হিমা দাস ফিনল্যান্ডে, বাবা-মা জানতেনই না!
মেয়ে বিদেশ যাচ্ছে, সে কথা শুরুতে জানতেনই না হিমা দাসের বাবা-মা। হিমা দাস নিজেই জানালেন সে কথা।
এমনিতে গুয়াহাটিতেই ট্রেনিং করেন হিমা। থাকতেনও সেখানে। কোচ নিপন দাস তাঁর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
ফিনল্যান্ডে আয়োজিত অনূর্ধ্ব -২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনি জিতে ইতিহাস রচনা করেছিলেন আসামের হিমা দাস। কিন্তু হিমার বাবা-মা নাকি মেয়ের ফিনল্যান্ড যাওয়ার কথা জানতেনই না। পরে মেয়ের খেলা তাঁরা টিভিতে দেখেন।
''আমার ফিনল্যান্ড যাওয়ার কথা বাড়িতে জানাইনি। বলেছিলাম, আমি একটা ছোটখাটো খেলায় অংশ নিতে যাচ্ছি। ওরাও বিশ্বাস করে নিল।'''বলছিলেন হিমা দাস।
''সোনা জিতে রুমে ফিরলাম। তার পর অনেকবারের চেষ্টাতেও বাড়ির কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত বাবাকে ফোনে পেলাম। জানালাম, আমি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। বাবা শুনে বলল, ঠিক আছে। আমি এখন ঘুমোতে যাচ্ছি। পরে শুনব। আমি বললাম, তোমার মেয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, আর তুমি ঘুমোতে যাচ্ছ! বাবা যেন বুঝতেই পারল না কিছু।''
হিমা বললেন, ''বাবা যেন বুঝতেই পারল না, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মানেটা কী! বা হয়তো প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেনি। তাই বলল, ঠিক আছে। কাল সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখছি। তার পর বাবা ফোন কেটে দিল। আমি অবাক হয়ে গেলাম।''
''ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ ও এশিয়ান গেমস থেকে পদক জয়ের পর আমার উপর দেশের মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে। এখন আমি কোনও টুর্নামেন্টে নামলেই মানুষ পদকের আশা করবেন। প্রত্যাশার চাপ বড় ব্যাপার। তবে আমি জানি, এবার আমার রাস্তাটা আরও কঠিন। এনেক বেসি ট্রেনিং প্রয়োজন এবার। আমার কাছে পদক আসল নয়। আসল হল, আমি কী সময় করছি সেটা। স্প্রিন্টে সময়টাই আসল।'' জানালেন হিমা দাস।
''আমার গ্রামে এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমি পদক জিতে ফেরার পর থেকে আসামের ঢিং গ্রামকে সবাই চিনেছে। ওখানে এখন পাকা রাস্তা হয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে বিদ্যুত্ এসেছে। গ্রামের সবাই আমাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে।'' বললেন হিমা।