`চাচার গড়ে এবার চিত্ত`, চাচা ম্যাজিকে ভর করেই খড়গপুরে পাশার দান উল্টাতে চাইছে বাম-কংগ্রেস
মৌমিতা চক্রবর্তী: রাত পোহালেই খড়গপুর সদরে বিধানসভা উপনির্বাচন। বিধানসভার উপনির্বাচন ঘিরে যুযুধান সব পক্ষ। তৃণমূল, বিজেপি, জোটপ্রার্থী- উপনির্বাচনে এই ত্রিমুখী লড়াইকে ঘিরে সরগরম রেলশহর।
জোটপ্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডল বলেন, "জনগণের চোখমুখে এবার বদলের সাড়া দেখছি। ইশারা পাচ্ছি। মানুষ বদল চাইছে।" তিনি আরও বলেন, "চাচার হেরে যাওয়া খড়্গপুরবাসী ভালোভাবে নেয়নি। চাচার স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানিয়েই মানুষ এবার ভোট দেবে।" অভিযোগ করেন, "তৃণমূল-বিজেপি সমঝোতা চলছে। ওরা মাংস, টাকা বিলোচ্ছে। বেশ কিছু ওয়ার্ডে আজও হ্যান্ডবিল ও টাকা বিলির অভিযোগ পেয়েছি। সন্ত্রাস চলছে।" তবে 'চাচার গড়ে' তাঁরাই জিতবেন বলে আশাবাদী জোটপ্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডল।
'চাচা' নামেই পরিচিত ছিলেন খড়গ্পুরের ১০ বারের কংগ্রেস বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহন পাল। শেষবার বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআইএমের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে লড়লেও সেবার বিজেপির কাছে পরাজিত হতে হয়েছিল চাচাকে। চাচা নেই। কিন্তু এবারও উপনির্বাচনে চাচাকে সামনে রেখেই জোটপ্রার্থী দিয়েছে সিপিএম-কংগ্রেস।
অন্যদিকে খড়্গপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে খড়্গপুর সদরের তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার তোপ দেগেছেন, "গত ২ বার মানুষ দিলীপ ঘোষকে ভোট দিয়েছিলেন। কোনও কাজ করেননি। এই ২ বছরে অন্তত ১০০ বার বিধানসভায় বলার সুযোগ পেয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু, একবারের জন্যও খড়গপুরের কথা বলেননি। উনি ঝাড়গ্রামে থাকেন। বাইরের মানুষ। একবার ফ্লুকে জিতেছেন। আরেকবার মোদী হাওয়ায়। উনি খড়গপুরের মানুষের মনই বোঝেন না।"
ভোটের আগের দিন সকালে প্রদীপ সরকারকে দেখা যায় খেলার মাঠে ছক্কা হাঁকাতে। ঠিক সেই মুডেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি বলেন, "সব বুথে আধাসেনা থাকুক, কিন্তু এবার মোদী এলেও খড়গপুরে দিলীপ ঘোষকে কেউ বাঁচাতে পারবেন না।"
তাঁর অভিযোগ, খড়্গপুরে দিলীপ ঘোষের প্রার্থী একজন 'ডুপ্লিকেট প্রার্থী'। প্রসঙ্গত, উপনির্বাচনে খড়গপুর সদরে প্রেমচাঁদ ঝা-কে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। কিন্তু দিলীপ ঘোষের মতোই বিজেপি প্রার্থীকেও আমল দিতে নারাজ তৃণমূল প্রার্থী।
এদিকে দিলীপ ঘোষ এদিন বলেন, "গত ৮ বছর ধরে এরা যে কিছু করেনি, তা নিজেদের ইশেতাহারেই প্রমাণ করে দিয়েছে তৃণমূল। মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে এরা। অন্যদিকে সাংগঠনিক জোর, আদর্শ ও স্বচ্ছ নেতৃত্বে ফলে বিজেপির উপর মানুষের আস্থা বেড়েছে। বাংলায় লাগাতার ভোট বেড়েছে বিজেপির।"
ভোটে সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ উঠতেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি হুঁশিয়ারি দেন, "নির্বাচনে কাল সন্ত্রাস হলে তার প্রতিরোধ হবে। আমাদের বিজেপির সেই শক্তি আছে। যেমন পরিস্থিতি হবে তেমন দাওয়াই হবে। দিলীপ ঘোষ কাউকে ভয় পায় না, যারা অন্যায় করে তারা ভয় পায়।" তৃণমূল মানেই ছোট মনের মানুষ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
দিলীপ ঘোষ এদিন অভিযোগ করেন, ," তৃণমূল প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে ভয় দেখিয়ে ভোট করাতে চাইছে। বাংলায় ভোটের সময় এলেই মানুষ প্রশ্ন করেন ভোট দিতে পারব তো? কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে তো?"
যদিও অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, "রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা বিলোচ্ছে বিজেপির লোকেরা। দু-একজন ধরাও পড়েছে। বাইরে থেকে লোক এনেছে। রাতে এসে ক্লাব ও আখড়াগুলোকে টাকা দিয়েই পালিয়ে যাচ্ছে।"