অর্থনীতির ছাত্র থেকে ভারতের পুলিৎজার জয়ী চিত্রসাংবাদিক! এক নজরে Danish-জীবনী
সাংবাদিক অর্থেই দুর্গম পথ পেরিয়ে খবরের সন্ধানে এগিয়ে চলা। চিত্র সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে সে পথ দুর্গমতর৷ লেন্সবন্দী দৃশ্যের টানে চির উন্নত শির নিয়েই লক্ষ্যভেদে নামতে হয়৷ আর সেই পেশা ও নেশার সন্ধানে গিয়েই নিহত হলেন পুলিৎজার জয়ী ভারতীয় চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি।
কান্দাহারে স্পিন বলডাক জেলায় সেই অশান্ত পরিস্থিতির ছবি তুলতে গিয়েছিলেন ৷ কিন্তু মুহুর্তকে বন্দী করার আগেই জীবনের 'শাটার' নামল। সূত্রের খবর, গুলি করেই খুন করা হয়েছে এই স্বনামধন্য চিত্রসাংবাদিককে।
বয়সের তুলনায় দানিশের এই 'চলে যাওয়া' বেমানান। ৪০ এর যুবকের বাড়ি মুম্বাইয়ে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকের পাঠ শেষে মাস কমিউনিকেশনের একটি কোর্স করেন। টেলিভিশন সাংবাদিক হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন দানিশ সিদ্দিকি।
যদিও পরবর্তীতে চিত্র সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে শিক্ষানবীশ চিত্র সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন। কর্মদক্ষতা দিয়ে অনায়াসেই সংস্থার প্রধান চিত্র সাংবাদিকের পদ পান দানিশ।
এরপর কেরিয়ারের ঝুলিতে দুর্ধর্ষ সব ঘটনাকে ফ্রেমবন্দি করার পুরস্কার। ইরাকের মসুলের যুদ্ধ, ২০১৫ সালে নেপালের ভূমিকম্পের ছবি, ২০১৯-২০ এ হংকং প্রোটেস্ট, ২০২০ সালে দিল্লির দাঙ্গায় দানিশ সিদ্দিকির তোলা সেই সব ছবি মোচড় দেওয়া। যেখানে ফ্রেমই শব্দ, বাকি সব 'শব্দহীন'।
২০১৮ সালে সহকর্মী আদনান আবিদির সঙ্গে ফিচার ফোটোগ্রাফিতে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন দানিশ।
বৃহস্পতিবার তালিবান জঙ্গিদের গুলিতেই গুরুতর জখম হয়েছিলেন তিনি, এমন খবর শোনা যায় সূত্র মারফত। আহত অবস্থায় চিত্র সাংবাদিককে শিবিরে রেখেই আফগান সেনারা তালিবান বিরোধী অভিযানে গিয়েছিলেন।
কিন্তু ফের হামলা হল সেই শিবিরেই। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দানিশ সিদ্দিকির।শোকে স্তব্ধ সহকর্মীরা। সম্প্রতি একটি টুইট করেছিলেন চিত্র সাংবাদিক। ছবিতে তিনি চোখ বন্ধ করে শুয়ে রয়েছেন। লিখেছেন- "সারারাত যুদ্ধকালীন অপারেশনের পর ১৫ মিনিটের ব্রেক নিচ্ছি"। ব্রেক নিলেন। রাত জাগার প্রহর শেষে তালিবানি গুলিতে দানিশ আজ ব্রেক নিলেন।