দিল্লিবাসীকে এ ভাবেই প্রাণ ভরে তৃষ্ণা মেটান ‘মটকাম্যান’
যৌবনে নটরাজন ভাগ্যের খোঁজে পাড়ি দিয়েছিলেন লন্ডনে। প্রায় চল্লিশ বছর সেখানে জীবিকা নির্বাহ করার পর হঠাৎই দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তিনি। সেই দুঃস্বপ্ন অতিক্রম করে এক সময় দেশে ফিরে আসার মনস্থির করেন আলাগারাথানম নটরাজন।
দেশে ফিরে আসার পর বেশ কিছুদিন অনাথ শিশুদের সাথে কাজ করেন নটরাজন। চাঁদনী চক এলাকার দুঃস্থদের জন্য খাবার সরবরাহ করতেন।
এরপর ২০১৪ সাল থেকেই তিনি প্রথম সাধারণ পথচলতি মানুষদের জন্য বিনামূল্যে জল সরবরাহ করতে শুরু করেন। তবে শুধু জল নয়, দরিদ্রদের তিনি জলের সঙ্গে খাবার এবং তাজা ফলেরও জোগান দেন।
জল সরবরাহ করার জন্য নটরাজন যে ভ্যানটি ব্যবহার করেন, তাতে প্রায় ৮০০ লিটার জল ধরে। স্থানীয় একটি স্কুল, এবং দুজন সহকর্মী এই জল দিতে নটরাজনকে প্রভূত সাহায্য করে, এবং বাকি জল নটরাজন নিজের বাড়ি থেকেই সংগ্রহ করে।
গ্রীষ্মকালে সমস্ত কলসি নিয়ে প্রায় ২০০০ লিটার জলের প্রয়োজন হয় এবং তিনি সারা দিন ধরে সেই জলের পর্যাপ্ত জোগান দিতে থাকেন। কলসি গুলি যেখানে রাখা থাকে, সেখানে নটরাজনের ফোন নম্বরও দেওয়া থাকে,যাতে জল শেষ হয়ে গেলে কেউ নটরাজনকে খবর দিতে পারে, তবে শুধু তৃষ্ণা নিবারণই নয়, বসে আরাম করে জল পান করার জন্য তিনি বেঞ্চের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন।
নটরাজন, প্রত্যেককে নিজেদের বাড়ির সামনে এভাবে কলসি রাখার ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেছেন,যাতে তিনি সেই কলসি গুলি জলপূর্ণ করতে পারেন।
নটরাজন বিশ্বাস করেন এই ভাবেই সমাজের প্রতিটি পেশার, প্রতিটি স্তরের মানুষ সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসবে। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমেই এই সমাজ যথাযথ ভাবে গড়ে উঠবে।