India`s Controversial Encounters: পুলিস অফিসারের জেল থেকে ফুলে বরণ! ইশরত থেকে হায়দরাবাদ গণধর্ষণ, বিতর্কিত এনকাউন্টারগুলি
ইশরত জাহান ছিলেন মুম্বইয়ের একজন ১৯ বছর বয়সী তরুণী। যিনি ২০০৪ সালে এনকাউন্টারে নিহত হন। গুজরাট পুলিসের সাথে সেই এনকাউন্টারে তিনজন পুরুষও নিহত হন। পুলিস বলেছিল, ইশরত জাহান গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল। এই এনকাউন্টার নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়। সুপ্রিম কোর্ট এই এনকাউন্টারে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। যেখানে গুজরাটের বেশ কয়েকজন পুলিস অফিসারের ভূমিকা তদন্তের আওতায় আসে। ডিজি ভানজারা, পুলিস অফিসার যিনি এই এনকাউন্টারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাঁর জেল হয়। ১৭ বছর পর, ২০১৯ সালে মুক্তি পান তিনি।
২০০৫ সালে গুজরাট পুলিসের সাথে এনকাউন্টারে সোহরাবুদ্দিন শেখ ও তাঁর স্ত্রী কাউসার বি নিহত হন। পুলিস জানায়, সোহরাবুদ্দিন লস্কর-ই-তইবা (এলইটি) মডিউলের অংশ ছিল। আদালতের হস্তক্ষেপে এই মামলাটিও সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরিত হয়। তৎকালীন গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর ২০১৮ সালে বিশেষ সিবিআই আদালত প্রমাণের অভাবে ২২ অভিযুক্তকে খালাস করে দেয়।
২০০৮ সালে দিল্লিতে বাটলা হাউস এনকাউন্টার হয়। যা নিয়ে বলিউডে সিনেমাও হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৮-এ, দিল্লি পুলিসের একটি বিশেষ দল জামিয়া নগরের বাটলা হাউসে এনকাউন্টারটি চালায়। যেখানে ইনসপেকটর মোহন চাঁদ শর্মার সাথে ভারতীয় মুজাহিদিনের ২ সন্দেহভাজন জঙ্গি নিহত হয়। শর্মা একজন এনকাউন্টার বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই হয় এনকাউন্টার অপারেশনটি। দিল্লিতে বিস্ফোরণের পর এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল! বাটলা হাউজে সেটাই ২০ মিনিটের বন্দুক-যুদ্ধে পরিণত হয়। অনেকেই এই এনকাউন্টারের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। পরে দিল্লি পুলিস ক্লিনচিট পায়।
২০০৮ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিস ওয়ারাঙ্গালে ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করেছিল। এই ঘটনায় জনসাধারণ পুলিসের পদক্ষেপকে সমর্থন করেছিল। নিহত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ২ ছাত্রীর উপর অ্যাসিড ছোঁড়ার অভিযোগ ছিল। যার মধ্যে একজন অভিযুক্তদের মধ্যে একজনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। পুলিস যদিও বলেছিল যে এই এনকাউন্টার আত্মরক্ষার জন্য, কিন্তু অনেকেই বিশ্বাস করেছিল যে এই পদক্ষেপটি সেই সময়ের জনসাধারণের উত্তেজিত আবেগ ও ক্রোধকে প্রশমিত করার জন্য ছিল। ভিসি সজ্জন তখনও ওয়ারাঙ্গালের পুলিস সুপার ছিলেন। ১১ বছর পর হায়দরাবাদে, তাঁর অধীনেই আরও একটি এনকাউন্টার ঘটবে।
হায়দরাবাদে এক যুবতী পশুচিকিৎসককে অপহরণ করে গণধর্ষণ করা হয়। গণধর্ষণের পর খুন করা হয় ওই যুবতী পশুচিকিৎসককে। এমনকি প্রমাণ লোপাটের জন্য তাঁর দেহ পুড়িয়েও দেওয়া হয়। এই ঘটনায় শিউরে ওঠে সারা দেশ। এনএইচ-৪৪-এর কাছে ওই যুবতীর মৃতদেহ উদ্ধারের ৮ দিন পর, ওই একই হাইওয়ের কাছে গণধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত ৪ জনকে হত্যা করা হয়। সাইবেরাবাদ পুলিস জানায় যে, স্পট-ভেরিফিকেশনের সময় ওই ৪ জন পুলিসের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। তাই পুলিস বাধ্য হয় এনকাউন্টারে। এই এনকাউন্টারের নেতৃত্বেও ছিলেন সাইবেরাবাদের পুলিস কমিশনার ভিসি সজ্জন। এই এনকাউন্টার নিয়েও বিতর্ক হয়। যদিও এনকাউন্টারের পক্ষেই ছিল জনগণের আবেগ। এমনকি কোথাও কোথাও পুলিসের উপর ফুলের পাপড়িও বর্ষণ করে সাধারণ মানুষ।
৮ পুলিস সদস্যকে হত্যার প্রধান অভিযুক্ত উত্তরপ্রদেশের গ্যাংস্টার বিকাশ দুবে ঠিক ৮ দিনের মাথায় এনকাউন্টারে নিহত হয়। পুলিস দাবি করে যে, মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী থেকে বিকাশ দুবেকে কানপুরে আনছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। সেইসময় কানপুরের ভৌতির কাছে উলটে যায় কনভয়ের একটি গাড়ি। সেই গাড়িতেই ছিল বিকাশ। দুর্ঘটনায় আহত হয় সে। আহত হন কয়েকজন পুলিসকর্মীও। আহত পুলিসকর্মীর পিস্তল নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন বিকাশ। তাঁর পিছু নেয় পুলিস। বিকাশকে আত্মসমর্পণ করতে বলে পুলিস। কিন্তু তা না করে পুলিসকে লক্ষ্য করে গুলি চালান বিকাশ দুবে। আত্মরক্ষায় পালটা গুলি চালায় পুলিস। গুলিবিদ্ধ হয় বিকাশ। যদিও উত্তরপ্রদেশ পুলিসের দাবি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ দুবের রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল।