DSP Azharuddin Khan: পড়ুয়াদের বাঁচিয়ে `সুপারম্যান` আজহারউদ্দিন পুলিসে নন, প্রথমজীবনে কী করতেন জানেন?
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে বলতে বন্দুকবাজ সামান্য অন্যমনস্ক। ওইটুকু সময়েই কেল্লাফতে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালদার স্কুলে বন্দুকবাজকে পাকড়াও করেন ডিএসপি আজহারউদ্দিন খান। যদিও নিজেকে একাজের জন্য এতটুকু কৃতিত্ব দিতে রাজি নন তিনি। তাঁর কথায়, এটাই তাঁর কর্তব্য। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর মুখে পুলিসের বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা। কিন্তু এত বড় ঘটনার পরেও একেবারে নির্বিকার আজহারউদ্দিন খান। তাঁর দাবি, ক্লাসভর্তি পড়ুয়াদের বাঁচাতে যা করা উচিত ছিল, তাই করেছেন তিনি। তার বেশি কিছু নয়।
কিন্তু কে রাজ্য পুলিসের এই নতুন নায়ক আজহারউদ্দিন? আদতে কিন্তু মালদার নন, আজহারউদ্দিন কলকাতার বাসিন্দা। জন্ম ১৯৮৫-র ৩১ জুলাই। পড়াশোনা পার্ক সার্কাস মডার্ন হাই স্কুলে। সেখান থেকেই মাধ্যমিক পাস করেন। তারপর সিটি কলেজ থেকে অনার্স নিয়ে বিএসসি স্নাতক হন। এমন নয় যে, তিনি প্রথম থেকেই পুলিসে চাকরি করতেন।
প্রথম থেকেই তিনি পুলিসে চাকরি করতেন না। ২০০৭ থেকে ২০১১ পর্যন্ত একটি বেসরকারি কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগে কাজ করেন আজহারউদ্দিন খান। এরপর ২০১৩-য় পাস করেন ডব্লিউবিসিএস। ফল বার হয় ২০১৫-য়। পরের বছর কাজে যোগ দেন আজহারউদ্দিন খান। ট্রেনিং নিতে চলে যান কালিম্পংয়ে। প্রথম পোস্টিং জলগাঁওয়ের এসডিপিও হিসেবে। তারপরই আলিপুরদুয়ারের ডিএসপি ক্রাইম। ২০২০-তে ডিএসপি ডিএনটি মালদায় পোস্টিং হয় তাঁর।
মালদার স্কুলে বন্দুকবাজের হামলার ঘটনায় উদ্ধারকর্তা 'হিরো' আজহারউদ্দিনের বাড়িতে আছেন স্ত্রী, বাবা, মা। আছেন দাদা, বৌদিও। দাদা টিসিএসে কর্মরত। বুধবারের পর খবরের শিরোনামে আজহারউদ্দিন খান। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁদেরকে উদ্ধার করার জন্য পুলিসকাকুকে বাহবা দিচ্ছে মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুলের ছোট্ট পড়ুয়ারাও।
বুধবার দুপুরে মালদার স্কুলে বন্দুকবাজের হামলা ঘটে। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে স্কুলের ক্লাসরুমের মধ্যে ঢুকে পড়ে বন্দুকবাজ। সপ্তম শ্রেণির ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ে বন্দুকবাজ। শুধু হাতে একটা নয়, হামলাকারীর কাছে একাধিক বন্দুক ছিল। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও বন্দুকবাজের সঙ্গে ছিল অ্যাসিড বোমা। এমনকি পায়ে ছুরিও বাঁধা ছিল।
অস্ত্র হাতে ছাত্রদের রীতিমতো ভয় দেখিয়ে 'পণবন্দি'র মত করে রাখে! বন্দুক উঁচিতে শাসানি দিতে থাকে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ক্লাসের মধ্যে তাণ্ডব চালায় সে। ক্লাসরুমে তখন আতঙ্কে দমবন্ধ করা ভয়াবহ পরিস্থিতি। প্রাণভয়ে জড়সড় খুদে পড়ুয়ারা। ওদিকে স্কুলের বাইরে উৎকণ্ঠার প্রহর গুনছেন অভিভাবকরা। খবর পেয়েই ছুটে আসে পুলিস।
এরপরই ওই বন্দুকবাজকে কোনও সুযোগ না দিয়েছে চকিতে ডিএসপি আজহারউদ্দিন খান ঝাঁপিয়ে পড়েন বন্দুকবাজের উপর। নিজের জীবনের ঝুঁকিয় নিয়ে বন্দুকবাজকে আটকান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তড়িৎগতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্য পুলিসকর্মীরাও। মুক্ত করা হয় বন্দি পড়ুয়াদের। এই ঘটনা প্রসঙ্গে পরে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা প্রশংসা করেন পুলিসের বুদ্ধিমত্তার। পড়ুয়াদের অক্ষত উদ্ধারের জন্য পুলিসকে ধন্যবাদ জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন।