যাত্রী সুরক্ষায় নতুন ব্যবস্থা ভারতীয় রেলের
ভারতে রেলযাত্রা দিন দিন যাত্রীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে নতুন নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে মন্ত্রক।
একদিকে যেমন দুর্ঘটনা এড়াতে যাত্রী নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হচ্ছে, তেমনই একের পর এক নতুন পরিষেবা ও প্রযুক্তিগত সুবিধা যুক্ত হচ্ছে ট্রেনের কামরায়। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ থেকে সুরক্ষা সবেতেই আসছে বদল।
এক জনস্বার্থ মামলার ফলে দূরপাল্লার ট্রেনে এবার থেকে সাধারণ ফার্স্ট এইড বক্সের বদলে থাকছে অত্যাধুনিক মেডিক্যাল বক্স।
৮৮টি জীবনদায়ী ওষুধ ও ফার্স্ট এইড কিট থাকবে এই মেডিক্যাল বক্সে। আর তা ব্যবহারের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে টিকিট পরীক্ষক ও ট্রেনের গার্ডদের।
সম্প্রতি জয়পুর-কোটা রুটের একটি ট্রেনে এক যাত্রীর মৃত্যুর পরই সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করা হয়। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত।
দিল্লির এইমস হাসপাতালের একদল চিকিত্সককে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তারাই ঠিক করেন এই মেডিক্যাল বক্সের ভিতর কী কী উপাদান রাখা হবে।
প্রধানত আপতকালীন ও জীবনদায়ী ওষুধ এবং ফার্স্ট এইড কিটের কথা মাথায় রেখেই সাজানো হয়েছে এই মেডিক্যাল বক্স।
গত এপ্রিল মাস থেকে বিভিন্ন রুটে দূরপাল্লার ট্রেনে এই মেডিক্যাল বক্স থাকবে। প্রাথমিক ভাবে তাতে ৫৮টি উপকরণ রাখা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ১৬৮টি ট্রেনে এই মেডিক্যাল বক্স দেওয়া হয়েছে। চিহ্নিত করা হয়েছে প্রতিটি জোনের বেশকিছু প্রিমিয়াম ও সেমি প্রিমিয়াম ট্রেনও। অল্প দিনের মধ্যেই তাতেও এই অত্যাধুনিক মেডিক্যাল বক্স দিয়ে দেওয়া হবে।
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, চলন্ত ট্রেনে কোনও যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়ার জন্য থাকছে এই কিট। তবে এতদিন যে উপকরণ রাখা হত ফার্স্ট এইড কিটে তার থেকে অনেকটাই আলাদা এই বক্স।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী কী থাকছে এই কিটে-
অক্সিজেন সিলিন্ডার
ল্যারিঙ্গোস্কোপ
ক্যাথেটার্স
সিরিঞ্জ
বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিসেপ্টিক, জীবনদায়ী ট্যাবলেট, ব্যান্ডেজ ও বিভিন্ন রকম মলম।
উল্লেখযোগ্য ভাবে যে উপাদান যুক্ত করা হল এই নতুন মেডিক্যাল বক্সে তা হল ডেলিভারি কিট। এর সাহায্যে কোনও প্রসূতির জরুরি প্রসব করাতে পারবেন ট্রেনে থাকা চিকিত্সক। ফলে এড়ানো যাবে বিপদ।
৮৮টি উপাদানের পাশাপাশি, তৈরি রাখা হচ্ছে প্রতিটি স্টেশনে ডাক্তারদের একটি বিশেষ দল। সেই সঙ্গে যাতে কোনও বিপদে সংশ্লিষ্ট এলাকার রেল হাসপাতালে সেই রোগীকে সঙ্গে সঙ্গেই ভর্তি নেওয়া হয়, সেই ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে।
প্রতিটি ট্রেনে থাকা টিকিট পরীক্ষক, গার্ড ও স্টেশন মাস্টারকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে এই ধরনের বিপদ হলে তাতে দ্রুত কাজ করতে পারেন।
দেশের প্রতিটি জোনেই এই বিশেষ ব্যবস্থা যাতে দ্রুত কার্যকর করা যায় সে জন্য জোরকদমে কাজ চালাচ্ছে ভারতীয় রেল।