Purulia Nakkata Kali: ডাকাতি করতে এসে কী দুর্দশা! ২০০ বছর ধরে পুজো পাচ্ছেন নাক কাটা কালী...
মনোরঞ্জন মিশ্র: চাষের ক্ষেত ভরে গেছে ধানে, সেই ধান লুঠ করতেই হামলা করে ডাকাত দল । রুখে দাঁড়ায় স্বয়ং কালী আর সেই হামলায় কাটা যায় কালী মায়ের নাক। চিহ্নভিন্ন করে দেওয়া হয় মায়ের মূর্তি। সেই থেকে আজও নাককাটা কালী হিসেবেই পুজো হয়ে আসছে মায়ের মূর্তি। এই পুজো হয়ে আসছে পুরুলিয়া শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চিরাবাড়ি এলাকায়।
কথিত আছে, আজ থেকে প্রায় দুশ বছর আগে এই এলাকা ছিল জনমানবহীন। পা রাখলে যেন গা ছমছম করে উঠত সাধারণ মানুষের। এলাকা জুড়ে ছিল বিঘের পর বিঘে ধানের জমি। প্রতি পাকা ধানের ফসল লুঠ করে পালাত ডাকাতের দল, লুঠ চালাত বাসিন্দাদের বাড়িতেও ।
তারপর এলাকার বাসিন্দারা ডাকাতদলের হাত থেকে নিজেদের ও ফসলকে রক্ষা করতে অশ্বত্থ গাছের নিচে শ্যামা মায়ের আরাধনা শুরু করেন। ডাকাতরা এলাকায় পা রাখলেই শ্যামা মায়ের নূপুরের আওয়াজে ঘুম ভাঙত এলাকাবাসীদের। ভয়ে পালাত ডাকাতের দল । রাগে, ক্ষোভে ডাকাত দলটি শ্যামা মায়ের মূর্তি ভেঙে দেয়, মায়ের নাক কেটে দেয় ।
এই ঘটনার পর একে একে ডাকাতদলের সদস্যদের সঙ্গেও অঘটন ঘটে। মৃত্যু হয় তাদের, পরিবারে দেখা দেয় অভাব অনটন। তারপর থেকেই মায়ের চিহ্নভিন্ন মূর্তি নাককাটা কালী হিসেবে পুজিত হয়ে আসছে এই স্থানে। চারপাশে মন্দিরের চাতালে মায়ের শরীরের অংশ ছড়িয়ে রয়েছে। হাত, পা, জিভ, নাক।
আজও অতীতের রেওয়াজ মেনে প্রতিদিন মায়ের হয় এখানে । তবে কালীপুজোর চারদিন আলাদা আমেজ থাকে এই উৎসবে। কথিত আছে এখানে মানত করলে তা পূরণ হয়ই। তাই পুজোর রাতে ভিড় উপচে পড়ে।
মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে একটি অশ্বত্থ গাছ । মন্দিরের পাশেই পুজো হয় বজরংবলি এবং শিবের। কালী পুজোকে ঘিরে দু’দিন পংক্তি ভোজন হয়। পুজো শেষে মধ্যরাতে খিচুড়ি প্রসাদ পেতে বহু মানুষের পাত পড়ে।
সেই সঙ্গে পুজোর পরের দিন বলির মাংস দিয়ে খিচুড়ি হয়। যে প্রসাদ পাওয়ার জন্য রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আজও পুরনো রীতিনীতি মেনে ভক্তি শ্রদ্ধার সঙ্গে মায়ের পুজো দেন ভক্তরা ।