India`s Next T20I Captain: `রাজার মুকুট রাজার সাজ, অন্য কেউ তা পরবে আজ`! মসনদে বসার দৌড়ে এই ৫ মহারথী

Mon, 01 Jul 2024-8:16 pm,

১৯ নভেম্বর ২০২৩ থেকে ২৯ জুন ২০২৪। ঠিক সাত মাসের মধ্য়ে চিত্রটা পুরোপুরি বদলে গেল। প্রথমবার তীরে এসেই ঠিক তরী ডুবেছিল আর পরেরবার ভারত বিশ্বচ্য়াম্পিয়ন। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ১৭ বছর পর কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ ভারতের হাতে। সৌজন্য়ে রোহিত শর্মা। তবে দেশকে কাপ জিতিয়েই রোহিত বলেছেন যে, তিনি ১৭ বছরের টি-২০ আন্তর্জাতিক কেরিয়ার শেষ করছেন। দেশের জার্সিতে খেলে ফেললেন শেষ ম্য়াচ।

বিশ্বকাপ ফাইনালের পর রোহিত সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন। মিডিয়াকে চমকে দিয়ে তিনি বলেন, 'আমিও বিরাটের মতোই দেশের জার্সিতে শেষ টি-২০ ম্য়াচ খেলে ফেললাম। এই ফরম্য়াটকে গুডবাই বলার জন্য় এর চেয়ে ভালো সময় হতে পারত না। প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। টি-২০-র হাত ধরেই ভারতের হয়ে আমার অভিষেক। ভীষণ ভাবে এই কাপটা জিততে চেয়েছিলাম। শব্দে প্রকাশ করতে পারব না এই আনন্দ। আমার জন্য় খুব আবেগঘন মুহূর্ত। জীবনে মরিয়া হয়ে এই খেতাব চেয়েছিলাম। আজ খুশি যে ফিনিশিং লাইন পার করতে পেরেছি।'

১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭, ইংল্য়ান্ডের বিরুদ্ধে রোহিতের দেশের জার্সিতে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে অভিষেক। যদিও সেদিন রোহিত ব্য়াট করার সুযোগ পাননি।  ২৯ জুন ২০২৪, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শেষ আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্য়াচ খেললেন। ৫ বলে ৯ রান করে রোহিত আউট হলেন শেষ টি-২০আই ম্য়াচে। দেশের হয়ে ১৫৯টি টি-২০ ম্য়াচে বিরাট করেছেন ৪২৩১ রান করেছেন। পাঁচটি সেঞ্চুরি ও ৩২টি অর্ধ-শতরান আছে তাঁর। এত বেশি সেঞ্চুরি আর কারোর নেই। সর্বাধিক ইনিংস অপরাজিত ১২১ রানের। এই ফরম্য়াটে তিনি হাত ঘুরিয়ে নিয়েছেন এক উইকেটও। ১৭ বছরের টি২০আই কেরিয়ার ঠিক এমনই। এখন প্রশ্ন রোহিতের পর কে বসবেন মসনদে। দৌড়ে রয়েছেন পাঁচ তারকা।

ভারতের পরবর্তী টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে সবার আগে হার্দিক পান্ডিয়া। টি-২০ বিশ্বকাপে রোহিতের ডেপুটি হিসেবে কাজ করেছেন এই তারকা অলরাউন্ডার। হার্দিক বিশ্বকাপে ১৪৪ রান করেছেন এবাং ১১ উইকেট নিয়েছেন। বিগত তিন আইপিএলে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের। ২০২২ সালে হার্দিক গুজরাত টাইটান্সের অধিনায়ক হয়েছিলেন। আইপিএল অভিষেকেই সেই দলকে তিনি চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। তার পরের মরসুমে হার্দিকের গুজরাত রানার্স হয়েছিল। চলতি বছর হার্দিককে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স অধিনায়ক করেছিল। যদিও হতশ্রী পারফরম্য়ান্স ছিল তাঁর এবং তাঁর দলের। পাঁচবারের চ্য়াম্পিয়নরা সবার আগে টুর্নামেন্ট থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। তবে হার্দিকে অধিনায়ক হওয়ার ক্ষেত্রে বড় সেটব্য়াক হতে পারে তাঁর ফিটনেস রেকর্ড। অত্য়ন্ত চোট-আঘাত প্রবণ ক্রিকেটার তিনি। একবার চোট পেলে তাঁর ফিট হতে অনেকটা সময় লেগে যায়। একথা খুব ভালোভাবেই জানেন নির্বাচকরা। কিন্তু হার্দিকের নেতৃত্বে ভারতীয় দল একাধিকবার টি-২০ সিরিজ খেলেছে।  

অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে দুয়ে রয়েছেন বিশ্বের এক নম্বর টি-২০ ব্য়াটার সূর্যকুমার যাদব। নির্বাচকরা সূর্যকে অধিনায়ক করতে প্রলুব্ধ হতেই পারেন। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে যে, ভারতের পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে নির্বাচকদের দু'টি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি টি-টোয়েন্টি থেকে চলে যাওয়ায়, সূর্যকুমার যাদব এই ফরম্যাটে ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার হয়ে উঠবেন। তাই ৩৩ বছর বয়সীকে অধিনায়কত্বের অতিরিক্ত বোঝা হয়তো চাপাতে চাইবে না টিম ম্যানেজমেন্ট। দ্বিতীয়ত, SKY-এর নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা কম। আইপিএলে তিনি কখনোই পূর্ণকালীন অধিনায়ক হননি।

 

ভারতের টি-২০ দলের অধিনায়ক হিসাবে যদি ফের একজন উইকেটকিপার-ব্যাটারকে দেখা যায় তাহলে, ফ্য়ানদের দুর্দান্ত স্মৃতি ফিরে আসবে। কারণ কিংবদন্তি এমএস ধোনি ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে এবং সিএসকে-র হয়ে আইপিএলে অধিনায়ক হিসেবে অসাধারণ কাজ করেছেন। ঋষভ ও তাই করতে পারেন! তিনি দীর্ঘ চোট-আঘাতের পর্ব কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন। বিশ্বকাপের ফাইনালে শূন্য রানে আউট হওয়ার আগে পর্যন্ত টুর্নামেন্টে মোটামুটি ভালোই খেলেছেন তিনি। মাত্র ২৬ বছর বয়সে ঋষভ দিল্লি ক্যাপিটালসের নিয়মিত অধিনায়ক। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর এখন অভিজ্ঞতাও প্রচুর। তবে ঋষভের বিরুদ্ধে যে জিনিসটি কাজ করবে, তা হল তিনি এই ফরম্যাটে একেবারেই ধারাবাহিক নন। অনেক বেশি ধারাবাহিক সঞ্জু স্যামসন। ভারতের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে পন্থকে বসিয়ে সঞ্জুকে নেওয়ার কথা প্রায়ই ওঠে। অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে তিনে থাকবেন ঋষভ।

সাল ২০১৮। আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল বুমরার। বিগত ছয় বছরে বুমরা ক্রিকেটের তিন ফরম্য়াটে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। আজ তিনি দেশের অন্যতম সেরা যোদ্ধা হয়ে উঠেছেন। এমনকী এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর বোলার বুমরা। টি-২০ বিশ্বকাপে তিনি ফের দেখিয়েছেন যে, বল হাতে কী করতে পারেন। ১৫ উইকেট নিয়ে হয়েছেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বাধিক উইকেট শিকারি। কিন্তু প্লেয়ার অফ দ্য় টুর্নামেন্ট হয়েছেন বুমবুম। প্রায়শই প্রাক্তন খেলোয়াড়দের থেকে শোনা যায় যে, তাঁরা বুমরাকে ভারতের পরবর্তী টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চান। বুমরারর বিরুদ্ধে একমাত্র যে বিষয়টি কাজ করতে পারে, সেটা হল ক্রিকেট প্রশাসকদের একজন পিওর বোলারকে দলের অধিনায়ক করার অনীহা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে, শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানই একমাত্র দল ছিল, যাদের অধিনায়করা ছিলেন শুধুই বোলার। ইতিহাসও বলছে যে, যখন ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একজন ব্যাটার এবং বোলারের মধ্য়ে বেছে নেওয়ার কথা আসে, তখন ব্যাটাররাই অধিকাংশ সময়ে এই প্রতিযোগিতায় জিতে যান।

 

ভারতের পরবর্তী টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে এক কালো ঘোড়ার নাম শুভমন গিল। তাঁকে কিন্তু অবশ্যই এই লড়াই থেকে বাদ রাখা যাবে না। শুভমন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে ভ্রমণকারী রিজার্ভ হিসেবে ছিলেন। পরে তাঁকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ওডিআই এবং টেস্টে ফরম্য়াটে শুভমন এখন নিয়মিত। চলতি বছর আইপিএলে গুজরাত থেকে হার্দিক পান্ডিয়ার চলে যাওয়ার পর শুভমনকেই ক্য়াপ্টেন করা হয়েছে। নির্বাচকরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তাঁরা এখনও টি-২০ দল শুভমনকে নিয়েই ভাবতে চাইছেন। কারণ তাঁকেই আসন্ন পাঁচ ম্য়াচের জিম্বাবোয়ে সিরিজের জন্য় ক্য়াপ্টেন করা হয়েছে। ভারতের মূল টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে ফেরার জন্য এবং অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে চেনানোর জন্য় শুভমনকে, আগামী সিরিজে দারুণ শক্তিশালী পারফরম্যান্সই করতে হবে। ভারতীয় ক্রিকেটে মজার ঘটনা ঘটে যদিও। বিশেষ করে যখন অধিনায়ক বাছাইয়ের প্রসঙ্গ আসে। তাই শুভমনের সুযোগ যে নেই, তা একদমই বলা যাবে না। তবে সবার আগে তাঁকে পারফর্ম করতে হবে।

 

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link