তুষার-উত্সারিত আলোয় মুছল নয়ন-অন্ধকার! এশিয়ায় প্রথম দৃষ্টিহীন এভারেস্টে
এশিয়ায় প্রথম দৃষ্টিহীন ব্যক্তি জয় করলেন মাউন্ট এভারেস্ট। Zhang Hong নামের ৪৬ বছর বয়সী চিনের নাগরিক এই পর্বতারোহী নেপালের দিক থেকে মাউন্ট এভারেস্টে ওঠেন। বিশ্বে তিনিই তৃতীয় ভিস্যুয়ালি ইমপেয়ার্ড ব্যক্তি, যিনি এভারেস্ট জয় করলেন।
কী আছে ওই এভারেস্টে? ওই অপার-অশেষ তুষারদেশে? কীসের টানে মানুষ এত-এত প্রতিকূলতা-প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে ছুটে যান? প্রাকৃতিক সৌন্দর্য? তাই-বা কী করে বলা যায় অন্তত Zhang Hong-এর ক্ষেত্রে? তিনি যে দেখতে পান না!
ঝাং অবশ্য বিষয়টিকে আদৌ প্রতিবন্ধকতা বলে মনেই করেন না। তাঁর মনোভাব অত্যন্ত ঋজু। তিনি বলেন, 'আপনি পঙ্গু না, স্বাভাবিক, সেটা কোনো বিষয়ই নয়। আপনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন, নাকি আপনার হাত বা পা নেই, এও কোনো বিষয় নয়। আসল কথা হল, আপনার মনোবল। মনোবল দৃঢ় থাকলে আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন।'
মে মাসের শেষের দিকে ঝাং এভারেস্টে ওঠেন। চিনের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের চংকুয়াং শহরে জন্ম। ২১ বছর বয়সে গ্লুকোমায় অন্ধ হয়ে যান। কিন্তু তার পরেও কী ভাবে তিনি ভাবতে পারলেন যে, এটা সম্ভব?
ঝাং বলছেন তাঁর প্রেরণার কথা। ২০০১ সালেই প্রথম কোনও দৃষ্টিহীন এভারেস্ট জয় করেন। এরিক ওয়েহেনমায়ের (blind American climber Eric Weihenmayer) নামের এই মার্কিন পর্বতারোহীই অনুপ্রাণিত করেন ঝাং-কে। পরে বন্ধু ও পর্বত আরোহণের গাইড কিয়াং জির কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করে দেন ঝাং।
গত এপ্রিলে নেপাল মাউন্ট এভারেস্ট বিদেশিদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। আর দেরি করেন না ঝাং। ঠিক করে নেন, এই মরসুমেই বেরিয়ে পড়বেন। এভারেস্ট আরোহণের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে পরে ঝাং বলেন, ওঠার সময় তিনি খুবই ভয় পাচ্ছিলেন। মাঝেমধ্যে পড়েও যাচ্ছিলেন। তবে সব প্রতিকূলতা পার হয়েই এগিয়ে যেতে পারেন। তখনও তাঁর মনে কাজ করছে এরিকের প্রেরণা। এই Eric Weihenmayer-ই পৃথিবীর ইতিহাসে বিপ্লব ঘটালেন। তিনি অন্তত এটা মানুষকে বোঝাতে পারলেন, দৃষ্টি না থাকলেও পাহাড়ে চড়া যায়।