সামাজিক ধ্যানধারণা আস্তাকুঁড়োয় ফেলে ন্যাড়া মাথাতে বধূ বেশে ক্যানসার আক্রান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদন: ক্যানসারের চিকিত্সায় কেমোথেরাপিতে উঠে দিয়েছে মাথার চুল। শরীর ভেঙেছে, তবে মনে ভাঙন ধরেনি। ক্যানসারের সঙ্গে চিহ্ন শরীরে নেই নব বধূ সাজলেন বৈষ্ণবী পুভানেন্দ্রন। ইনস্টাগ্রামে নভি ইন্দ্রন পিল্লাই নামে পরিচিত এই তরুণী।
'ব্রাইডাল' ফটোশ্যুটে সৌন্দর্যের পরাকাষ্ঠায় পৌঁছতে চান সব মহিলাই। তবে ক্যানসারের লড়াইয়ে উঠে গিয়েছে বৈষ্ণবীর চুল। মালয়েশিয়ার নাগরিক ভারতীয় বংশোদ্ভূত বৈষ্ণবীর ন্যাড়া মাথায় সাহসী ছবিই ভাইরাল হয়েছে নেট দুনিয়ায়।
কিন্তু সমাজের বেঁধে দেওয়ার সৌন্দর্যের মাপকাটিকে তোয়াক্কা করেননি বৈষ্ণবী। ন্যাড়া মাথাতেই বধূ বেশে ছবি তুলেছেন তরুণী।
স্তন ক্যানসার হয়েছিল বৈষ্ণবী। তিনি লিখেছেন, ''ক্যানসারের চিকিত্সায় অনেক কিছু হারাতে হয়। খোয়া যায় সৌন্দর্য। ছিনিয়ে নেয় আত্মবিশ্বাস।
তিনি আরও লিখেছেন, ছোটবেলায় আমরা ভাবি বিয়ের দিনটায় বধূ রূপে কেমন দেখতে লাগবে। কিন্তু ক্যানসারের জন্য স্বপ্নগুলি অধরা থেকে যায়। বহু ক্যানসার আক্রান্ত বিয়ের দিন পিছিয়ে দেন বা বাতিল করে দেন।
ক্যানসার থেকে পাঁচবছর আগে মুক্তি পেয়েছিলেন বৈষ্ণবী। কিন্তু ফের যকৃত্ ও মেরুদণ্ড ধরা পড়ে ক্যানসার। তিনি লিখেছেন, ২০১৮ সালে ডিসেম্বরে আবারও ক্যানসার থেকে মুক্তি পাই।
ক্যানসার আক্রান্ত জীবনে ফিরে আসার সাহস যোগাচ্ছেন বৈষ্ণবী। তাঁর কথায়, ''আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, একদিন ভালবাসার মানুষকে বিয়ে করব। স্বপ্নে দেখেছিলাম, বধূ হিসেবে কেমন লাগবে। কিন্তু চুল হারানোটা ছিল সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার''।
মনে হয়েছিল, বধূ হিসেবে তাঁকে মানাবে না। কিন্তু পরচুলার আশ্রয় নেননি বৈষ্ণবী। ''ভাবলাম, নিজেকে যেমন লাগছে, সেভাবেই ছবি তুলব''।
লাল শাড়ি, গা ভর্তি গয়না ও হাতে মেহেন্দি পরে ফটোশ্যুট করেছেন বৈষ্ণবী। তাঁর বার্তা, ক্যানসার জীবনকে প্রতিহত করলেও আমাদের নিয়ন্ত্রণ যেন না করে।
তবে মেক আপ শিল্পীকেও বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। কেমোর পর ভ্রু উঠে গিয়েছে বৈষ্ণবীর। সেটা নকল তৈরি করতে হয়েছে। একইসঙ্গে ন্যাড়া মাথার সঙ্গে মানানসই গয়নাগাটিও বাছতে হয়েছে মেকশিল্পীকে।
বৈষ্ণবীর ফটো ভাইরাল হতেই কুর্নিশ করছেন সকলেই। মানছেন, মেয়ের সাহস আছে। কেউ লিখেছেন, আপনাকে এভাবেই সুন্দর লাগছে।