Mohammed Rafi: গাড়ি থামিয়ে রফি সেদিন নিজের চটিজোড়া এগিয়ে দিলেন পথচারীর দিকে...
রফি প্রথম উন্মুক্ত মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কুন্দনলাল সায়গলের সঙ্গে। তখন রফি'র বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর!
নৌশাদের সুরে প্রধান প্রধান গান রফির। তবে লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলাল জুটির সঙ্গীত পরিচালনাতেই সব চেয়ে বেশি গান করেন তিনি। মোট ৩৬৯টি গান! এর মধ্যে ১৮৬টিই ছিল তাঁর একক!
একবার একটা ঘটনা খুব সাড়া ফেলে দিয়েছিল! মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পরে ওই ব্যক্তির কাছে তাঁর সর্বশেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাতে নাকি তিনি বলেছিলেন, তিনি "ও দুনিয়াকে রাখওয়ালে" গানটি শুনতে চান!
রফির জীবনের অনালোচিত দিকও প্রচুর। খুব ছোট ছোট ঘটনায় এই শিল্পীর ভেতরের অপূর্ব মানুষটি বেরিয়ে আসত। শিল্পীকন্যা নাসরিন আহমেদ একবার এক দারুণ ঘটনা জানিয়েছেন-- মুম্বইয়ে (তৎকালীন বম্বে) একবার প্রচণ্ড গরমে রাস্তা ভয়ানক তেতে ছিল। রফি গাড়ি থেকে দেখেন একজন লোক কোনও রকমে এক পা তুলে অন্য পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াচ্ছেন! খানিকক্ষণ বিষয়টি দেখে ব্যাপারটি বুঝতে পেরে তিনি যা করলেন, তা প্রায় চিন্তার বাইরে। তিনি গাড়ি থামিয়ে নগ্নপদ সেই পথচারীকে নিজের স্লিপারটি পরতে দিলেন!
রফির জামাই মিরাজ আহমেদও একটা ঘটনার কথা বলেন। একবার খান মস্তানা নামের এক বিস্মৃতপ্রায় শিল্পীকে রাস্তায় দেখতে পেয়ে গাড়ি থামিয়ে তাঁকে নিজের গাড়িতে তুলে নেন রফিসাব। তারপর তাঁকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। তাঁর স্নান খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তার পরে তাঁকে ছাড়েন। রফির ব্যবহারে সেদিন মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন সেই মানুষটি।
রফির দ্বিতীয় স্ত্রী বিলকিস বানো ক্রমশ খেয়াল করে দেখেছিলেন রফি একেবারেই প্রচার-না-পসন্দ আত্মমুখী আচারে-ব্যবহারে সাধারণ এক মানুষ। কিন্তু এই নিয়ে রফির ছেলেমেয়েরা তাদের 'বিখ্যাত' বাবার উপর যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হত। ওরা বাবার সঙ্গে মোটেই সিনেমা যেতে পছন্দ করত না। কেননা, সিনেমা আরম্ভ হয়ে গেলে তবেই অন্ধকার থিয়েটারে সকলের চোখ এড়িয়ে রফি তাঁর ছেলেমেয়ের হাত ধরে ঢুকতেন। আবার সিনেমা শেষ হওয়ার আগেই অন্ধকারে গা ঢেকে তিনি বেরিয়ে আসতেন। আর কোনও দিনই বাবার সঙ্গে গিয়ে সিনেমার শুরু বা শেষ দেখতে পেত না বলে বাচ্চারা বাবার উপর খুবই ক্ষুব্ধ হত!