Hilsa: পাতে ইলিশ না বিষ? চিনে খান, ভালো খান...
সৃজিতা মৈত্র: মাছ ছাড়া ভাত, এটা ভাবলেই বাঙালিদের মন মেজাজ সব ঝুলে যায়। মাছে ভাতে বাঙালি, কথাটা তো লোকে এমনি এমনি বলে না। তার ওপর যদি পাতে থাকে ইলিশ। আহা, এ স্বাদের এবং আনন্দের ভাগ হবে না। কিন্তু এই ইলিশেই যদি বিষ থাকে! পেটকে আর মনকে আরাম দিতে গিয়ে নিজের অজান্তে শরীরের ক্ষতি করে ফেলছেন না তো!
সম্প্রতি কেরলের স্বাস্থ্য দপ্তর কোল্লাম জেলার আরায়াঙ্কভু সীমান্ত চেকপোস্ট থেকে প্রায় ১০ হাজার কেজি ফর্মালিনযুক্ত মাছ উদ্ধার করেছে। ফর্মালিন হচ্ছে অত্যন্ত বিষাক্ত পচনরোধী রাসায়নিক। কাঠের বিভিন্ন আসবাবপত্র বা কাপড় তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমনকী মর্গে মৃতদেহ সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়। আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থা ও আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন উভয়েই এটিকে মানব দেহের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর রাসায়নিক হিসেবে ঘোষণা করেছে। সেই ফর্মালিন এবার মাছেও ব্যবহার করা হচ্ছে।
এমনিতেই দিনের পর দিন বরফে রেখে মাছ সংরক্ষণ করা হয়। আরও বেশি দিন সংরক্ষণ করতেই এই পদ্ধতি অবলম্বন করা। ফর্মালিন দেওয়া মাছ উদ্ধার করতে কেরলে ‘অপারেশন সাগর রানি’ নামক একটি অপারেশন চালু করা হয়েছে।
এই অপারেশন শুরু হওয়ার পর থেকে আরও ৭ হাজার কেজি চিংড়ি ও প্রায় আড়াই হাজার কেজির অন্যান্য প্রজাতির মাছ সহ প্রায় ২১ হাজার কেজির বেশি ফর্মালিনযুক্ত মাছ উদ্ধার করেছে কেরলের প্রশাসন। এখানেই শেষ নয়। সারা দেশে ফর্মালিনযুক্ত মাছ বিক্রির নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরও নাগাল্যান্ড থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার চারটি ফর্মালিনযুক্ত মাছ বোঝাই করা লরি আটক করা হয়েছে।
ফর্মালিন মানুষের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। এটি স্লো পয়জনের মতো কাজ করে। শরীরে এর প্রবেশ ঘটলেই চোখে জলের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে কাশি, শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, ত্বকে জ্বালা আরও নানা ধরণের সমস্যা দেখা যায়। শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় ফর্মালিনের প্রবেশ ঘটলে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগও দেখা দেয়।
নিশ্চয়ই এবার মনে প্রশ্ন জাগছে, তা হলে কি বাজার থেকে কেনা মাছ খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে? একদমই না। মাছে ফর্মালিন দেওয়া আছে কি নেই, তা খুব সহজেই বুঝে নেওয়া সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেসব মাছে ফর্মালিন ব্যবহার করা হয় সেগুলি খুব শক্ত হয়ে যায়। এমনকী মাছের আঁশগুলিও তুলনামূলক শক্ত হয়। আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ফর্মালিন দেওয়া মাছে মাছি বসে না। তা হলে, সামান্য কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখলেই মন ভরে ইলিশের স্বাদের মজা নিতে পারবেন।