সব্যসাচীর বাড়িতে দোলা সেন, সরানো হবে মেয়র পদ থেকে? তুঙ্গে জল্পনা
কমলিকা সেনগুপ্ত ও কমলাক্ষ ভট্টাচার্য : বিধানগরের মেয়র পদে সব্যসাচী দত্তকে রাখা হবে? না সরিয়ে দেওয়া হবে? এই নিয়ে টান টান উত্তেজনা তৃণমূলের অন্দরে। যে উত্তেজনায় ঘৃতাহুতি দিয়েছে রবিবার সকালে বিধাননগর মেয়রের বাড়িতে দোলা সেনের যাওয়া।
এদিন সকাল থেকেই সব্যসাচী দত্তের বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেন মেয়র অনুগামীরা। একটু পরে সবস্যাচী দত্তের বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায় দোলা সেনকে। পাশাপাশি তৃণমূলের অন্যান্য কাউন্সিলর ও পঞ্চায়েত সদস্যরাও আসেন মেয়ররের বাড়িতে।
কিছু পরেই ব্যালকনিতে বেরিয়ে আসেন সব্যসাচী দত্ত। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন দোলা সেন ও প্রসেনজিৎ সর্দার নামে এক এক কাউন্সিলর। ব্যালকনিতে বেশ হাসি মুখেই দেখা যায় বিধাননগরের মেয়রকে।
এদিকে এদিন সকালে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, বিধাননগরের মেয়র পদে সব্যসাচী দত্তকে রাখা হবে কি না, সেই বিষয়ে কাউন্সিলরদের মতামত নেওয়া হবে। আর সেই কারণেই মিটিং ডাকা হয়েছে। অন্যদিকে, মেয়রের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে যাওয়ার আমন্ত্রণ নাকি পাননি সব্যসাচী দত্ত। যদিও তৃণমূলের অন্দরের খবর, বৈঠকে আসার জন্য বলতেই সব্যসাচীর বাড়িতে আসেন দোলা সেন।
শনিবার মধ্যমগ্রামে তৃণমূলের নির্বাচনী বৈঠকে গরহাজির ছিলেন সব্যসাচী দত্ত। তাতে ক্ষুব্ধ হন তৃণমূল নেত্রী। আর তারপরই শনিবার রাতে, রবিবার বিকেল ৩টেয় শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে বিধাননগরের তৃণমূল কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডাকার কথা সামনে আসে। দলীয় নেতৃত্ব বৈঠক ডাকতেই সব্যসাচী দত্তকে কি মেয়র পদ থেকে সাসপেন্ড করা হবে? উসকে ওঠে সেই জল্পনা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের বাড়িতে যান মুকুল রায়। সব্যসাচী দত্তের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে মুকুল রায় বলেন,''দাদা-ভাইয়ের সম্পর্ক। রাজনীতি, ক্রিকেট ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চলেছে। ওর স্ত্রী খুব ভাল আলুর দম বানায়''। বিধাননগরের মেয়র দাবি করেন ,''কেউ যদি বাড়িতে আসতে চান, আসতে পারেন। সকলেই স্বাগত''। কিন্তু রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় হয়ে যায় এই ঘটনায়।
তাত্পর্যপূর্ণভাবে পরদিন শনিবারই মধ্যমগ্রামে তৃণমূলের নির্বাচনী বৈঠকে গরহাজির থাকেন সব্যসাচী দত্ত। যদিও উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেন, স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য সব্যসাচী দত্ত আসতে পারেননি। কিন্তু পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন, "তৃণমূলে কেউ অপরিহার্য নয়। এমনকি তিনি চলে গেলেও কোনও ফারাক পড়বে না।"
সব্যসাচীর বাড়িতে মুকুল রায়ের যাওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূল বিধায়ক তথা দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ''লোকসভা ভোটের আগে কর্মীরা খাটছেন, আর কেউ কারও বাড়িতে লুচি-আলুর দম খাওয়াচ্ছেন। দুটো একসঙ্গে চলতে পারে না''।
সব্যসাচীকে ফোন করেন রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীও। বিধাননগরের মেয়রের কাছে জানতে চান গোটা বিষয়টি। সূত্রের খবর, বিধাননগরের মেয়র ফোনে বলেছেন, ''কেউ ফোন করে আসতে চাইলে না বলব! মুকুল দার সঙ্গে আমার সম্পর্ক জানোই''।