এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকর ও শক্তিশালী ৫ করোনা-রোধী ‘অস্ত্র’!

Sudip Dey Thu, 18 Jun 2020-4:35 pm,

এ পর্যন্ত সারা বিশ্বের সাড়ে ৪ লক্ষেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। তবে এ বার এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মানব সভ্যতা। অন্তত তিনটি করোনা প্রতিষেধক বাজারে আসার অপেক্ষায় রয়েছে, চলছে চূড়ান্ত পর্বের ট্র্যায়াল। এ ছাড়াও রুশ বিজ্ঞানীদের তৈরি ওষুধ ‘অ্যাভিফ্যাভির’ (Avifavir) এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি স্টেরয়েড ‘ডেক্সামেথাসোন’ প্রয়োগ করে করোনার বিরুদ্ধে আশাতীত ফল মিলেছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকর ও শক্তিশালী ৫টি করোনা-রোধী ‘অস্ত্র’ সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য!

সম্প্রতি সোরেন্টো থেরাপিউটিক্স (Sorrento Therapeutics) নামের মার্কিন বায়োটেকনোলজি সংস্থার বিজ্ঞানীদের দাবি, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার ১০০ শতাংশই রুখতে সক্ষম, এমন অ্যান্টিবডির খোঁজ পেয়েছেন তাঁরা! করোনা প্রতিরোধী এই অ্যান্টিবডির নাম STI-1499। মাস খানেক ধরে করোনার বিরুদ্ধে ডজন খানেক অ্যান্টিবডিকে পরীক্ষা করে দেখার পর বিজ্ঞানীরা STI-1499 অ্যান্টিবডির ১০০ শতাংশ COVID-19 রোধী ক্ষমতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। এই STI-1499 অ্যান্টিবডিকে কাজে লাগিয়ে এমন ওষুধ তৈরি করতে চাইছে যা করোনার বিরুদ্ধে সুরক্ষার ঢাল তৈরির পাশাপাশি ভাইরাসের পরিবর্তিত চরিত্রের গঠন বুঝে তাকে নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করবে।

করোনা প্রতিষেধকের শেষ পর্যায়ের ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ শুরু করতে চলেছে মার্কিন সংস্থা মোদার্নার গবেষকরা। মোট তিন পর্যায়ে মোদের্না আরএনএ ভ্যাকসিন (Moderna RNA vaccine)-এর ট্রায়াল হচ্ছে। তৃতীয় পর্যায়ের ‘হিউম্যান ট্রায়াল’-এর ফলাফল হাতে আসার পর বাণিজ্যিক উৎপাদনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। সংস্থার দাবি, mRNA-1237 ওষুধটি সরাসরি ভাইরাসকে ধ্বংস না করলেও শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। জুলাই মাসের মধ্যেই mRNA-1237 ওষুধটির শেষ পর্যায়ের ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ সেরে ফেলতে চায় সংস্থা। তার পরই এর উৎপাদন শুরু করবে মোদার্না।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি প্রতিষেধকটির তৃতীয় তথা অন্তিম পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, মোট ৪২ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে এ বার এই টিকা প্রয়োগ করা হবে। এই প্রতিষেধকের উৎপাদনের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট ‘অ্যাস্ট্রা জেনিকা’ (AstraZeneca) এবং বিশ্বের বৃহত্তম টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটও (Serum Institute of India)। সেপ্টেম্বরে মধ্যেই ২০০ কোটি ডোজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে একজোটে এগোচ্ছে এই দুই সংস্থা। এই প্রতিষেধক এক বছর পর্যন্ত করোনার থেকে সুরক্ষা দিতে পারবে বলে জানিয়েছে অ্যাস্ট্রা জেনিকা।

১১ জুন থেকেই রাশিয়ার হাসপাতালগুলিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্রয়োগ করা হচ্ছে রুশ বিজ্ঞানীদের তৈরি ওষুধ ‘অ্যাভিফ্যাভির’ (Avifavir)। এই ওষুধকে করোনার চিকিৎসায় এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী এবং কার্যকরী বলে দাবি করেছেন রুশ বিজ্ঞানীরা। রুশ বিজ্ঞানীরা জানান, মাত্র চার দিনের মধ্যেই ‘অ্যাভিফ্যাভির’ ৬৫ শতাংশ করোনা রোগীকে সম্পূর্ণ সারিয়ে তুলেছে। মাত্র ১০ দিনের মধ্যে ৯০ শতাংশ করোনা রোগীকে সম্পূর্ণ ভাইরাস মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে এই ওষুধ। এখনও পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে সফল ভাবে ও দ্রুততার সঙ্গে রোগীদের করোনা-মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।

করোনার চিকিৎসায় সস্তার ‘জীবনদায়ী’ ওষুধের খোঁজ দিয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। করোনার চিকিৎসায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি স্টেরয়েড ‘ডেক্সামেথাসোন’ (Dexamethasone)-এর ‘জীবনদায়ী’ প্রভাবের প্রমাণ পেয়েছেন ব্রিটিশ গবেষকরা। ভারতীয় মূল্যে মোটামুটি ২০ টাকা দামের ডেক্সামেথাসোন প্রয়োগ করে অক্সফোর্ডের গবেষকরা দেখেছেন, রোগীদের মৃত্যুর হার কমিয়েছে প্রায় ৪১ শতাংশ। এই ওষুধের প্রয়োগে অক্সিজেনের সাহায্য নেওয়া গুরুতর অসুস্থ করোনা আক্রান্তদের মৃত্যুর হার কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং স্থিতিশীল করোনা রোগীদের মৃত্যুর হার প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে। এই ওষুধ করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অগ্রগতি ঘটাবে, মত উচ্ছসিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO-এর!

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link