রোহিঙ্গাদের নির্জন, বন্যাপ্রবণ দ্বীপে পাঠাবে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের কক্সবাজারে উদ্বাস্তুদের ক্যাম্পে বাস করেন মায়ানমার থেকে আসা প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা। অল্প স্থানের মধ্যে প্রচুর সংখ্যক মানুষ থাকার সমস্যা মেটাতে তাই উদ্যোগী হল বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের মূল স্থলভাগ থেকে বেশ কয়েক ঘণ্টা দূরে বঙ্গোপসাগরের বুকে জনমানবশুন্য 'ভাসান চর' দ্বীপ। আর সেখানেই রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরিত করার বিষয়ে পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ সরকার। তবে, ভাসান চর বন্যাপ্রবণ দ্বীপ হওয়ায় এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন বাংলাদেশের মানবাধিকার কর্মীরা।
বাংলাদেশের সরকারি আধিকারিকদের মতে, এমনিতেই বাংলাদেশের জনঘনত্ব যথেষ্টই বেশি। গোদের উপর বিষফোঁড়া রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের এই বিপুল সংখ্যক মানুষ। কক্সবাজারের রিফিউজি ক্যাম্পে জনঘনত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকায় কমছে জীবনযাত্রার মান। ফলে, এর স্থায়ী প্রতিকার হিসাবে ভাসান চরে উদ্বাস্তুদের জায়গা করে দিতে চাইছে বাংলাদেশ।
কক্সবাজারে উদ্বাস্তু ক্যাম্পের ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের প্রধান মেহবুব আলম তালুকার বলেন, "ইতিমধ্যেই আমাদের আধিকারিকরা স্থানান্তরিত হতে ইচ্ছুক উদ্বাস্তুদের তালিকা বানিয়ে ফেলেছন।" তিনি আরও জানান, শনিবার পর্যন্ত প্রায় ৭,০০০ উদ্বাস্তু ইতিমধ্যেই ভাসান চরে স্থানান্তরিত হওয়ার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছেন।
তবে, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করেছেন উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের এক বড় অংশ। তাঁদের মতে এভাবে একটি বন্যাপ্রবণ, জনমানবহীন দ্বীপে জীবনধারণ আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবি ও মানবাধিকার কর্মীরাও।
তবে বন্যা-বিপর্যয়ের আশঙ্কা অমূলক বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের দূর্যোগ মোকাবিলা মন্ত্রকের সচিব শাহ কামাল। তিনি জানান, এর মধ্যেই বাংলাদেশ সরকার ভাসান চরে বন্যা রোধে সক্ষম বিশেষ বাঁধ তৈরী করেছে। তৈরী হয়েছে প্রচুর সংখ্যক বাড়িও। তিনি আরও বলেন, "কাউকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর-জবরদস্তি করে স্থানান্তরিত করা হবে না।" তাছাড়া, জীবনধারণের সুবিধার জন্য খাদ্য, পেশা, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিত্সারও ব্যবস্থা থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।