ঈদকে সামনে রেখে লকডাউন উঠল বাংলাদেশে, রেকর্ড সংক্রমণের আশঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা
নিজস্ব প্রতিবেদন: থার্ড ওয়েভের আশঙ্কার মাঝেই লকডাউন শিথিল করল বাংলাদেশ। কারণ সেখানে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব কোরবানির ঈদ পালিত হবে। সেই উপলক্ষে উৎসবকে সামনে রেখে আজ (বৃহস্পতি) থেকে সারাদেশে যানবাহন ও দোকানপাট-শপিংমল খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। কোনও ধরনের বিধিনিষেধ ছাড়াই যানবাহন ও দোকানপাট চলবে। এই শিথিলতা বজায় থাকবে ২৩ জুলাই পর্যন্ত। ২০ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত চলবে উৎসব। এর পরের দিন থেকেই ফের লকডাউন জারি করা হবে বলে জানান হয়েছে।
কিন্তু, সংক্রমণের হার বাড়তে এই ৭ দিনই যথেষ্ট বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ওপার বাংলা প্রশাসনের মতে ঈদ উদযাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যকর্ম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রায় ১ কোটি মানুষ এই উৎসবে আত্মীয় স্বজনের বাড়ি যায়। রাস্তায় বের হন। পরিবার বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করেন। একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়াও করেন। এই পরিস্থিতি বিরাটাকারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য একেবারে আদর্শ বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞের দল।
করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যবে থেকে ঊর্ধ্বমুখী, সেদিন থেকেই বাংলাদেশে লকডাউন জারি করা হয়। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সমস্তটাই বন্ধ ছিল ওপার বাংলায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
সোমবারের তথ্য অনুযায়ী আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪ হাজারের বেশি। অন্যদিকে, নতুন করে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ১৬ হাজার। বিশেষজ্ঞদের মতে মৃতের আসল সংখ্যা আরও বেশি।
বাংলাদেশে কোভিড পরিচালনা করার কমিটির প্রধান মহম্মদ শহীদুল্লাহ জানিয়েছেন, তার কমিটির সদস্যরা লকডাউন তুলে নেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। সংক্রমণের ক্রমহ্রাসমান প্রবণতা না হওয়া পর্যন্ত এই কঠোর লকডাউন চালিয়ে যাওয়া উচিত।
অন্যদিকে, ভারত থেকে বাংলাদেশে টিকা আমদানি বন্ধ হওয়ার পর ব্যহত হয়েছে টিকাকরণ। এরপর চিন ও আমেরিকা থেকে মোট ৪.৫ মিলিয়ন ডোজ আসার পর পুনরায় শুরু হতে চলেছে টিকাকরণ কর্মসূচি। তাই মনে করা হচ্ছে ৪.২ মিলিয়ন মানুষকে দ্রুত টিকা দেওয়া সম্ভব হবে।
কিন্তু তার আগেই এই লকডাউন তুলে নেওয়াকে মোটে ভাল চোখে দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। যেকোনও মুহূর্তে বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।