১৭ বছর পর মুখ খুললেন ওসামা বিন লাদেনের মা, কারণ দেখিয়ে বললেন, `আমার ছেলে ভালই ছিল`
১৭ বছর ধরে তিনি চুপ করেই ছিলেন। কিন্তু আর পারলেন না। হঠাত্ করে ছেলের কথা উঠতেই চোখ ভিজে গেল তাঁর। আলিয়া ঘানেম, বিশ্বের সব থেকে চর্চিত সন্ত্রাসবাদী ওসামা বিন লাদেনের মা এখন থাকেন সৌদি আরবের জেদ্দায়।
কিং আবদুলাজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন লাদেন। সেখানেই কিছু মানুষ তাঁঁর ব্রেনওয়াশ করে বলে দাবি লাদেনের মায়ের। আল-কায়দা নামের এক সংগঠন গড়ার স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই নাকি দেখতে শুরু করেছিলেন লাদেন।
লাদেনের মা এখনও বিশ্বাস করতে পারেন না যে তাঁর ছেলে এত বড় সন্ত্রাসমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাঁর বিশ্বাস, ছোট থেকেই শান্তশিষ্ট ভালো ছেলে ছিল লাদেন। সে কিনা এমন কাজ করবে!
কিছুদিন আগেই লাদেনের ছেলে হামজাকে এক ভিডিও বার্তায় বলতে শোনা গিয়েছে, ''আমেরিকাকে আমার বাবার মৃত্যুর মূল্য চোকাতে হবে। বাবার মৃত্যুর বদলা নেব আমি।'' হামজার এমন হুমকির পর থেকে গোটা বিশ্ব দ্বিতীয় লাদেনের জন্ম হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
এক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাত্কার দিলেন ঘানেম। সৌদি আরবে এখনও প্রভাবশালী লাদেনের পরিবার। কিন্তু বহির্জগতের সঙ্গে ঘানেমের এখন আর কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি একা। সন্তানহারা।
''কিছু কুচক্রীর সঙ্গে ওর আলাপ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়। তখন ওর কম বয়স। ওই কুড়ি বছরের আশেপাশে। ওই বদ লোকগুলোই আমার ছেলেটার মাথায় অপরাধমূলক চিন্তা-ভাবনা ঢুকিয়ে দিয়েছিল। আমি যে লাদেনকে চিনতাম সে ধর্মীয় ভাবাবেগে আস্থা রাখা একজন ছিল। কিন্তু পরের দিকে ওর মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করতাম। কিছু জিজ্ঞাসা করলে অস্বীকার করত।'' বলছিলেন ঘানেম।
জাদ্দার এক অভিজাত এলাকায় বিশাল প্রাসাদে থাকেন লাদেনের মা। কিন্তু এত যশ, এত ঐশ্বর্য তাঁকে আর শান্তি দেয় না। ছেলের শোকে তিনি রোজ পুড়ছেন। ঘানেম বলছিলেন, ''ওকে বিপথে চালিয়ে কিছু মানুষের স্বার্থসিদ্ধি হয়েছে। আমি বহুবার ওকে এসব থেকে দূরে সরে যেতে বলেছি। কিন্তু ও আমাকে সত্যি কথা কখনও বলত না। আমাকে খুব ভালবাসত। তাই কষ্ট দিতে চায়নি কখনও।''
লাদেনের মায়ের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আবদুল্লা আজাম নামের একজনের সঙ্গে আলাপ হয় লাদেনের। তার পর থেকে সেই আজামকেই ধর্মীয় গুরু হিসাবে মানতে শুরু করে লাদেন।
খবর ছিল, আল কায়দা জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান পাকিস্তানে গা ঢাকা দিয়েছিল। ২০১১-য় গোপনসূত্রে খবর পেয়ে আমেরিকার বিশেষ ফোর্স সিল হানা দেয় লাদেনের গোপন ডেরায়। আমেরিকার দাবি, মিনিট কয়েকের অপারেশনে খতম হয় বিশ্ব-সন্ত্রাসের পাণ্ডা।
৯/১১ আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার হানার মূলচক্রী লাদেন। ২০০১-এ সেই সন্ত্রাসহানায় ২৯৭৭ জনের মৃত্যুর রেকর্ড রয়েছে।
পরিবারের দাবি, শেষবার লাদেনের সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়েছে ১৯৯৯ তে। কান্দাহার বিমানবন্দরের কাছে এক জায়গায়।