দেশের প্রতিটি মানুষের হাতে থাকবে পশ্চিমবঙ্গের পাটের ব্যাগ, কেমন হবে ভাবুন তো: মোদী

Thu, 11 Jun 2020-2:04 pm,

এদিন ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের ৯৫তম বার্ষিক সভায় যোগ দিয়ে প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আইসিসি-কে অভিবাদন জানান। তিনি বলেন, আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। ৯৫ বছর ধরে দেশের সেবা করা যে কোনও সংগঠনের ক্ষেত্রে খুবই বড় বিষয়। দেশের জন্য আইসিসি-র অবদান অনস্বীকার্য। এই ৯৫তম বর্ষে যোগদানকারীর প্রত্যেককে আমার অভিবাদন জানাই। 

 

আইসিসি স্বাধীনতার লড়াই দেখেছে। অন্ন সংকট, দেশভাগের মতো ভারতের উন্নয়নেরও সাক্ষী আইসিসি। এবারের বার্ষিক সভার এমন একটা সময়ে হচ্ছে যখন পুরো দেশ একটা বিশাল যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। 

 

এই সময়ে অনেক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ভারত। শুধু করোনা লকডাউন নয়। পঙ্গপাল, অনাবৃষ্টি, দুটি ভয়ানক সাইক্লোনের সম্মুখীন হয়েছে দেশ। অনেক ক্ষেত্রে সময় আমাদের পরীক্ষা নেয়। 

 

এই কঠিন পরিস্থিতিতেও আমাদের কর্তব্য এটাই মনে রাখা যে প্রচেষ্টার মাধ্যমে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের এখানে বলা হয়, মনকে হারে হারে, মনকে জিতে জিত। অর্থাত্ আমাদের ইচ্ছাশক্তিই আমাদের ভবিষ্যত স্থির করে। যে আগেই হার মেনে নেয়, তার কোনও আশা বা সুযোগ আসে না। কিন্তু যে চেষ্টা করতে থাকে, তার সামনে অনেক সুযোগ আসতে থাকে। 

 

আমাদের সঙ্কল্প, ইচ্ছাশক্তি একটি রাষ্ট্র হিসাবে আমাদের অনেক বেশি শক্তিশালী করে। বিপর্যয়ের একটিই ওষুধ হয়, মজবুতি। অর্থাত্ বিপদে নুইয়ে না পড়ে উঠে দাঁড়িয়ে লড়াই করাই ভারতের প্রচেষ্টার নিদর্শন। আইসিসি-ও সেই প্রচেষ্টার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে।

 

করোনা সংকটের সঙ্গে পুরো দুনিয়া লড়ছে। করোনা যোদ্ধাদের সঙ্গে আমাদের দেশও লড়ছে। আমাদের এই সময়টাকে দেশের টার্নিং পয়েন্ট বানাতে হবে। 

 

টার্নিং পয়েন্ট কী তাও ব্যাখা করলেন প্রধানমন্ত্রী। আত্মনির্ভর ভারতের উল্লেখ করে তিনি বললেন, এই সময়ে আমাদের আরও বেশি স্বনির্ভর হতে হবে। তিনি বললেন, যদির কথা আর ভাবলে চলবে না। বিগত বছরগুলি ধরে এই সময়ে বারবার মনে হয়েছে যদি আমরা ওষুধ, ইলেকট্রনিক, উড়ান, রাসায়নিক, কৃষি ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলিতে আত্ননির্ভর হতে পারতাম! এই চিন্তাধারা গত ৫-৬ বছরে দেশের সিদ্ধান্তগুলিতে প্রভাবিত হয়েছে বলে জানান তিনি। 

 

আমাদের দেশে ছেলে-মেয়েরা ১৮-২০ হলেই মা-বাবারা বলেন, বাবা, এবার নিজের পায়ে দাঁড়ানো শেখ। এটাই আত্মনির্ভরতা। আমাদের দেশ, ভারতকেও সেই একইভাবে আত্মনির্ভর হতে হবে। 

 

যে যে ক্ষেত্রে ভারত অন্যের উপর নির্ভরশীল, সেই ক্ষেত্রগুলিতেই ভারতকে আত্মনির্ভর হতে হবে। শুধু তাই নয়, ভারতে প্রস্তুত দ্রব্যাদির উন্নতিতে আরও জোর দিতে হবে। 

 

তিনি বলেন, ভারতে তৈরি বস্তু ছেড়ে সেই একই জিনিস বিদেশ থেকে কেনা কমাতে হবে। এর ফলে শুধু, আর্থিক উন্নয়ন নয়, ছোট বিক্রেতাদের আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি পাবে। মার্সিডিজ করে ধরুন আপনি যাচ্ছেন, রাস্তায় ফুটপাথের কোনও দোকান থেকে কিছু কিনলেন। এতে শুধু আপনি সেই বিক্রেতাকে আর্থিক সাহায্যই করলেন না। বরং তাঁর সম্মানও বেশ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিলেন। এই সম্মানবোধই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

শুধু তাই নয়, প্লাস্টিক দ্রব্য বর্জনের গুরুত্ব ব্যাখা করার সময়ে তিনি বলেন, "প্লাস্টিক দ্রব্যের ব্যবহারের বদলে পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। এতে পশ্চিমবঙ্গের প্রচুর লাভ হবে।" পশ্চিমবঙ্গের পাটশিল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, প্লাস্টিক দ্রব্যের ব্যবহার হ্রাস পেলে সেই ঘাটতি পূরণে এগিয়ে আসবে পশ্চিমবঙ্গের পাটশিল্প। ইতিমধ্যেই প্লাস্টিক দ্রব্য বর্জনের ফলে বৃদ্ধি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পাটশিল্পের। মোদী বলেন, "আপনাদের তো পাঁচ আঙুলই ঘি-তে ডুবে আছে।"

তিনি বলেন, ভেবে দেখুন, পশ্চিমবঙ্গে তৈরি পাটের ব্যাগ যখন দেশের সব মানুষের হাতে থাকবে, তখন কতটা উন্নতি হবে এই শিল্পক্ষেত্রে।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link