বিষ দিয়ে ১০০ পাখি মারলেন চালকলের মালিক! বিচারের দাবিতে সোচ্চার বাংলাদেশের স্কুল পড়ুয়া
মানুষের স্বার্থের সঙ্গে জীবজগতের সংঘাত। তার জেরেই প্রাণ দিতে হল শতাধিক পাখিকে। বাংলাদেশের লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট রোডের রাইস মিলের সামনে মিলল স্তূপাকৃত নিথর পাখির দেহ। পাখিগুলি হত্যা করার অভিযোগ স্থানীয় চালকল মালিক আবুল কাশেম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
স্থানীয় মানুষ জানান, লালমনিরহাটের সুকান দিঘি গ্রামের আবুল কাশেমের উঠোনে ধান শুকোতে দেওয়া হয়েছিল। সেই ধানই এসে খেয়ে যাচ্ছিল পাখিরা। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওই ব্যক্তি। বেশ কিছুটা ধানে বিষ মিশিয়ে চাতালের চার দিকে ছড়িয়ে দেন তিনি। সেই ধান খেয়েই প্রায় ১০০-এরও বেশি পাখির বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়।
এর পর সেই পাখিগুলির দেহ জড়ো করে ফেলে দেন ওই ব্যক্তি। এক সঙ্গে এত পাখির দেহ পড়ে থাকতে দেখে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। এর পড়েই মৃত 'পাখির হত্যার বিচার চাই' দাবি তুলে পোস্টার দেন পশুপ্রেমীরা। সেই পোস্টার-সহ ছবি তুলে মহবুব হাসান নামের এক পশুপ্রেমী ফেসবুকে পোস্ট করেন। মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় সেই ছবি।
পাখিদের নির্মম হত্যার প্রতিবাদে সামিল হয় পশুপ্রেমী ও স্কুল পড়ুয়ারা। পাখির দেহের সামনে স্কুলড্রেস পরে প্রতিবাদে সোচ্চার হয় ছাত্রছাত্রীরা। অবশেষে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। পাখিগুলির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিস।
তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার বা আটক করেনি পুলিস। তবে, কে বা কারা এমন করল, তার তদন্তে নেমেছে প্রশাসন। তবে, স্থানীয়দের দাবি, চাতাল মালিক আবুল কাশেমই গত ২-৩ দিন ধরে নির্বিচারে বিষ দিয়ে পাখি মেরে চলেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
পুলিসি সূত্রে খবর, শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃত পাখির তালিকায় রয়েছে ২৯টি বাবুই, ২৪টি ঘুঘু, ২টি সারস, ১টি কোয়েল ও ১টি পায়রা। এ ছাড়াও মৃত্যু হয়েছে বহু পাখির। বিচারের দাবিতে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে বাংলাদেশের পশুপ্রেমী সংগঠনগুলি।