কেন হোলি উদযাপন করি? জেনে নিন রঙের উত্সবের আখ্যান
বসন্তে রঙের উত্সবে মেতে ওঠে আসমুদ্রহিমাচল। বিদেশেও বহু জায়গায় রং রাঙানোর উত্সব উদযাপিত হয়। ফাল্গুন পূর্ণিমায় খেলা হয় দোল।
'হোলিকা' থেকে হোলি শব্দটি এসেছে। পৌরাণিক মতে, ব্রহ্মার বরপ্রাপ্ত রাক্ষসরাজ হিরণ্যকসিপুর অত্যাচার ক্রমেই বাড়ছিল। নিজেকেই ঈশ্বর বলে দাবি করেছিলেন হিরণ্যকসিপু। তাঁর ছেলে প্রহ্লাদ আবার বিষ্ণুর উপাসক। বাবার বারণ সত্ত্বেও বিষ্ণুর উপাসনা ছাড়েনি প্রহ্লাদ। ছেলেকে মারতে উদ্যত হয়ে ওঠেন রাক্ষসরাজ। প্রহ্লাদকে ছেড়ে দেওয়া হাতির সামনে। তাতেও ব্যর্থ হওয়ায় বিষধর সাপের ঘরে আটকে রাখা হয় প্রহ্লাদকে।
হিরণ্যকসিপুর বোন হোলিকা। দাদার নির্দেশে প্রহ্লাদকে নিয়ে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে বসে পড়েন হোলিকা। বলে রাখি, হোলিকাও ব্রহ্মার বর পেয়েছিলেন। আগুনও তাঁকে জ্বালাতে পারত না। কিন্তু সেই বিদ্যে ভুল কাজে ব্যবহার করা হয় কাজে দেয়নি। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় হোলিকার বেঁচে যায় প্রহ্লাদ।
প্রতিবছর হোলির আগের দিন তাই হোলিকাদহন করে অশুভশক্তির নাশ করে দেশবাসী। দক্ষিণ ভারতে আবার হোলিক দহন, কাম দহন নামে পরিচিত। অর্থাত্ অহঙ্কার, লোভ, হিংসাকে দহন করা হয়।
তবে মথুরা-বৃন্দাবনের হোলি আবার আলাদা। সেখানে রঙের সঙ্গে মিলেমিশে যায় প্রেমের খেলা। পুরাণ মতে, রাধার সঙ্গে রং খেলেছিলেন শ্রী কৃষ্ণ। আজও মথুরা, বৃন্দাবনে রংপঞ্চমী খেলা হয় ১৬ দিন ধরে।
হোলিতে ভাং ও নানা ধরনের ভাজাভুজির সঙ্গে জমিয়ে হোলি খেলা হয় উত্তর ভারতে। বাংলায় ভাং অতটা প্রচলিত নয়।
আগে নিম, কুমকুম, হলুদ, বিল্ব, চন্দন দিয়ে তৈরি হত রং। বর্তমানে নানা ধরনের সিন্থেটিক রং ব্যবহার করা হয়। ত্বকের সমস্যা এড়াতে প্রাকৃতিক রঙে হোলি খেলুন।