জরুরি পরিস্থিতিতে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ ব্লক করার পরিকল্পনা কেন্দ্রের
জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় ফেসবুক, হেয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম-এর মতো জনপ্রিয় ও ইন্টারনেট নির্ভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর রাশ টানার বা 'ব্লক করা'র কথা ভাবছে ভারত সরকার।
ভুয়ো খবর ও হিংসাত্মক ভিডিও ও বার্তা ছড়িয়ে গণপ্রহারে মৃত্যুর ঘটনার পর হোয়াটসঅ্যাপের থেকে জবাব তলব করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, এই মেসেজিং অ্যাপের উত্তরে ভীষণভাবে অসন্তুষ্ট সরকার। আর তারপরই ফেসবুকের মালিকানাধীন তিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যের উপর রাশ টানার কথা ভাবা হচ্ছে।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯এ ধারা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় টেলি যোগাযোগ মন্ত্রক 'ব্লক' করার কথা ভাবছে। এ বিষয়ে, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের শিল্পমহল থেকে পরামর্শও চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
১৮ জুলাই একটি চিঠির মাধ্যমে কেন্দ্র টেলিকম অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন ও সেলুলার অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের কাছ থেকে পরামর্শ চেয়েছে।
৬৯এ ধারা অনুযায়ী, দেশের সার্বভৌমত্ব ও ঐক্য, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বৈদেশিক রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বিঘ্নিত বা ক্ষতিগ্রস্থ হলে কেন্দ্রীয় সরকার ইন্টারনেট মাধ্যম দ্বারা সংবাহিত তথ্যকে ব্লক করতে পারে।
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারা ভাইরাল হওয়া গুজব ও মিথ্যা খবরের জন্য সম্প্রতি দেশের নানা রাজ্যে গণপিটুনিতে প্রাণনাশের ঘটনা ঘটে চলেছে। এরপরই হোয়াটসঅ্যাপকে চিঠি দিয়ে তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সরকার।
টেলিকম মন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, সরকারের এই চিঠির প্রেক্ষিতে হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, নির্দিষ্ট মেসেজ বা বার্তা ঠিক কোথা থেকে ছড়ানো শুরু হচ্ছে এবং সেগুলির কী বিষয়বস্তু, তা সংস্থার পক্ষে জানা সম্ভব নয়। অথচ, সরকার এই বিষয়টি সম্পর্কেই সংস্থাটির দায়বদ্ধতা দাবি করছে। উল্লেখ্য, ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য এই অ্যাপ 'এন্ড টু এন্ড এনক্রিপ্টেড'। অর্থাত্, প্রেরক ও প্রাপক ছাড়া আর কেউ মেসেজ দেখতে পায় না। এমনকী, সংস্থারও বার্তা দেখতে পায় না বলে দাবি।
হোয়াটসঅ্যাপ-এর এমন উত্তরে সরকারের বিচলিত হওয়ার কারণের কোনও সমাধান তো মেলেইনি, বরং তা আরও বেড়ে গিয়েছে।
ক্ষুব্ধ সরকার এরপরই দ্বিতীয় চিঠিতে হোয়াটসঅ্যাপ-কে স্পষ্ট ভাষায় বলেছে, তারা যদি বার্তার বিষয়বস্তু খতিয়ে না দেখে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, সেক্ষেত্রে তাদেরও এই কুকর্মে 'অংশগ্রহণকারী' হিসাবে দেখা হবে। এবং সরকার সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, হোয়াটাসঅ্যাপ কেন্দ্রকে জানিয়েছে যে তারা ভারতে আঞ্চলিক টিম গড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে 'ইন্ডিয়া হেড' নামক পদ সৃষ্টির কথাও ভাবা হচ্ছে।