ফলহারিণী কালীপূজা: মাতৃশক্তির চরণে সমস্ত কর্মফল অর্পণের মহালগ্ন
আজ, ৯ জুন, বুধবার দুপুর ১.৩২ মিনিটে অমাবস্যা শুরু হবে, ১০ জুন, বৃহস্পতিবার দুপুর ৩.২৮ পর্যন্ত অমাবস্যা থাকবে। এই অমাবস্যায় ফলহারিণী কালী পুজো করা হয়।
যিনি আমাদের কর্মফল হরণ করেন এবং মুক্তি প্রদান করেন তিনিই ফলহারিণী কালী। আমাদের সমস্ত বিপদ, দৈন্য, ব্যাধি এবং সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ করে তিনি ঐশ্বর্য্য, আরোগ্য, বল, পুষ্টি, ও গৌরব প্রদান করেন। তবে জীবকে যা তিনি দেন তা তাদের কর্মফল অনুসারেই দেন। বিশ্বাস, ফলহারিণী কালীপুজো করলে পূজারীর ও ভক্তের কর্ম ও অর্থভাগ্যে উন্নতি ঘটে। সাংসারিক নানা বাধা দূর হয়। জীবনে সুখশান্তি লাভ হয়।
সাধকেরা বলেন, কালী স্বয়ং ব্রহ্মশক্তি। মহাকাল শিব মায়ের পদতলে বিরাজ করেন। স্থিতি সৃষ্টি প্রলয়ের কর্ত্রী দেখতে গেলে কালীই। মহাকালী একধারে ভয়ংকরী, অন্য দিকে অপার করুণাময়ী। মায়ের নানা রূপ। কোথাও তিনি নিত্যকালী, কোথাও মহাকালী, কোথাও ভদ্রকালী, কোথাও শ্যামাকালী, কোথাও আবার রক্ষাকালী, সিদ্ধেশ্বরী কালী, শ্মশানকালী বা রটন্তীকালী। তিনিই আবার এই ফলহারিণী কালী।
জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে ফলহারিণী কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন নানারকম ফল দিয়ে দেবীর পুজো করা হয়। ফল এখানে প্রতীক। তা আসলে সাধকের কর্ম-রূপ ফল। দেবীর চরণে এদিন ভক্ত তাঁর জীবনের সমস্ত কর্মফল নিবেদন করেন। পুজোর সময়ে অবশ্যই জ্বলবে একটি তেলের প্রদীপ।
শ্রীরামকৃষ্ণ এই তিথিতেই সারদাদেবীকে পুজো করেছিলে। এদিন তিনি দক্ষিণেশ্বরে তাঁর ঘরে মা সারদাকে পুজো করেছিলেন। ফলহারিণী কালী পুজোর দিন শ্রীমাকে তিনি ষোড়শীরূপে পুজো করেছিলেন। দশমহাবিদ্যার দশটি রূপের একটি হল ষোড়শী।
ফলহারিণী কালী পুজোর দিন শ্রীমাকে শ্রীরামকৃষ্ণ ষোড়শীরূপে পুজো করেছিলেন বলে আজও রামকৃষ্ণ মঠ ও আশ্রমে এই দিনটির স্মরণে পুজো হয়।