Musical Bond: সুরেলা গুরু-শিষ্যাকে বেঁধে দিল এই একটি সুরের দিন!

Soumitra Sen Sat, 22 Jan 2022-2:35 pm,

দিলীপকুমার রায় আর উমা বসু; মন্টু আর হাসি (দিলীপ কুমার রায়ের ডাকনাম মন্টু, উমা বসুর ডাকনাম হাসি)। ভারতীয় সঙ্গীতজগতের দুই অবিস্মরণীয় নাম, ভারতীয় সঙ্গীতের এক অবিস্মরণীয় জুটি। আজই, এই ২২ জানুয়ারিই এই দুই মহাপ্রতিভার জন্ম! সেই হিসেবে এই দিনটি ভারতীয় সঙ্গীতের ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দিন। 

দিলীপকুমার রায় ১৮৯৭ সালের ২২ জানুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন। এক কথায় তাঁর পরিচয়, তিনি একই সঙ্গে এক বিরল প্রতিভার সঙ্গীতজ্ঞ, সঙ্গীতালোচক, গীতরচয়িতা, সুরকার এবং গায়ক। তাঁর পিতা ছিলেন বিখ্যাত নাট্যকার ও গীতিকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায়।

 

দিলীপ কুমার তাঁর সঙ্গীতশিক্ষা লাভ করেছিলেন সুরেন্দ্রনাথ মজুমদার, রাধিকাপ্রসাদ গোস্বামী ও অচ্ছন বাঈ-এর কাছে। পাশ্চাত্য সঙ্গীতেও তাঁর বিশেষ অধিকার ছিল। সব চেয়ে বড় কথা, সঙ্গীত তো তাঁর রক্তে, কেননা তাঁর বাবা স্বয়ং দ্বিজেন্দ্রলাল রায়!

১৯২৮ সালে দিলীপ কুমার সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। সারা জীবন সন্ন্যাসী থেকে সঙ্গীত ও সাহিত্য-সাধনায় নিয়োজিত থাকেন।

সুর রচনা ও গায়ন উভয় ক্ষেত্রেই দিলীপ কুমার একেবারে নিজস্ব ও পৃথক এক ধাঁচ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সবাই সেটিকে 'দিলীপী ঢং' বলে অভিহিত করতেন। সঙ্গীত বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচনা করে তিনি বাংলা সঙ্গীতালোচনা-সাহিত্যে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সঙ্গীত বিষয়ে তার মতবিনিময় ঐতিহাসিক খ্যাতি লাভ করেছে। 

অতুলপ্রসাদ সেন ও কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গেও দিলীপকুমার রায়ের বিশেষ হৃদ্যতা ছিল। প্রথম দিকে নজরুলের সঙ্গীতরচনাকে কলকাতার সুধীমহলে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে দিলীপকুমারের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। নজরুল সম্পর্কে তাঁর স্মৃতিচারণ নজরুল সঙ্গীতালোচনার ভিত্তি নির্মাণ করে। নজরুলের গানের স্বরলিপি প্রকাশের ক্ষেত্রেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে গেছেন।

উল্টো দিকে, উমা বসু ওরফে হাসি ১৯২১ সালের ২২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। বাংলার সঙ্গীত জগতের এক অবিস্মরণীয় সঙ্গীতশিল্পী উমা। তিনি আচার্য দিলীপকুমার রায়ের শিষ্যা হিসেবেই বিখ্যাত। পাশাপাশি, ভীষ্ম‌দেব চ‌ট্টোপাধ্যায়ও একদা তাঁর গুরু ছিলেন। দিলীপকুমারের ব্যবস্থাপনাতেই ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে গান শিখে উমার কণ্ঠ আরও পরিশীলিত হয়।

দিলীপ কুমার রায়ের সংস্পর্শেই উমার সঙ্গীতপ্রতিভার পূৰ্ণমাত্রায় বিকাশ। হায়দরাবাদের স্যার আকবর হায়দরির সভাকবি আমজদের গজল গেয়ে তিনি দক্ষিণ ভারতে প্ৰভূত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সমগ্ৰ ভারতে এক অনন্যসাধারণ কণ্ঠশিল্পীরূপে পরিচিত হন। ১৩ বছর বয়সে গাওয়া রবীন্দ্রনাথের দুটি গান দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তত্ত্বাবধানে রেকর্ড করা। দিলীপকুমারের রচিত ও সুরারোপিত গানগুলি শিখে তা প্রায় সবই রেকর্ড করেছেন তিনি। স্বয়ং মহাত্মা গান্ধী উমার সঙ্গীতে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে 'নাইটিঙ্গেল অব বেঙ্গল' আখ্যা দেন। 

 

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link