মহাকাশযাত্রার ২০ বছর পূর্তিতে ঠিক সেদিনের মতোই উচ্ছ্বসিত ডেনিস টিটো

Soumitra Sen Sun, 09 May 2021-4:30 pm,

আকাশ-মাটি-জল। এই নিয়েই তো ব্রহ্মাণ্ড। কিন্তু মানুষ মূলত ভ্রমণ করে স্থলভাগ। জলকে মানুষ ব্যবহার করে বটে, কিন্তু জলের জগতে ক'জন আর বেড়াতে যান। আর জলের রাজ্য়ে যদিও-বা কেউ কেউ পাড়ি দেনও, আকাশের রাজ্যে প্রায় কেউই যান না। যাওয়ার নানা বাধা বিপত্তি। জ্ঞান, যোগ্যতা, অর্থ-- কত কিছু যে চাই! 

তবে একেবারেই যে কেউ এই স্বপ্ন দেখেন না, তা-ও নয়। যেমন ডেনিস টিটো। মার্কিন কোটিপতি ডেনিস টিটো ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল রাশিয়ার সয়ুজ রকেটে করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন। তিনিই বিশ্বের প্রথম মহাকাশ পর্যটক। ওই সময় তাঁর বয়স ছিল ৬০ বছর। তরুণ বয়সে দেখা স্বপ্ন সেদিন পূরণ হয় তাঁর। স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলতে তাঁকে অবশ্য খরচ করতে হয়েছিল দু'কোটি মার্কিন ডলার!

দু'দশক পরে টিটো তাঁর সেই মহাকাশ অভিযাত্রাকে স্মরণ করলেন। আনন্দে আপ্লুত তিনি। তিনি বলছেন, তাঁকে বহনকারী রকেটটি যখন প্রথম কক্ষপথে প্রবেশ করে, সেই মুহূর্ত বর্ণনার সময়ে তিনি অভিভূত। তিনি বলছেন, 'কক্ষপথে পৌঁছনোর পরে মহাকাশের গাঢ় অন্ধকার ও দূরে পৃথিবীর বক্রতা দেখতে পেলাম। আমি উচ্ছ্বসিত। এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা।

টিটো একটা পথ খুলে দিয়েছেন। এখন অনেকেই ভাবতে পারছেন যে, মহাকাশ ভ্রমণ করা সম্ভব। বিশ্বের আরও কয়েকজন ধনী টিটোর মতো মহাকাশে বেড়াতে গিয়েছেন। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান মহাকাশ পর্যটন নিয়ে কাজ করছে। টিটোও মহাকাশ পর্যটনের খোঁজখবর রাখেন। তাঁর আশা, অনেকেই একদিন মহাকাশ ভ্রমণের রোমাঞ্চ নিতে আগ্রহী হবেন। 

ডেনিস টিটো বলেন, ১৯৬১ সালেই তিনি ঠিক করে নিয়েছিলেন যে, তিনি মহাকাশ ভ্রমণ করবেন। ওই সময়ে সোভিয়েত নভোচারী ইউরি গ্যাগারিন বিশ্বের প্রথম মানুষ হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণ করেছিলেন। টিটো বলেন, বিষয়টি তাঁকে দারুণ মুগ্ধ করেছিল।  

নাসা অবশ্য সাধারণ মানুষের মহাকাশ ভ্রমণের পক্ষে ছিল না। ১৯৯১ সালের পরে টিটো সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে মহাকাশ ভ্রমণ নিয়ে আলোচনা করেন। নব্বইয়ের দশক থেকেই রুশরা মহাকাশ কর্মসূচিতে কী ভাবে অর্থলগ্নি করা যায়, তার পরিকল্পনা সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিল। টিটো তাদের কাছে মহাকাশ পর্যটনের প্রস্তাব নিয়ে যান। এরপরই ২০০১ সালের ২৮ এপ্রিল সয়ুজ মহাকাশযান কাজাখস্তান থেকে যাত্রা শুরু করে। দুই রুশ নভোচারীর তাঁর সঙ্গে এতে ছিলেন। টিটো বলেন, 'এটা ছিল আট দিনের উচ্ছ্বাস। আমি জানালা দিয়ে বাইরেটা দেখছিলাম। পৃথিবী, মহাকাশ স্টেশনের ভিডিয়ো তুলেছি। সেই আট দিন ছিল আমার সারা জীবনের সব চেয়ে সেরা অভিজ্ঞতা।'

টিটোর মহাকাশ ভ্রমণের পর আরও সাতজন ব্যক্তিগত অর্থ খরচ করে মহাকাশে গিয়েছেন। তবে ২০০৯ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত মহাকাশে কোনো পর্যটক যাননি। মহাকাশ ভ্রমণ আয়োজনকারী এক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জানান, ভবিষ্যতে আরও বেশি নভোযান ও পর্যটন অ্যারেঞ্জার থাকবে। প্রতিযোগিতামূলক দামেই তখন মহাকাশ ভ্রমণ করা যাবে।

 

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link