ইমিউনিটি বুস্টার আবার বুদ্ধিও বাড়ায়;করোনাকালে মেনুতে রাখুন এই সব খাবার
পেটপুজো তো প্রতিদিনের ব্যাপার। অতিমারী হোক আর বন্যা-ভূমিকম্প হোক, খেতে তো আপনাকে হবেই। এবং খেয়াল রাখতে হবে সন্তানের ফুড ইনটেকের কোয়ালিটির বিষয়টিও। এই সময়টায় এমন জিনিস খেতে হবে, যা একই সঙ্গে ইমিউনিটি বুস্টার আবার মগজের শক্তিও বাড়ায়, দেয় সামগ্রিক পুষ্টি। পুষ্টি বিশেষজ্ঞেরা সেইরকমই কতগুলি পদের সুপারিশ করছেন।
সমস্তরকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে লড়ার জন্য শরীরের দরকার সুষম আহার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের খাবারের ২০% শর্করা এবং শক্তি মস্তিষ্কে যায়। আর মস্তিষ্কের কাজের অনেকটাই নির্ভর করে তার গ্লুকোজের মাত্রার উপরে। আরও কিছু খাবার মাথার গ্রে-ম্য়াটার রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, লেবু, আঙুর, আনারস জাতীয় ফল। এই ধরনের ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি' থাকে। দুশ্চিন্তা বা অবসাদের মতো সমস্যায় খুবই কাজে দেয় ভিটামিন 'সি'।
এই সময়টায় আর একটা জিনিস বাড়িতে তৈরি করে খেতে পারেন। সেটা হল garlic soup। এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট প্রচুর। রসুন শরীরে ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রুখতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণ করে। বাড়িতে কী ভাবে বানাবেন এই স্যুপ? এর উপকরণ হল-- রসুন ৫ কোয়া, মাখন- ২ টেবিল চামচ, অলিভ অয়েল- ২ টেবল চামচ, পেঁয়াজ ২টি, চিকেন স্টক বা ভেজিটেবল স্টক- সাড়ে ৪ কাপ, পার্সলে পাতা পরিমাণমতো, পাউরুটির টুকরো ৩ কাপ। ইচ্ছা হলে ১ কাপ ক্রিমও দিতে পারেন। রসুনের কোয়া টিনের ফয়েলে ৯০ মিনিট বেক করুন। ৫ মিনিট ঠান্ডা করে নিন। এদিকে যতক্ষণ রসুন গরম হচ্ছে ততক্ষণ মাঝারি আঁচে ২ টেবল চামচ অলিভ অয়েল ও মাখন গরম করে নিন। এতে পেঁয়াজ দিয়ে মিনিটদশেক নাড়ুন। রসুন থেঁতো করে এতে মিশিয়ে দিন। পার্সলে ও স্টক দিন। এ বার ছিঁড়ে রাখা পাউরুটির টুকরো দিয়ে এই মিশ্রণটি ৫ মিনিট ফোটান। এ বার এই পুরো ব্যাপারটা ব্লেন্ডারে দিয়ে মিহি করে পেস্ট তৈরি করে নিন। ওই পেস্ট স্যুপের বাটিতে ঢেলে তাতে ক্রিম, নুন ও গোলমরিচ মিশিয়ে নিন। ব্যস! তৈরি। এই গার্লিক স্যুপ যদি প্রতিদিন খেতে পারেন তাহলে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজনই পড়বে না।
মাছও বুদ্ধিবৃত্তির লালনপালনে ভাল কাজ করে। মানবমস্তিষ্কের প্রায় ৬০ শতাংশ ফ্যাট দিয়ে তৈরি। যার অধিকাংশই ওমেগা-৩ জাতীয় ফ্যাট। এই ওমেগা-৩ যুক্ত মাছ স্মৃতিশক্তির পক্ষে ভাল। ফলে মেনুতে রাখতেই পারেন এই জাতীয় মাছ।
ডিম খান প্রচুর। প্রচুর মানে নিয়মিত। সন্তানকেও দিন। সেদ্ধ সব চেয়ে ভাল অপশন। একান্ত মুখবদল করতে চাইলে ভুজিয়া বা ওমলেটও চলতে পারে। ডিমের প্রোটিন শরীরে সাধারণ পুষ্টি তো জোগায়ই, দেয় রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'বি' থাকে। এতেও ব্রেন ফাংশন ভাল থাকে।
এই করোনা-পর্বে গ্রিন টি খুব ভাল জিনিস। এতে মস্তিষ্ক চাঙ্গা থাকে, পাওয়া যায় কাজের উদ্যম। আগাগোড়া তরতাজা লাগে। মুড ঠিক করে দেয়।
ডার্ক চকোলেট ঠিক এই সময়টার জন্য খুব ভাল। ইমিউনিটি তো জোগায়ই, পাশাপাশি স্মৃতিশক্তিকেও ভাল করে। আর চকোলেটের ক্ষেত্রে একটা দারুণ ব্যাপার হল, এটা মনকে অত্যন্ত ফুরফুরে করে দেয়। যে কোনও রোগের সঙ্গে লড়তে গেলেই এই ফুরফুরে মন খুব কাজে দেয়।
আমরা সকালে সাধারণত চা পান করি। এই গরমে কফির চেয়ে চা নিঃসন্দেহে ভাল। কিন্তু মাঝেসাজে কফি খেলে মন্দ হয় না। কারণ কফিতে রয়েছে ক্যাফেইন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে এবং ইমিউনিটির ক্ষেত্রেও খুবই ভাল।