জার্মান বাবা-বাঙালি মা, ছোটবেলায় বাবা-মা বিচ্ছেদ ও ফের বিয়ে আঘাত করেছিল দিয়াকে!

Sat, 13 Jun 2020-9:11 pm,

বলিউডে সফল কেরিয়ার, তবে ব্যক্তিগত জীবনে ছোট থেকেই নানান টালবাহানার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে দিয়া মির্জাকে। বেশকিছুদিন আগে এক সাক্ষৎকারে ব্যক্তিগত জীবনের নানান কথা খোলসা করেন দিয়া। 

দিয়ার জন্মদাতা বাবা একজন জার্মান, নাম ফ্র্যাঙ্ক হ্যান্ডরিচ, আর মা হলেন বাঙালি, নাম দীপা।

দিয়ার বয়স যখন মাত্র ৫ বছর, তখনই তাঁর বাবা-মায়ের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে দিয়ার মা হায়দরাবাদের বাসিন্দা আহমেদ মির্জাকে বিয়ে করেন।

দিয়ার কথায়, তিনি তাঁর বাবাকে ভীষণ ভালোবাসতেন এবং বাবা ফ্র্যাঙ্ক হ্যান্ডরিচ তাঁর ভীষণই কাছের মানুষ ছিলেন। বলা ভালো ছোট্ট দিয়ার কাছে তিনি ছিলেন নায়ক।  (ছবিতে ছোট্ট দিয়া)

নিজেদের বিচ্ছেদের কথা কীভাবে তাঁর বাবা-মা তাঁকে বলেছিলেন? এ প্রশ্নের উত্তরে দিয়া বলেন, ''হ্যাঁ, এটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একজন শিশুর কাছে, তাঁর বাবা-মা তাঁর আদর্শ। আর আমার কাছেও তাই। ''

দিয়ার কথায়, ''আমার বাবা-মাকেও আমি আমর সঙ্গে বিশেষ ঝগড়া করতে দেখিনি। বড়জোর দু-একবার দেখেছি, তাই বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের খবরে আমি আঘাত পেয়েছিলাম।'' (ছবিতে কিশোরী দিয়া)

দিয়ার কথায়, সেসময় তাঁর মা তাঁকে যেটা বলেছিলেন, সেটা তাঁর কাছে একটা শিক্ষা। মা বলেছিলেন, ''কখনও কখনও দুটো মানুষে একে অপরকে ভীষণ ভালোবাসলেও তাঁরা একসঙ্গে থাকতে পারেননি। আমি ও তোমার বাবাও একে অপরকে ভীষণ ভালোবাসি। তোমার বাবা আর আমি একসঙ্গে থাকলে আমরা দুজনেই ভালো থাকবো না।'' (ছবিতে কিশোরী দিয়া)

দিয়ার কথায়, ''তখন হয়ত আমি মা যেটা বলেছিলেন, বুঝিনি, তবে বুঝেছিলাম উনি যেটা বলছেন, সেটা সত্যি।  এরপর আদালতের নির্দেশ মতো ছুটির দিনে আমি বাবার কাছে যেতাম, অন্যদিনগুলো আমি মায়ের সঙ্গে থাকতাম।''  (ছবিতে ছোট্ট দিয়া)

দিয়ার কথায়, ''আমার মনে হত, অন্যকেউ কেন ঠিক করে দেবে আমি কার কাছে কখন থাকবো। তবে ছুটির দিনে বাবার কাছে যাওয়ার জন্য আমি অপেক্ষা করে থাকতাম।'' (ছবিতে ছোট্ট দিয়া)

তবে দিয়ার কথায়, '' বাবা-মা দুজনেই আবার শীঘ্রই বিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন, তবে আমার সৎ বাবা ভীষণই ভালো মানুষ ছিলেন। যদিও আমি তাঁকে সৎবাবা বলতে পছন্দ করি না, তাও বোঝানোর জন্য বলি। আমার বাবা-মা সিদ্ধান্ত নিলেন, তাঁরা তাঁদের আর কোনও সন্তানকে পৃথিবীতে আনবেন না। যাতে আমার উপর আর কোনও প্রভাব না পড়ে।'' (ছবিতে দিয়ার জন্মদাতা বাবা, ছবি সংগৃহীত)

দিয়ার কথায়, ''আমার সৎ বাবা আমায় স্পষ্ট জানান, তিনি কোনওদিনও আমার বাবার জায়গা নেওয়ার চেষ্টা করবেন না, যতদিন না আমি ওনাকে বাবা বলে মানি। তিনি আমার বন্ধুই থাকবেন।'' (ছবিতে নিজের বাবার জার্মান পরিবারের সঙ্গে দিয়া)

দিয়ার কথায়, ''যদিও আমি আমার সৎ মায়ের সঙ্গে বেশি সময় থাকতে পারিনি, কারণ, সৎ মায়ের পরিবারের তরফে কোনওদিনই আমার বাবার সঙ্গে ওনার বিয়ে মানতে পারিনি। তাই বাবা একদিন ওনাকে নিয়ে পালিয়ে গেল '' (ছবি মা ও সৎ বাবার সঙ্গে দিয়া)

দিয়ার কথায়, ''আমার মনে আছে হায়দরাবাদ থেকে দূরে আমি যখন আমার বাবার বাড়িতে গিয়েছিলাম, আমার সৎ মা আমার হাত ধরে ভিতরে নিয়ে গেলেন। মাত্র ১৫দিন আমি ওনাদের সঙ্গে ছিলাম, আর ওই ১৫দিন আমার জীবনে খুবই সুন্দর ছিল। আমার বাবা খুবই খুশি ছিলেন, ওনার সঙ্গে। আমার সৎ মা তখন মা হতে চলেছিলেন। বাবাকে খুশি দেখে আমার খুব আনন্দ হয়েছিল। ''(ছবি মা ও সৎ বাবার সঙ্গে দিয়া)

দিয়া আরও বলেন, ''আমার যখন ৯ বছর বয়স, তখন আমার জন্মদাতা বাবা ফ্র্যাঙ্ক হ্যান্ডরিচ মারা যান। আর সেসময় আমার সৎ বাবা যেকথাগুলো আমায় বলেছিলেন, তা আমার সবসময় মনে থাকবে।'' 

দিয়া বলেন আমার সৎ বাবা বলেছিলেন, ''তিনি আমার বাবাকে কথা দিয়েছেন, যে তিনি আমার বাবার জায়গা নেবেন না। তবে উনি আর নেই। তবে তুমি জেনো যে তোমার কাছে একজন বাবা আছেন। ''

পরবর্তীকালে দিয়া গ্রহণ করে তাঁর সৎ বাবা আহমেদ মির্জার পদবী। তবে বর্তমানে দিয়া মির্জা হ্যান্ডরিচ ব্যবহার করা শুরু করেন অভিনেত্রী।

দিয়ার কথায়, ''ছোটবেলায় আমার হয়ত ভাবি, বাবা-মা হলেন সুপার হিরো, আসলে তা নয়, তাঁরাও মানুষ। ''

প্রসঙ্গত, বর্তমানে প্রযোজক সাহিল সংঘের সঙ্গে বিয়ের ৫ বছর, পর তাঁদেরও বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়েছে।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link