তুমি যে জলে কে তা জানত! বাঁধের জলে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল
কয়েকদিন আগেই গ্রামের রাস্তায় দেখা মিলেছিল তার। ভয়ে কাঁটা হয়ে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকলে নদী বাঁধের কাছে যেতেই চোখের কোণা চিক চিক করে ওঠে ওদের। জলের মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে একটি বাঘ। মহীশূরের এইচ ডি কোট তালুকের এন বেলাথুরু গ্রামে একটি বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। কাবিনী বাঁধে জলের মধ্যে পড়েছিল বাঘটির দেহ। বয়স আনুমানিক ১৪ বছর। তার গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাঘটির শরীরের মাঝের অংশ, পা এবং চোখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চোরাশিকারিদের কাজ বলে মনে করছেন অনেকে।
আবার কারও মতে, জল খেতে নেমে বিদ্যুত্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বাঘটির। তার গায়ে কিছুটা পোড়া দাগ দেখা যাচ্ছে। বাঘটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর কারণ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এদিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বনকর্মী ও পরিবেশবিদরা। এর পিছনে চোরাশিকারিদের হাত রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চোরাশিকার বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের তরফে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। দলে রয়েছে প্রাক্তন সেনা, হোম গার্ডস, কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। বর্ষার সময়ে জঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় টহল দেন তাঁরা।
গত ৩১ জুলাই অর্থাত্ গত মঙ্গলবার মহীশূরের বেলাথুরু গ্রামের কাবিনী বাঁধে জলের মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছিল বাঘটির দেহ।
১৯৭৩ সালে 'প্রজেক্ট টাইগার' চালু করার মাধ্যমে ভারত সরকার জাতীয় প্রাণী তথা বাঘ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। প্রাথমিকভাবে ৯টি ব্যাঘ্র প্রকল্প হয়। বর্তমানে এই প্রকল্পের আওতায় ৫০টি ব্যাঘ্র প্রকল্প রয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২-১৭, এই পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে ৫৫৩টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ২২ শতাংশ বাঘের মৃত্যু হয়েছে চোরাশিকারিদের হাতেই।
চলতি বছরের মার্চ মাসে রাজ্যসভায় একটি পরিসংখ্যান দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মহেশ শর্মা জানান, গত ৫ বছরে যত সংখ্যক বাঘের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ২২.১ শতাংশ বাঘ চোরাশিকারের শিকার, ১৫.৪ শতাংশ বাঘের মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে, বাকি ৬২.৪ শতাংশ বাঘের মৃত্যু হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই।
বাঘের সংখ্যা বাড়াতে নির্দিষ্ট প্রজাতির বার্ষিক বৃদ্ধির হার বাড়াতে হবে বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। প্রাপ্তবয়স্ক প্রজননশীল বাঘিনীর সংখ্যা কমে যাওয়াতেও এক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি তাঁর। তবুও এসবের পর তিনি বলেন, ‘‘অনেক রকমের সমস্যা থাকলেও, ভারতে বাঘের সংখ্যা পরিবেশগতভাবে স্থিতিশীল।’’