Durga Puja 2021: রঙ বদলে সম্পূর্ণ রক্তবর্ণ হয়ে উঠল দুর্গা প্রতিমা!
নদিয়ার নবদ্বীপে প্রাচীনতম পারিবারিক দুর্গাপূজাগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নবদ্বীপ শহরে জগন্নাথতলা এলাকার ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গা পুজো। এই দুর্গা লাল দুর্গা বলে খ্যাত। প্রচলিত দুর্গা প্রতিমার থেকে এই লাল দুর্গা প্রতিমা অনেকটাই আলাদা। এই প্রতিমার বর্ণ টকটকে লাল, রক্তবর্ণও বলা যেতে পারে।
প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো এই লাল দুর্গা মায়ের রূপ রক্তবর্ণ হওয়ার পিছনে রয়েছে অলৌকিক ঘটনা। সেই ঘটনা জানালেন ভট্টাচার্য পরিবারের বর্তমান প্রবীণ সদস্য কুমারনাথ ভট্টাচার্য।
সতেরো শতকের ঘটনা। নবমীর দিন মায়ের পুজো চলছে। তৎকালীন কর্তা রাঘবরাম ভট্টাচার্য সেদিন তিথি চলে যাচ্ছে বলে একটু দ্রুত চণ্ডীপাঠ করছিলেন। রাঘবরামের পুত্রের কানে বাবার চণ্ডীপাঠ শুদ্ধ লাগল না। তিনি বাবাকে এসে বললেন, চণ্ডীপাঠ ঠিক হচ্ছে না। সেই কথা শুনে রাঘবরাম পুত্রকে বললেন-- বেশ, তুমি তা হলে চণ্ডী পাঠ করতে বসে যাও। বাবার কথামতো পুত্র বসলেন চণ্ডী পাঠ করতে। পুত্র বসলেন পুব দিকে মুখ করে।
ঠিক তখনই আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটল! মা দুর্গার মূর্তি সহসা দিক পরিবর্তন করে, দক্ষিণমুখো অবস্থা থেকে পশ্চিমমুখো হয়ে গেল; মানে, দেবীমূর্তি তখন রাঘবরামের পুত্রের একেবারে মুখোমুখি। শুধু তাই নয়, সেই সময়ে মা দুর্গার গাত্রবর্ণও ক্রমশ বদলে যেতে থাকল। ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ রক্তবর্ণ হয়ে যেতে থাকল মা দুর্গার রঙ! ওদিকে চণ্ডীপাঠরত রাঘবরামের ছেলের শরীর তখন ক্রমশ ফ্যাকাসে হতে শুরু করেছে। শেষে তাঁর দেহ প্রায় রক্তশূন্যই হয়ে পড়ল। পুজোর শেষে সেদিন তাঁর প্রাণবিয়োগও ঘটে। সেই সময়েই রাঘবরাম বলে গিয়েছিলেন, আর কোনও দিন যেন এ বাড়ির পুজোয় চণ্ডীপাঠ না হয়! সেই থেকে চণ্ডীপাঠ হয় না এ বাড়ির পুজোয়।
তবে সেই ঘটনার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই দুর্গা প্রতিমা লালবর্ণ বা রক্তবর্ণ রূপেই পূজিত হয়ে আসছেন। এবং আজও এই দুর্গা পশ্চিমমুখোই এ বাড়িতে। মা'কে এ বাড়িতে বোয়াল মাছ ও থোড় দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়। আগে বলির প্রথা থাকলেও এখন কুমড়ো বলি হয়। এই পুজো নবদ্বীপে হচ্ছে প্রায় ১০০ বছর ধরে, তবে ঢাকায় পুজো শুরু হয়েছিল ৩৫০ বছর আগে।