মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের এই ভয়ংকর শীতে গঙ্গোত্রীতে কী করছেন এত জন সাধু?
উত্তরকাশীর পুলিস সুপার অর্পণ যদুবংশী বলেছেন, এই বছর ৫২ জন সাধু গঙ্গার উৎপত্তিস্থল গঙ্গোত্রী উপত্যকায় এসেছেন। তাঁরা ওই -ডিগ্রি তাপমাত্রায় ধ্যানজপ করবেন। আগে অবশ্য এই প্রথা ছিল। করোনার কারণে দুবছর এটা হয়নি। গঙ্গোত্রী উপত্যকায় কোনও সাধু আসেননি। কয়েক শতাব্দীর এই প্রথা ভেঙে যায়। তবে এবছর ফের শুরু হল।
অর্পণ যদুবংশী বলছিলেন, অনাদিকাল থেকে উপত্যকাটি সাধুদের প্রিয় গন্তব্য ছিল। এবার বরফঢাকা গঙ্গোত্রীতে ৪৭ জন সাধু ধ্যানজপ করছেন, তিনজন তপোবনে, একজন করে ভুজবাসা ও কাঙ্খুতে।
যদুবংশী জানান, গঙ্গোত্রী ধামের গুহায় এবং পাহাড়ের উপরে বসবাসকারী সাধুদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। হরশিল থানাও এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল। প্রায়শই অভিযোগ আসে, সন্ন্যাসীর কুঁড়ে থেকে মালপত্র চুরি হয়েছে, সেজন্য এবারে খুবই কড়াকড়ি।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৬০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত তপোবনে এবার তিনজন সন্ন্যাসী এবং ৩৮০০ মিটার উচ্চতায় একজন সন্ন্যাসী ধ্যানমগ্ন। এখানে, প্রায় এক দশক পরে, তপোবনে সাধনরত সন্ন্যাসীর সংখ্যা দুই থেকে তিনে উন্নীত হয়েছে। অন্য দিকে, সমগ্র গঙ্গোত্রী উপত্যকায় গুহায় সাধনকারী সাধু-সন্ন্যাসীর সংখ্যা ৫২-য়ে পৌঁছেছে। গত দশ বছরে সংখ্যাটি ৪০-এর কাছাকাছি ছিল।
আধ্যাত্মিক সাধনার জন্য এই সন্ন্যাসীদের গুহা ও কুটিরে বসবাস করার সিদ্ধান্ত। পুলিস প্রশাসন, স্থানীয় মানুষ প্রমুখ অনেকেই এঁদের আধ্যাত্মিক সাধনা সম্পন্নের পথে যাতে কোনও বাধা না আসে তার দিকে খেয়াল রাখতে কোনও কসুর রাখেন না।
এখন গঙ্গোত্রীধামে অনেক সাধু ও তপস্বী তাঁদের কুঁড়েতে বা আশ্রমে বসবাস করছেন। এখানে ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সী ব্রহ্মচারী সন্ন্যাসীরা সাধনা করেন, আবার ৮০-৮৫ বছরের সন্ন্যাসীরাও সাধনা করেন।
গঙ্গোত্রী ধাম থেকে দেড়শো মিটার দূরে স্বামী আত্মানন্দ সরস্বতীর গুহা। তিনি সেখানে ধ্যান করেন এবং নিজের খাবার নিজেই রান্না করেন। প্রায় পঞ্চাশজন সাধু এখানে বসবাস করেন। অনেকেই রেশনের ব্যবস্থা করেন। প্রশাসনের সহযোগিতা তো আছেই। তবে কেরোসিনের সমস্যা রয়েছে, যেজন্য প্রায়ই পুলিসের সাহায্য নিতে হয়।