Nowruz: ফুলরঙিন মৌমাছিরণিত নওরোজ! ইরানের সংস্কৃতিকে ছুঁল গুগল
রঙিন ফুলভার। সবুজ পল্লব, গুঞ্জনরত মোমাছি। এই নিয়েই গুগল আঁকল তার আজকের ডুডল। কেন আঁকল? আঁকল নওরোজ উৎসবকে মনে রেখে। সেই উৎসবকে শ্রদ্ধা জানাল তারা। গুগল ইদানীং অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে তার বহুত্ববাদিতার নানা উজ্জ্বল চিহ্ন রেখে চলেছে।
'নওরোজ' শব্দটি ফার্সি। 'নও' শব্দের অর্থ 'নব' বা 'নতুন' এবং 'রোজ' শব্দের অর্থ 'দিন'। নওরোজ ইরানি বর্ষপঞ্জির প্রথম দিন। এটি উদ্যাপিত হয় জ্যোতির্বিজ্ঞানভিত্তিক গণনার দ্বারা নির্ণীত মহাবিষুবের দিনে, যা সাধারণত ২১ মার্চ বা তার পূর্বাপর দিনে ঘটে। যেদিন সূর্যকিরণ নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে এসে পড়ে ও দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয় সেই দিনটিকে প্রতিবছর জ্যোতির্বিজ্ঞানের সাহায্যে নির্ণয় করে সমস্ত ইরানি পরিবার একত্রিত হয়ে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালন করে।
আজ সকাল থেকে গুগল সেজেছে রকমারি ফুলে। রয়েছে রঙ-বেরঙের ফুল, রয়েছে গিটার ও মৌমাছি। গুগলের এই চমক মন কেড়েছে সকলের। আর সেই ফুলে ক্লিক করলেই মিলছে নববর্ষের শুভেচ্ছা।
ইরানের গোলাপ খুব বিখ্যাত। ইরানের সংস্কৃতি খুবই সমৃদ্ধ। ইরানের সঙ্গীত ও কাব্যও সারা বিশ্বের রসিকজনের নজর কেড়েছে। সেই ইরানের নববর্ষ একটা আলাদা আবেদন তৈরি করে।
বসন্ত মানেই উজ্জ্বল দিন, সুনীল দীপ্ত আকাশ। চারিদিকে পলাশ, আরও নানা ফুলের মেলা, ফুলগন্ধময় মনোরম এক আবহাওয়া। এই পারস্যে পালিত হয় নববর্ষ। যা নওরোজ নামে পরিচিত। সেই বসন্তের আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতেই গুগলের এই উদযাপন।
ইরানী পুরাণে নওরোজের বিভিন্ন কাহিনি আছে। এই সময়ে বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশীদের সঙ্গে মিষ্টি বিনিময় করেন ইরানিরা। হার্ব রাইস ও মাছ ভাজা খাওয়ার একটা রীতি আছে সেখানে। সূর্য বিষুবরেখা অতিক্রম করলে ১৩ দিন ধরে সেখানে পালিত হয় উৎসব। এই সময় বাড়ি পরিষ্কার করা, আত্মীয়দের সঙ্গে দেখাসাক্ষাতের চল।
নওরোজ ইতিহাস সমৃদ্ধ। ৩০০০ বছর পুরনো সেই ইতিহাস। সূর্য যখন প্রথমবার বিষুবরেখা অতিক্রম করে সেই তিথি অনুসারে এই দিনটি নির্ধারণ করা হয়।
'নওরোজ' শব্দটা শুনলেই বাঙালির হয়তো কাজি নজরুল ইসলামের কথা মনে পড়ে। তাঁর বিখ্যাত 'নওরোজ' কবিতায় নজরুল লিখেছিলেন 'রূপের সওদা কে করিবি তোরা আয় রে আয়,/নওরোজের এই মেলায়!' এ ছাড়াও 'নওরোজ' শব্দটি বারবার ফিরে ফিরে এসেছে নজরুলের কবিতায়। নজরুলের সাহিত্যে মুসলমানি সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ নানা ভাবে উৎকীর্ণ থেকেছে।