Ostrich Egg: ৫০ হাজার বছর আগেও ছিল সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং! যোগাযোগ তৈরি হত উটপাখির ডিমে
আধুনিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সারা বিশ্বকে লহমায় মানুষের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। প্রযুক্তির উৎকর্ষ এই যোগাযোগকে করেছে সহজ ও সাবলীল। কিন্তু এ তো হালের সময়ের কথা। আশ্চর্যের হল, আজ থেকে প্রায় ৫০ হাজার বছর আগেও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের অস্তিত্ব ছিল। তবে সেটা প্রযুক্তিনির্ভর নয়, ছিল প্রকৃতিকেন্দ্রিক। এর মাধ্যমে হাজার মাইল দূরে থাকা ব্যক্তির সঙ্গেও যোগাযোগ করা যেত!
সম্প্রতি জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর দ্য সায়েন্স অব হিউম্যান হিস্ট্রির একদল গবেষক জানান, প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের ৩০টির বেশি জায়গা থেকে দেড় হাজারের বেশি এক ধরনের মালার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
গবেষণায় জানা গিয়েছে, এই সব মালা অস্ট্রিচের ডিমের খোসা থেকে তৈরি হয়েছিল। এগুলিকে মানুষের ব্যবহৃত অন্যতম প্রাচীন অলংকার হিসেবে ধরা হত। তবে ক্রমে জানা যায়, আফ্রিকা জুড়ে সন্ধান পাওয়া এসব মালা শুধু অলংকার নয়, ওই অঞ্চলের মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যমও।
উটপাখির ডিমের খোসার তৈরি এসব মালা আফ্রিকার শিকারিরা ব্যবহার করত। এর মাধ্যমে তাঁরা পরস্পরকে সাংকেতিক বার্তা পাঠাতেন। এ বিষয়টি মাথায় রেখে গবেষকেরা বলছেন, ৫০ হাজার বছর আগেও এসব মালা ব্যবহার করে হাজার মাইল দূরে সাংকেতিক বার্তা পাঠানো হত। যা খুবই বিস্ময়ের!
এখন যেমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা একে অপরকে বার্তা পাঠাই, ঠিক তেমনই প্রাচীন কালে এগুলি ব্যবহার করে দূরে থাকা মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় বার্তা পাঠানো হত। ওই সময়ে আফ্রিকার পূর্ব ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম উপায় ছিল এই সব মালার আদানপ্রদানই।
বিশ্বখ্যাত নেচার জার্নালে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর দ্য সায়েন্স অব হিউম্যান হিস্ট্রির গবেষক জেনিফার মিলার এ বিষয়ে বলেন, 'সন্ধান পাওয়া মালাগুলি এক সময়ে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে যোগাযোগ স্থাপনের ইঙ্গিত দেয় আমাদের। সাংকেতিক এই যোগাযোগব্যবস্থার মাধ্যমে এক বিশাল এলাকার মানুষ নিজেদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করতেন। যা খুবই চমকপ্রদ!'