Duttapukur Blast: `রাজমিস্ত্রির কাজে যাচ্ছি` বলে বাজি কারখানায়, ছেলের মৃত্যুসংবাদে সত্যিটা জানল মা!
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ছেলে বাড়িতে বলে গিয়েছিল রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যাচ্ছে! মা সেটাই জানতেন। অবশেষে বিস্ফোরণের পর পেলেন ছেলের মৃত্যুসংবাদ। জানতে পারলেন, রাজমিস্ত্রি নয়, ছেলে বেআইনি বাজি কারখানায় কাজ করতে এসেছিল!
দত্তপুকুরের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত মুর্শিদাবাদের কারিগর ছোটন শেখ, আন্দাজ শেখ ও রনি শেখ। এদের বাড়ি মুর্শিদাবাদের সুতি থানার নতুন চাঁদড়া গ্রামে। গতকাল আন্দাজের মা জানতে পারেন যে, তাঁর ছেলে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন।
আন্দাজের মা জানালেন, ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যাচ্ছে বলে, বাইরে যায় বেশ কিছুদিন আগে। প্রতি মাসে সেখান থেকে টাকাও পাঠাত। কিন্তু আসলে যে বাজি বানাত, সেটা তাঁর জানা ছিল না। যদিও নতুন চাদরা গ্রামটি বাজি তৈরির গ্রাম বলেই পরিচিত। এই গ্রামে রয়েছেন একাধিক বাজি তৈরির দক্ষ কারিগর।
বিস্ফোরণে নিহত মোট ৯ জনের দেহ শনাক্ত হয়েছে। নিহতরা কলেজ শেখ (৪০), রনি শেখ (১৬), জিরাট শেখ (৫০), মাসুম শেখ (১৬), আন্দাজ শেখ (১৯), শাহবাজ আলম (২৪), কেরামত আলি (৪৫), রবিউল আলি (২১) ও সামসুল আলি (৫০)। এর মধ্যে একই পরিবারের রয়েছেন ৫ জন।
কলেজ শেখ (৪০), দেহ শনাক্ত করেন স্ত্রী লুফানি বিবি। রনি শেখ (১৬), দেহ শনাক্ত করেন মা আলিদা পারভিন। নিহতদের তালিকায় আছেন জিরাট শেখ (৫০), মাসুম শেখ ও আন্দাজ শেখ। সপ্তাহখানেক আগে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন এই ৫ জন। লেবারের কাজ করতে এসেছেন বলে জানিয়েছিলেন বাড়িতে। কাল বাড়ির লোক জানতে পারেন যে এরকম ঘটনা ঘটেছে।
নিহত শাহবাজ আলমের (২৪) বাড়ি ঝাড়খণ্ডের গুমানি শিরকুণ্ডে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিল ১৫ অগস্টের পর। তারপর কিছুদিন আগে ফোন করে জানায় বারাসতে ভালো কাজ পেয়েছে। কাল ফেসবুক দেখে পরিবারের সন্দেহ হওয়ায় আজ মর্গে এসে যোগাযোগ করে পরিবার। তারপরই দেহ শনাক্ত করে।
রবিবারের দুপুরে বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রাম। বিস্ফোরণের ২১ ঘণ্টা পরেও দত্তপুকুরকাণ্ডে উদ্ধার হয়েছে ছিন্নভিন্ন হাত-মুণ্ডু! ঘটনাস্থল থেকে ৮০ মিটারের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে হাত। এক প্রতিবেশীর বাঁশ বাগানের পাশে পড়ে মুণ্ডু। পুকুরে ভাসছে দেহ।
ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণকাণ্ডে প্রথম গ্রেফতার করেছে পুলিস। বিস্ফোরণের ঘটনায় নীলগঞ্জ থেকে সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিস। ধৃত সফিকুল ইসলাম কেরামতের পার্টনার হিসেবেই পরিচিত। কেরামতের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ইনি। এর পাশাপাশি, মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৮৬, ৩০৪, ৩০৮, ৩৪, ৯বি দ্য এক্সপ্লোসিভ অ্যাক্ট, ২৪/২৬ ফায়ার সার্ভিস অ্যাক্টে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।