Buddhadeb Bhattacharya: `পুড়ে যায় জীবন নশ্বর....`, ঝরা সময়ের বুদ্ধ-উচ্চারণ!
প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যI ৮০ বছর বয়সে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যI আজ সকাল ৮টা ২০-তে প্রয়াত হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীরI
পাম অ্যাভিনিউয়ের ২ কামরার ফ্ল্যাটটা ছিল তাঁর বড়ই প্রিয়। সেই বাড়ি ছেড়ে কিছুতেই থাকতে চাইতেন না বুদ্ধবাবু। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে, অস্থির হয়ে উঠতেন বাড়িতে ফেরার জন্য।
ক্ষমতায় থাকার সময়ে যে বুদ্ধদেব সমালোচনায় বিদ্ধ হতেন বারবার। সেই তিনিই হয়ে উঠেছেন বাংলার বর্তমান মসীহা! একমাথা সাদা চুল, ধবধবে সাদা ধুতি, ফতুয়ার কালো দাগহীন বিরাজে সেই বুদ্ধই।
পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। স্বপ্ন দেখেছিলেন বেকার যুব সমাজদের চাকরি দেওয়ার। সেই লক্ষ্যই কি কাল হল?
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ২০০৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই নতুন উদ্যোগ শুরু হয়। টাটা শিল্পগোষ্ঠী রাজ্যে কর্মসংস্থানের জন্য এগিয়ে আসে। সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা তৈরির প্রস্তাব আনা হয়। রীতিমতো হইচই শুরু হয়ে যায়।
অথচ দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে শুরু করে মমতাময় বিরোধিতা অস্ত্রে বারবার ফালাফালা হয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাপসী মালিক ধর্ষণ থেকে বারাসতের রাজীব দাস হত্যাকাণ্ড! রাজ্যের সমস্ত খারাপের নেপথ্যে বিদ্ধ হতে হয়েছে বুদ্ধদেবকে।
লাল পতাকায় মুড়ে শববাহী শকটে শায়িত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নশ্বর দেহ। আর সেই শকটের পিছনে হাঁটতে দেখা গেল অগনিত বুদ্ধ অনুরাগী থেকে বাম নেতা-কর্মী-সমর্থককে। প্রিয় নেতাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেল অনেককেই।
বুদ্ধদেব অসুস্থ হওয়ার পরেও বামেরা তাঁকে ছাড়েননি। তিনিই ছিলেন শেষ সম্রাটের মতো। জনগণের কাছে, পার্টির উচ্চকোটির কাছে যাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল অপরিসীম।
দ্ধদেব তো শুধু রাজনীতিবিদ নন। তিনি সংস্কৃতিমনস্ক, তিনি কবি, তিনি নাট্যকার। বরাবর তাঁর একটা অন্যরকম মনোভাবনা পাশাপাশি বয়ে চলেছিল। রাজনীতিচর্চার পাশাপাশি সাহিত্য় ও মননের নিবিড় চর্চাও করে গিয়েছেন। এর সাম্প্রতিকতম দৃষ্টান্ত সম্ভবত 'স্বর্গের নীচে মহাবিশৃঙ্খলা' বইটি।
গণমুখী জনচর্চিত রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি লেখার-ভাবার-মতপ্রকাশের জন্য সমান্তরাল একটা 'মন'কে অক্ষুব্ধ ভাবে বাঁচিয়ে রাখার এই দৃষ্টান্ত শেষ কয়েক দশকে বাংলায় খুব বেশি দেখেননি সাধারণ মানুষ। বুদ্ধদেব সেই বিরলের মধ্যে ঢুকে পড়েছেন।