Burdwan BDO pre-wedding ceremony: `ভিডিও সাহেব`কে আইবুড়ো ভাত, `মায়ের বয়সী` তৃণমূল নেত্রীকে পা ছুঁয়ে প্রণাম বিডিও-র!
পার্থ চৌধুরী: 'ভিডিও সাহেব'কে আইবুড়ো ভাত খাওয়ালেন তৃণমূল কংগ্রেসের জাঁদরেল নেত্রী। গদগদ বিডিও নেত্রীর পা ছুঁয়ে আশীর্বাদও নিলেন। নেত্রীর সঙ্গে ছিলেন আরেক বিতর্কিত তরুণ 'তুর্কী' নেতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় আইবুড়ো ভাতের ছবি ভাইরাল। আর ছবি ভাইরাল হতেই এই ঘটনা কতদূর নীতিসম্মত এবং কতটা রুচিসম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান ১ নম্বর ব্লকের বিডিও রজনীশ কুমার যাদব। তরুণ এই আধিকারিক শিগগির-ই বাঁধা পড়বেন সাতপাকের বন্ধনে। তাই তড়িঘড়ি অফিস শেষে তাঁর জন্য আয়োজন করা হয় এলাহি ভোজের। প্রথমে ফুল মালা চন্দনে তাঁকে বরণ করা হয়। সঙ্গে ছিল শঙ্খধ্বনিও।
গোটা কর্মকাণ্ড হয়েছে ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদে (বিডিএ) চেয়ারম্যান কাকলি তা গুপ্তের স্নেহের ছায়ায়। উপস্থিত ছিলেন এলাকার দাপুটে নেতা যুব সভাপতি মানস ভট্টাচার্য। এই আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান ঘিরে বিডিও সাহেবের কোনও সংকোচ ছিল না। জড়তাও ছিল না। কাকলি তা বিডিও রজনীশ কুমার যাদবকে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে ও দূর্বা ঘাস মাথায় ছুঁয়ে আর্শীবাদ করতেই তরুণ বিডিও সাহেবকে রীতিমত কাকলি তা-র পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতেও দেখা যায়।
প্রসঙ্গত, বছর তিনেক আগে কোভিড কালে, ২০২১ সালের ১৭ জুন পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায় কৃষি মাণ্ডিতে একটি অনুষ্ঠানে আউশগ্রামের তৎকালীন বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়কে দেখা গিয়েছিল দোর্দণ্ডপ্রতাপ বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে। সেই নিয়ে তখন কম জলঘোলা হয়নি। ব্যাপক বিতর্ক ছড়িয়েছিল।
এখানে যদিও বিডিও রজনীশ কুমার যাদবের 'ডোন্ট কেয়ার, কুছ পরোয়া নেহি' হাবভাব। তিনি মেনুর বিবরণও দিয়েছেন। ভাত, মাছের মাথা দিয়ে ডালের সঙ্গেই বাঙালি থালিতে ছিল নানা ব্যঞ্জন। তিনি জানান, তাঁর অফিসে নয়, সমিতির পাশের ঘরে এই সেলিব্রশন হয়। আর কাকলীদেবী 'মায়ের বয়সী' বলেই পায়ে হাত দিয়েছেন। যদিও এই নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে এক তৃণমূল কর্মী আইবুড়ো ভাতের ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে আবার বিডিওকে 'ভিডিও সাহেব' বলে উল্লেখ করা হয়েছে! যা নিয়ে নেটপাড়ায় হাসির রোল পড়ে গিয়েছ। পাশাপাশি, ছবিতে ধরা পড়েছে আইবুড়ো ভাত ঘিরে আনন্দ উচ্ছ্বাসও।
বিরোধীরা একে 'নজিরবিহীন' বলে আখ্যা দিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন। সরকারি অফিসের মধ্যে এই কাজ করা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও বিপরীত পক্ষ স্বাভাবিকভাবেই 'সেফ' খেলেছেন। তারা সামাজিক প্রথার দোহাই দিয়ে সাফাই গেয়েছেন।