়রামবাটিতে দুর্ভিক্ষের সময় ক্ষুধার্তদের গরম খিচুড়ি বিতরণ করার সময় অন্নপূর্ণার রূপটিই যেন ফুটে উঠেছিল। স্বামী সারদানন্দ মহারাজের লেখা থেকে জানা যায়, 'গরম খিচুড়ি খাইতে লোকের কষ্ট হইত বলিয়া না দুই হাতে পাখার বাতাস করিয়া তাহা ঠাণ্ডা করিয়া দিতেন।'
গম্ভীরানন্দ মহারাজের লেখা 'শ্রী মা সারদা দেবী' গ্রন্থে তিনি বলেছেন, মা সর্বদাই ছেলেদের আগে খাইয়ে দিয়ে তারপর নিজে বসতেন। মা বলতেন ছেলেরা আগে না খাইলে তা গলা দিয়ে নিচে নামে না, যায় না। তাই ছেলেরা খেতে বসলে দরজায় গোড়ায় ছেলেদের খাবার খাওয়া দেখতে থাকলেন মা।
মায়ের এই ছবিটিকেই এখনও অন্নপূর্ণা মানা হয়। স্বামী সারদেশানন্দজী একটি লেখায় বলেছিলেন, 'মা বসিয়াছেন এমনই ভাবে,দেখিলে মনে হয় যেন মা লক্ষ্মী স্বয়ং ভাগ্যবান গৃহস্থের দরজায় উপবিষ্টা,পাশেই ধান্যপূর্ণ মরাই শোভা বিস্তার করিয়া তাঁহার শুভাগমন সূচনা করিতেছে।' ভক্তরা মনে করেন, এই ছবি রান্নাঘরে বা খাওয়ার ঘরে থাকলে অন্নর অভাব হয় না।