Mirza Ghalib: মৃত্যুর বাসনা নিয়ে বেঁচে থাকাই লেখা এ কবির ভাগ্যে!

Soumitra Sen Tue, 15 Feb 2022-8:00 pm,

দোয়াতে কলম ডুবিয়ে হলদে কাগজে আঁকিবুঁকি কাটছেন এক কবি। ঠিক আঁকিবুঁকিও নয়। কয়েকটি বাক্য লিখছেন। লিখছেন আর কেটে দিচ্ছেন। 'আমার শহরের নাম দিল্লি। আমার মহল্লার নাম বাল্লিমারান…' এগোচ্ছে না কলম। আবার কেটে দিচ্ছেন, কালি উপচে পড়ছে। পাতাটির চেহারাও খারাপ হয়ে পড়ছে। কবি ভাবছেন-- পাতাটি যেন হয়ে উঠছে তাঁর চেনা শহরটার মতোই!

কে তিনি? তিনি সম্রাট। তবে কোনও রাজ্যের বা দেশের নয়। তিনি কাব্য়সম্রাট, তিনি মনের রাজাধিরাজ। তিনি মির্জা গালিব। আজ, এই ১৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যুদিন। ১৮৬৯ সালের এই দিনেই তিনি প্রয়াত হয়েছিলেন। 

১৭৯৭ সালে আগ্রায় জন্ম নিয়ে ছিলেন মির্জা আসাদুল্লাহ খান। যদিও তিনি পরিচিত 'গালিব', নামেই। তাঁর নামের অর্থ? 'বিজয়ী'। জীবনে অনেক দুঃখকষ্ট পেয়েছেন তবে তিনি বিজয়ী তো বটেই। কবিতা দিয়ে কত মানুষের হদয় জয় করেছেন তিনি! আজও করছেন। আগামি দিনেও করবেন।

বলা হয় মোগল সাম্রাজ্য অস্ত যাওয়ার সময়টাই ছিল উর্দু কাব্যের সব চেয়ে অহঙ্কারের যুগ। উর্দু কাব্য বাইরের প্রকৃতির চাইতে মানুষের মনোজগতের দিকে তাকাতেই বেশি পছন্দ করত। আর দীর্ঘ দিনের শাসনের, সংস্কৃতির ছায়া থেকে সরে যাওয়ার কালে দেশের মনে ও মননে একটা দুর্যোগ যেন নেমে এসেছিল। মানুষের মন বিষণ্ণ হয়ে পড়েছিল। সেই মনের দিকেই তাকিয়েছিলেন মির্জা গালিব। সেই বেদনারই শ্রেষ্ঠ রূপকার তিনি।

গবেষকেরা বলেন, মাত্র ২৩৪টি গীতিকবিতা তাঁর সম্বল। আর তাতেই তিনি উর্দু কাব্যের অধীশ্বর। 

কবির মৃত্যু নেই। কবির কৃতির শেষ নেই। লিখে চলেন কবি। কলম চলতে থাকে তাঁর। শব্দের পরে শব্দ গাঁথা হয়। গালিবও লিখে চলেন--'দর্দ মিন্নতকশে দাওয়া না হুয়া/ হাম না আচ্ছা হুয়ে বুরা না হুয়া'; অর্থ-- বেদনা কমানোর জন্য মিনতি নয়/ আমি ভালো হলাম না, মন্দ হয়নি! লিখছেন--'নাদান হো জো ক্যাহতে হো কিঁউ জিতে হো গালিব/ মুঝ কো তো হ্যায় মরনে কি তামান্না কোই দিন অওর'; অর্থ-- কেন বেঁচে আছো গালিব—এই প্রশ্ন অবুঝের/ মৃত্যুর বাসনা নিয়ে আরো কিছু দিন বেঁচে থাকাই যে লেখা আমার ভাগ্যে!  

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link