গুণে ভরপুর বেগুন, প্রতিহত করে মারণরোগ
নিজস্ব প্রতিবেদন: বেগুনের কোনও গুণ নেই, এ কথা যারা বলেন তারা এই সবজিটির অনেক গুণের সম্পর্কেই হয়তো জানেন না। ষ্টিবিদদের মতে, বেগুন পুষ্টিতে ভরা একটা সবজি। পুষ্টিগুণে ভরা বেগুন আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যার মতো একাধিক শারীরিক সমস্যার সমাধানে বেগুন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আসুন এ বার বেগুনের কয়েকটি অজানা গুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক...
১) বেগুনে থাকা ফাইবার যে কোনও পেটের রোগের প্রকোপ কমতে সাহায্য করে।
২) বেগুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের টক্সিক উপাদানের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। বেগুনে থাকা ফাইবার কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রয়েছে।
৩) বেগুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের খাদ্যতালিকায় বেগুণ রাখতে পারলে উপকার পাওয়া যায়।
৪) বেগুনে থাকা ফলিক অ্যাসিড গর্ভবতী মহিলাদের শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫) বেগুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি-৬ আর ফ্লেবোনয়েড যা কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রসঙ্গত, বেগুন একটি মৌষমি সবজি। এটি সাধারণত শীতের সময়ে বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু এখন সারাবছরই মেলে এই সবজি। মধ্য যুগে ইউরোপে যেসব বেগুন পাওয়া যেত সেগুলোর আকৃতি অনেকটাই মুরগির ডিমের মতো ছিল। এ কারণেই বোধহয় ইংরেজিতে বেগুনের নাম এগপ্ল্যান্ট। খোসাসহ বেগুন অনেক সময় তেতো স্বাদের হয়।
বেগুন flavedon, kolinergik এসিড নামে এক ধরনের এসিড রয়েছে, যা শরীরে প্রবেশকৃত রোগ জীবাণু, টিউমারের জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার আঁশ-জাতীয় খাদ্য উপাদান। যা বদ হজম দূর করে।
বেগুন আরও রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি, শর্করা, চর্বি, আমিষ, আয়রন। বেগুন এর উদ্ভিজ্জ আমিষ শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করে।
বেগুন ফাইবার, ভিটামিন বি ১, বি ৬, বি ৩, সি, কে তে ভরপুর থাকে। এছাড়াও এতে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে বলে বেগুন হৃদপিন্ডের জন্য উপকারি একটি খাবার। আরো হৃদপিন্ডের জন্য অপরিহার্য ফ্ল্যাভোনয়েড যা বেগুনেই বিদ্যমান থাকে। তাই নিয়মিত বেগুন খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় অনেক ক্ষেত্রে।
যাদের রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকে, তারা কোনো রকম দুশ্চিন্তা ছাড়াই খেতে পারে বেগুন। কারণ বেগুনে কোনো চর্বি বা কোলেস্টেরল নেই।
বেগুনে পলিফেনল যেমন- ডেলফিনিডিন থাকে। য টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিহত করে এবং ক্যান্সার কোষের বিস্তার বন্ধ করতে সাহায্য করে। অন্য উপাদান যেমন- এন্থোসায়ানিন ও ক্লোরোজেনিক এসিড শরীরে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি প্রভাব ফেলে।
ক্লোরোজেনিক কোষের ভিতরের এনজাইম পরিষ্কার করে, যা ক্যান্সার কোষের মৃত্যুকে উৎসাহিত করে এবং ভাইরাস জনিত রোগ তাড়াতে সাহায্য করে। বেগুন পাকস্থলী, কোলন, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদান্তের (এগুলো পেটের ভেতরের অঙ্গ) ক্যানসারকেও প্রতিরোধ করে থাকে। আবার যেকোনো ক্ষতস্থান শুকোতে সাহায্য করে বেগুন।